এনআরসি তালিকা থেকে বাদ পড়াদের মানবিক দৃষ্টিতে বিবেচনা করার আহবান বিধান সভার অধ্যক্ষ হিতেন্দ্ৰনাথ গোস্বামীর
অমল গুপ্ত, গুয়াহাটিঃ
অসম বিধান সভার অধ্যক্ষ হিতেন্দ্র নাথ গোস্বামী আজ এনআরসি তালিকা সম্পর্কে বলেন, ৩৫ বছর পর একটা কিছু পাওয়া গেল, এবার নতুন করে শুরু করতে হবে। বহু ভূমিপুত্র, খিলঞ্জিয়া মানুষের নাম বাদ দেওয়া সম্পর্কে বলেন, কোনও দেশ এই মানুষগুলোকে গ্রহণ করবে না। তাই কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার যৌথভাবে কিছু একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে, নাম বাদ পড়া মানুষগুলোকে তো আর বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়া যায় না, মানবিক দৃষ্টিতে সব কিছু বিবেচনা করতে হবে বলে অধ্যক্ষ মন্তব্য করেন। আসু তাদের আগের স্থিতি থেকে সরে এসেছে বলে জানা গেল, আসু এখন বলছে এনআরসি ঠিক কাজ করেছে। তবে তাদের সরকারি বক্তব্য জানা যায় নি।
ছবি, সৌঃ আন্তৰ্জাল
পূর্ব পাকিস্তান থেকে এই রাজ্যে পুনর্বাসন দেওয়া হাজার হাজার বাঙালি শরণার্থীদের নাম এনআরসি তালিকাতে নেই। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর উদ্যোগে অসমে ষাট-এর দশকে বাঙালি শরণার্থীদের জমি, শরণার্থী সার্টিফিকেট প্রভৃতি দিয়েছিল। সেই সব বহু পুরনো নথিপত্র এনআরসি কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেনি এই রকম ভুরি ভুরি অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। তেজপুরের বরগুড়ি অঞ্চলে ৮০০ মানুষকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ১৯৬৪ সাল থেকে মানুষগুলো সেখানে আছে। সরকার ১ বিঘা করে জমিও দিয়েছিল বলে মানুষগুলো সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
এক বৃদ্ধ হতাশ হয়ে অভিযোগ করে বলেছেন আমাদের গুলি করে মেরে দিক। আজ বরাকের হাইলাকিন্দিতে সাবিত্ৰী রায় নামের এক মহিলা গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করার খবর পাওয়া গেছে। এনআরসি-র ফাইনাল লিস্ট প্ৰকাশের পর হোজাইয়ের উদালি কাছাড়ি গ্ৰাম পঞ্চায়েতের গরীব কৃষক রহিমউদ্দিন কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তালিকায় নাম নেই জেনে বঙাইগাঁও জেলায় নাসোনগুড়ি গ্ৰামে ৭০ বছরের বৃদ্ধা পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এনআরসি-তে নাম ওঠাতে মোট ৯ বার শুনানিতে হাজিরা দেওয়ার পরও তালিকায় তাঁর নাম আসেনি। কলিয়াবর ৩ নম্বর বরঘুলিয়া গ্ৰামে ৩৬ বছরের রহিমা বেগম গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এনআরসি-র আগুনে আরও যে কত জনের আত্মবলি হবে তার কোনও উত্তর কারোর কাছে নেই। সরকারের তরফে বার বার আশ্বাস দেওয়ার পরও কিছুতেই বুঝতে পারছেন না সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। তারা সরকারের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না।









কোন মন্তব্য নেই