লতা মঙ্গেশকর : শুভ জন্মদিন
বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় : লতা মঙ্গেশকর (জন্ম ২৮শে সেপ্টেম্বর, ১৯২৯) ভারতের এক স্বনামধন্য গায়িকা। ৯০ তে পা দিলেন কিংবদন্তী সঙ্গীত শিল্পী লতা মঙ্গেশকর। দীর্ঘ সাত দশক ধরে তাঁর কন্ঠের জাদু মন্ত্রমুগ্ধতা ছড়িয়ে রেখেছে সমগ্র সঙ্গীত জগতে। ৯০ বছরে পা দিয়েও সুরের ছন্দে মুখর লতা মঙ্গেশকরের সৃজনশীল কন্ঠ। গানের জগতে অনেকদিন আগেই নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছেন লতা মঙ্গেশকর.তাঁর দীর্ঘ ধারাবাহিকতা,শিল্পের প্রতি নিষ্ঠার কারণে লতা মঙ্গেশকর শুধুমাত্র উঠতি শিল্পীদের কাছেই নয়, প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের কাছেও অনুপ্রেরণা। তিনি এক হাজারের বেশি ভারতীয় ছবিতে গান করেছেন। এছাড়া ভারতের ২০টি অঞ্চলিক ভাষাতেও গান গাওয়ার একমাত্র রেকর্ডটি তারই। বাংলাতেও তিনি অনেক গান করেছেন।
মাত্র ১৩ বছর বয়সে ১৯৪৩ সালে লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গীত জীবনের জয়যাত্রা শুরু হয়.মারাঠি সিনেমা গজাভাউ-তে প্রথম গান করেন তিনি।.ভারতের নাইটিঙ্গল লতা মঙ্গেশকর এতদিনে ৩৬ টি ভাষায় প্রায় এক হাজারেরও বেশি সিনেমায় গান করেছেন.ধ্রুপদি থেকে রোমান্টিক,গজল,ভজন--গানের প্রতিটি ধারায় তাঁর স্বচ্ছন্দ বিচরণ-সুরেলা আবেশ আচ্ছন্ন করে রেখেছে আপামর সঙ্গীত পিপাসুদের। সুদীর্ঘ সঙ্গীত জীবনে আ জারে পরদেশি,কাঁহি দ্বীপ জলে কাঁহি দিল,বিতী না বিতাই রেয়না,তেরে বিনা জিন্দেগি সে,তেরে বিনা জিয়া যায়ে না,ন্যায়নো মে বদরা, চলতে চলতে এবং ইয়ারা সিলি সিলি প্রভৃতি অসংখ্য গানের মধ্যে ঢেলে দিয়েছেন সুরের ঝর্ণা ধারা। ১৯৭৪ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত বিশ্বে সর্বাধিক গান রেকর্ড করার জন্য গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম ওঠে তাঁর।৯০ বছরেও অক্লান্ত সঙ্গীত সম্রাজ্ঞী। সতরঙ্গী প্যারাশ্যুট ছবির জন্য তিনি গেয়েছেন তেরে হাসনে সে। ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান ভারত রত্ন পাওয়া তিনিই দ্বিতীয় সঙ্গীতশিল্পী। কৃষ্ণপ্রেমে সমর্পিত লতাজী বিশ্বাস করেন, ভালোবাসা পাওয়াটাই জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। মা একদিন বলেছিলেন, দুঃখ যত বাড়ে, ততোই উজ্জ্বলতর হয়ে ওঠে শিল্প। শৈশবে বাড়িতে থাকাকালীন কে এল সায়গল ছাড়া আর কিছু গাইবার অনুমতি ছিল না তার। বাবা চাইতেন ও শুধু ধ্রম্নপদী গান নিয়েই থাকুক।
জীবনে প্রথম রেডিও কেনার সামর্থ্য যখন হলো, তখন তার বয়স আঠারো। কিন্তু রেডিওটা কেনার পর নব ঘুরাতেই প্রথম যে খবরটি তাকে শুনতে হয় তা হচ্ছে, কে এল সায়গল আর বেঁচে নেই। সঙ্গে সঙ্গেই রেডিওটা ফেরত দিয়ে দেন তিনি।প্রখ্যাত এই সঙ্গীতশিল্পীকে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘অফিসার দে লা দি’অনার’ প্রদান করেছে সে দেশের সরকার।
কোন মন্তব্য নেই