Header Ads

ক্রমশই বিপদ বাড়ছে ভারতের, আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলনে উঠে এল ভয়ঙ্কর সব তথ্য

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় : শিয়রে সঙ্কট। বাঁচার কোনও রাস্তাই আর সম্ভবত খোলা থাকবে না। জল-স্থল-বায়ু সর্বত্র দূষণ দানবের কোপে ত্রাহি অবস্থা হতে চলেছে ভারতের। এমনই আশঙ্কার কথা শোনাল জলবায়ু সম্মেলন। দীর্ঘ আলোচনার পর পরিবেশ নিয়ে যে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে তা ঘুম ওড়ানোর পক্ষে যথেষ্ট। গলছে হিমালয়, হিন্দুকুশ পর্বতের বরফ, বঙ্গোপসাগর, আরব সাগরের জলস্তর বাড়ছে। গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্রের নদীর জল বাড়ছে। ব-দ্বীপগুলি ডুবে যেতে বসেছে। আন্দামান, লাক্ষাদ্বীপ, কচ্ছ উপকূলের কোরালের অবস্থা ভীষণভাবে খারাপ। ভূগর্ভস্থ জলস্তর নামতে নামতে তলানিতে এসে ঠেকেছে। কোনও ভাল কথা শোনায়নি রিপোর্ট।
বিশ্ব উষ্ণায়নের জের হিমালয় এবং হিন্দুকুশ পর্বতের বরফ অতিরিক্ত মাত্রায় গলতে শুরু করেছে। লাহুল-স্পিতি হিমবাহ গলতে শুরু করেছে। এবং সেটা যথেষ্ট উদ্বেগজনক মাত্রায় পৌঁছে গিয়েছে। হিন্দু-কুশ পর্বতের হিমবাহ প্রায় দুই তৃতীয়াংশ গলে গিয়েছে। এখনই সাবধান না হলে হয়তো আর কয়েক বছর পর হিমবাহের আর কোনও অস্তিত্বই থাকবে না। আর হিমবাহ না থাকলে দেশের বড় নদীগুলির অস্তিত্ব সংকট তৈরি হবে।
আরেকটি উদ্বেগজনক রিপোর্ট সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি। ভারতের অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ শহর সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় রয়েছে। কলকাতা, মুম্বই, চেন্নাই, কোচি, সুরাট, বিশাখাপত্তনমের অবস্থা সবচেেয় উদ্বেগজনক। এই শহরগুলি একেবারে সমুদ্রের উপকূলে রয়েছে। মুম্বইয়ের অবস্থা যে সংকট জনক তা এবারের বর্ষাতেই বোঝা গিয়েছে। সমুদ্রের জলস্তর ৫০ সেন্টিমিটার বাড়লেই ২৮০ মিলিয়ন বাসিন্দা বানভাসী হবেন। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে এই শহরগুলিতে জন বসতি ভয়ঙ্কর রকম ভাবে বেড়েছে। সেটা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। এর ফলে ক্ষতিকারক প্রভাব আরও বেশি পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জলসংকট যে গোটা দেশে উদ্বেগজনক জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে, সেটা এবার ভালো করেই টের পেয়েছেন দক্ষিণ ভারতের বাসিন্দারা। বিশেষ করে তামিলনাড়ু, কর্নাটকের বাসিন্দারা। তামিলনাড়ুতে ট্রেনে করে জল পাঠাতে হয়েছে। গোটা দেশেই ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমতে শুরু করেছে। বিশেষ করে মেট্রো শহরগুলিতে এই পরিস্থিতি বেশি তৈরি হয়েছে। তার অন্যতম করণ মাত্রাতিরিক্ত জনবসতি এবং সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি। সেই কারণে পানীয় জলের সংকট দেখা দিচ্ছে ভারতে। সমুদ্রের জলস্তর বাড়ার কারণে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, মহানদীর বদ্বীপ ক্রমশ ডুবে যেতে বসেছে। নদীর মিষ্টি জলের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে সমুদ্রের নোনতা জল। সেকারণেই পানীয় জলের সংকট আরও তীব্র হবে আগামী কয়েক বছরে।
 আরেকটি উদ্বেগের কথা শুনিয়েছে জলবায়ু সামিটের রিপোর্ট-- ভারতের প্রবাল প্রাচীর ধ্বংসের মুখে। আন্দামান, লাক্ষাদ্বীপ, কচ্ছ উপকূলে যে কোরাল রয়েছে সমুদ্রের জলের তাপ বৃদ্ধির কারণে সেগুলি বিপন্ন হতে বসেছে। গোটা বিশ্বেই এই সংকট তৈরি হয়েছে। সমুদ্রের তাপ বৃদ্ধির কারণে সামদ্রিক মাছও মরছে বেশি। ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতের প্রবাল প্রাচীর প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে জানানো হয়েছে রিপোর্টে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.