Header Ads

মহিলাদের ওপর অপরাধে শীর্ষে মহারাষ্ট্র, দ্বিতীয় স্থানে বাংলা, বলছে এনসিআরবি রিপোর্ট

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় : পশ্চিমবঙ্গে যে মহিলারা নিরাপদ নয় সেটা প্রকাশ্যে এলো ন্যাশনাল ক্রাইমস রেকর্ড ব্যুরোর রিপোর্ট। মহিলাদের ওপর অপরাধের নিরিখে শীর্ষে রয়েছে বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্র। তৃতীয় স্থানে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ। চতুর্থ রাজস্থান এবং পঞ্চম অসম।
এনসিবিআর রিপোর্টে পরিসংখ্যান বলছে পশ্চিমবঙ্গে নিরাপদ নয় মেয়েরা। নারী নির্যাতনের ঘটনা ক্রমশ বেড়ে চলেছে রাজ্যে। পুলিসের খাতায় প্রায় ৩০,৯৯২ অভিযোগ জমা পড়েছে। কয়েকদিন আগেই রাতের শহরে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। একাধিত মডেল আক্রান্ত হয়েছিলেন রাতের শহরে। পার্কস্ট্রিট ধর্ষণ কাণ্ডের মতো বড় ঘটনাও ঘটেছে। কামদুনি ধর্ষণ কাণ্ড নিয়েও কম তোলপাড় হয়নি রাজ্য রাজনীতি। তারপরেও কমেনি মহিলাদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা। যদিও এই হিসেবে সব রাজ্যকে ছাপিয়ে গিয়েছে বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্র। এখানে মহিলাদের উপর অপরাধের সংখ্যা ৩১,৯৭৯। তৃতীয় স্থানে রয়েছে মধ্য প্রদেশ (২৯,৭৭৮), চতুর্থস্থানে রয়েছে রাজস্থান (২৫,৯৯৩), পঞ্চম স্থানে রয়েছে অসম (২৩,০৮২)। সেদিক থেকে বিচার করলে নির্ভয়া কাণ্ডের পর রাজধানী দিল্লিতে মেয়েদের উপর অপরাধ অনেকটাই কমেছে। ২০১৬ সালে যেখানে মেয়েদের উপর অপরাধের ১৫.৩১০টি অভিযোগ পুলিসের খাতায় জমা পড়েছিল। সেটা ২০১৭ সালে উল্লেখযোগ্যভাবে কমে ১৩,০৭৬ হয়েছে।
এক বছর দেরিতে রিপোর্ট প্রকাশ করা হলেও গোটা দেশে গণপিটুনিতে মৃত্যুর পরিসংখ্যানটি সুপরিকল্পিতভাবে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। একাধিক বিষয়ে পরিসংখ্যানের উল্লেখ থাকলেও কোথাও গণপিটুনিতে হত্যার পরিসংখ্যান দেওয়া হয়নি। সব অপরাধের সার্বিক হিসেবে উল্লেখযোগ্যভাবে মোদী শাসিত ভারতে মহিলাদের ওপর অপরাধের ঘটনা বেড়েছে।
অপরাধ প্রবণতায় শীর্ষে রয়েছে বিজেপি শাসিত অসম। প্রতি একলাখ বাসিন্দার নিরিখে অপরাধ করছে ১৪৩জন। তার পরেই রয়েছে ওড়িশা এবং তেলঙ্গানা। সেখানে প্রতি এক লাখ বাসিন্দার মধ্যে ৯৪ জন অপরাধ করেন। এরপর হরিয়ানা (৮৮), রাজস্থান (৭৩)।
অন্যদিকে দেশে খুন আর হত্যার প্রবণতা কমছে। এমনই দাবি করছে সম্প্রতি প্রকাশিত ন্যাশনাল ক্রাইমস রেকর্ড ব্যুবো বা এনসিআরবি। পরিসংখ্যান বলছে ২০১৬-র নিরিখে ২০১৭-য় দেশে খুনের ঘটনা কমেছে। ৫.৯ শতাংশ কমেছে খুনের ঘটনা। তবে এই হিসেবেও শীর্ষে রয়েছে নীতীশের বিহার। তারপরেই যোগীর উত্তর প্রদেশ। আর বেশিরভাগ খুনের নেপথ্যেই রয়েছে প্রতিহিংসা এবং পারিবারিক বিবাদ।
এনসিআরবি-র রিপোর্ট বলছে ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে খুনের ঘটনা কমেছে গোটা দেশে। ২০১৭ সালে ২৮,৬৫৩টি খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে পুলিসের খাতায়। ২০১৬ সালে তার পরিমান ছিল ৩০,৪৫০। এই খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পেরেছে অধিকাংশ ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে বিবাদ, ব্যক্তিগত শত্রুতা। বিবাদের জেরে খুন হয়েছে ৭৮৯৮টি। তার পরেই রয়েছে ব্যক্তিগত শত্রুতায় খুন (৪৬৬০), স্বার্থলাভে খুন হয়েছে ২১০৩ জন।
খুনের হিসেব বলছে সংখ্যা বিচারে শীর্ষে রয়েছে যোগীর উত্তর প্রদেশ। ২০১৬ সালে এই রাজ্যে খুন হয়েছিল ৪৮৮৯ জন। ২০১৭-তে সেটা কমে হয়েছে ৪৩২৪ জন। তারপরেই রয়েছে নীতীশ কুমারের বিহার। ২০১৬ সালে বিহারে খুন হয়েছে ২৮০৩ জন। ২০১৭ সালে সেটা কমে হয়েছে ২৫৮১ জন। তারপরেই রয়েছে বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্র। ২০১৬ সালে খুনের সংখ্যা ২২৯৯ জন। সেটা ২০১৭-তে কমে হয়েছে ২১০৩ জন। উত্তর প্রদেশ, বিহার, মহারাষ্ট্রের পরেই রয়েছে দক্ষিণের রাজ্য তামিলনাড়ু। এখানেও অধিকাংশ খুনের ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে বিবাদ।
কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে খুনের হিসেবে শীর্ষে রয়েছে দিল্লি। ২০১৬ সালে ৫২৮ জন খুন হয়েছিল দিল্লিতে। ২০১৭ সালে সেটা কমে হয়েছে ৪৮৭ জন। এর পরেই রয়েছে চণ্ডীগড়। তারপরে পদুচেরী। এই সব খুনের অধিকাংশ কারন বিবাদ। জলের জন্য বিবাদেও খুন হয়েছে এমন ঘটনা রয়েছে।
পণের জন্য খুনের ঘটনার শীর্ষে রয়েছে ওড়িশা (২৯১)। তারপরেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ(২৭৪)। ২০১৭ সালে মোট ১১২৩টি পণের জন্য খুনের ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে মাত্র ৪টি খুন হয়েছে দিল্লিতে। মেট্রো সিটিগুলিতে খুনের ঘটনা হিসেব করলে দেখা গিয়েছে দিল্লি রয়েছে শীর্ষে (৪০০)। তারপরেই রয়েছে বেঙ্গালুরু(২৩৫)। আর অপরাধ প্রবণতায় শীর্ষে রয়েছে বিহারের পাটনা (৮.৯)।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.