নারদ-কাণ্ডে মির্জাকে নিয়ে মুকুলের বাড়িতে হানা সিবিআইয়ের, প্রশ্ন সেই ১ কোটি ৭০ লক্ষ
বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় : নারদ-কাণ্ডে আইপিএস অফিসার এসএমএইচ মির্জাকে নিয়ে মুকুল রায়ের বাড়িতে হানা দিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। রবিবার ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে সিবিআই মির্জাকে নিয়ে আসেন। মির্জা যেদিন দেখা করতে এসেছিলেন মুকুল রায়ের কাছে দেখা করতে, সেদিন তিনি কীভাবে এসেছিলেন, কী করেছিলেন, সবই পুনর্নিমাণ করা হয়।
মুকুল রায়ের বাড়িতে মির্জার প্রবেশ থেকে শুরু করে যাবতীয় ঘটনার ভিডিওগ্রাফি করা হয়। অভিযোগ, মির্জা মুকুল রায়কে বিপুল অঙ্কের টাকা দিয়েছিলেন। সেই ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা কি মুকুল রায়ের এই এলগিন রোডের বাড়িতেই দেওয়া হয়েছিল কি না, তা দেখতে চাইছে সিবিআই। মুকুল রায়ের সামনেই ভিডিওগ্রাফি করে সিবিআই।
শনিবারই মির্জার মখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হয়েছে মুকুল রায়কে। মহালয়ার দিন মুকুল রায়কে টানা আড়াই ঘণ্টা জেরা করে সিবিআই। প্রথমে তাঁকে পৃথকভাবে জেরা করা হয়, সূত্রের খবর এরপর মুকুল রায়কে মির্জার সঙ্গে বসিয়ে জেরা করা হয়। উভয়কে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করে জানতে চায়, ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা কে কাকে দেওয়ার কথা বলেছিল, কেনই বা বলেছিল। সেই প্রশ্নের কী উত্তর পেয়েছে সিবিআই, আদৌ উত্তর পেয়েছে কি না, তা জানা যায়নি। তবে উভয়কে একসঙ্গে বসিয়ে জেরা করে অনেক উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেন সিবিআই আধিকারিকরা।
নারদকাণ্ডে মুকুল রায়কে শুক্রবার হাজিরার নোটিশ পাঠিয়ছিল সিবিআই। তিনি হাজিরা এড়িয়ে যান। শনিবার তাঁকে ফের তলব করে সিবিআই। সেইমতো শনিবার দুপুর আড়াইটা নাগাদ তিনি নিজাম প্যালেসে এসে হাজির হন। মুখোমুখি হন সিবিআইয়ের। মুকুল ঘনিষ্ঠ আইপিএস অফিসার মির্জার সঙ্গে বসিয়ে তাঁকে জেরা করা হয়।
উল্লেখ্য, নারদকাণ্ডের সময়ে মুকুল রায় ছিলেন তৃণমূল নেতা। এখন তিনি বিজেপিতে। এহেন নেতাকে তলব করেছে সিবিআই। নারদের স্টিং অপারেশনের যে ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে নারদকর্তাকে মির্জার কাছে পাঠাচ্ছেন মুকুল রায়। আর সেই মির্জাকেই ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করে সিবিআই। এখন উভয়কেই জেরা করে সিবিআই অনেক মিসিং লিঙ্ক খোঁজার চেষ্টা করছে।
তার মধ্যে সিবিআই ভিডিও ফুটেজে শুনেছে- কেউ ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা বলছেন, কিন্ত কে কাকে দেবে, তা স্পষ্ট নয়। সেই উত্তরই জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন সিবিআই আধিকারিকরা। আর এবার ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে তার চেষ্টা চালাচ্ছে সিবিআই।
এদিকে নারদ-কাণ্ডে সিবিআই আধিকারিকদের মুখোমুখি হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র রচনা করার অভিযোগ আনলেন মুকুল রায়। তিনি বলেন, এসবই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ষড়যন্ত্র। যাঁরাই দুর্নীতিতে গ্রেফতার হচ্ছেন উনি বলে দিচ্ছেন মুকুল রায়ের নাম নিতে। উনি নিজে সিবিআইকে অহযোগিতা করেন, তা বলে আমি করব না।
মুকুল বলেন, যতবার সিবিআই আমাকে ডাকবে ততবার আসব। আমি সবরকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। উল্লেখ্য, নারদকাণ্ডে মুকুল রায়কে শুক্রবার হাজিরার নোটিশ পাঠিয়ছিল সিবিআই। তিনি হাজিরা এড়িয়ে যান। শনিবার তাঁকে ফের তলব করে সিবিআই। সেইমতোই তাঁর হাজিরার পর আইপিএস অফিসার মির্জার সঙ্গে বসিয়ে মুকুলকে জেরা করে সিবিআই।
মুকুলের এই অভিযোগ প্রসঙ্গে অবশ্য রাজনৈতিক মহল প্রশ্ন তুলেছে, সিবিআই তো প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অধীন। তাহলে সিবিআই মুকুল রায়কে তলব করায় মমতার ষড়যন্ত্র দেখছেন কেন মুকুল? মুকুল অভিযোগ করেছেন, যেই গ্রেফতার হচ্ছে তাঁকে মুকুল রায়ের নাম নিতে বলছেন মুখ্যমন্ত্রী। একজন অভিযুক্ত গ্রেফতার হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা শুনবেই বা কেন?









কোন মন্তব্য নেই