ত্ৰিপুরার প্ৰত্যন্ত গ্ৰামে ৮ দিনের নাট্য কৰ্মশালা উৎসাহিত করল নব প্ৰজন্মকে
নয়া ঠাহর ওয়েব ডেস্কঃ ত্রিপুরা রাজ্যের উদয়পুর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে একটি প্রত্যন্ত গ্রাম নাম 'কাকড়াবন'। ত্ৰিপুরার প্ৰখ্যাত নাট্যগোষ্ঠী 'অভিমুখ' এর আয়োজনে ও ব্যবস্থাপনায় সেই গ্রামেই ৩ - ১০ই আগস্ট অনুষ্ঠিত হয়ে যায় প্রযোজনা ভিত্তিক নাট্য কর্মশালা। এই কর্মশালা থেকে প্রস্তুত হয় দুটো নতুন নাটক ‘নকশী কাঁথার আখ্যান’ ও ‘নোটবুক’। দুটো নাটকেরই বিন্যাস ও নির্দেশনার কাজ করেন সুদূর কোচবিহার থেকে আসা আমন্ত্রিত নাট্যকর্মী প্রশান্ত এস.ধর। আট দিনের এই নাটকের কর্মশালায় প্রশিক্ষকের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। কর্মশালার শেষ সন্ধ্যায় স্থানীয় কাকড়াবন কমিউনিটি হলে পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহে মঞ্চস্থ হয় নাটক ‘নকশী কাঁথার আখ্যান’। এই নাটকটির আবহ তৈরি করেছেন সঙ্গীত শিল্পী সুকান্ত ঘোষ ও সংকর্ষন ঘোষ।
এই কর্মশালা থেকে নির্মিত দ্বিতীয় নাটক ‘নোটবুক’ মঞ্চস্থ হয় উদয়পুর রাজবাড়ী প্রাঙ্গণে ১১ আগস্টের বিকেলে। এটি একটি একক নাটক এ নাটকে অভিনয় করতে দেখা যায় অভিমুখের অন্যতম সদস্য ও ত্রিপুরা রাজ্যের তরুণ অভিনেতা অভিজিৎ দাসকে । নব প্রজন্মের একঝাঁক তরুণতরুণী মিলে ‘অভিমুখ’ প নাট্যগোষ্ঠী পরিচালিত করছে। নাটকের এই দলটি বিগত চার বছর ধরে বাংলা নাটকের প্রচার ও প্রসারে কাজ করে চলেছে প্রতিনিয়ত। বছরের বিভিন্ন সময়ে অভিমুখের নাটক, নাট্য উৎসব ও নাট্য কর্মশালা ইতিমধ্যেই ত্রিপুরা সহ ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তের নাট্য প্রেমী মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে।
অন্যদিকে পশ্চিম বাংলার তরুণ নাট্যকর্মী প্রশান্ত সম্প্রতি ইটিভি ভারত সিতারাকে দেওয়া একটি একান্ত সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন যে তিনি অনেক বেশি প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে কাজ করতে পছন্দ করেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে কাজ করে যাওয়াটা একটা চ্যালেঞ্জ। শহরে সুযোগ অনেক বেশি কিন্তু গ্রাম গুলোতে অনেক প্রতিভাবান ছেলে মেয়ে থাকা সত্ত্বেও সুযোগের অভাবে ভালো কাজ উঠে আসে না । প্রশান্ত সেই সব ছেলে মেয়েদের নিয়ে কাজ করতে চান। তিনি আরও জানিয়েছেন ‘অভিমুখ’ প্রযোজিত এই নাটক ‘নকশী কাঁথার আখ্যান’ এ গ্রাম বাংলার ছবি আঁকতে চেয়েছেন তিনি, পল্লীবাসীর সহজ সরল প্রেমকে মঞ্চে তুলে আনবার চেষ্টা করেছেন। এরকম নাটক তার কাছে আসলে উৎসব উদযাপন। গ্রাম বাংলার বিভিন্ন লোক নাটকের শৈলী ব্যবহার করেছেন এই বিশেষ নাটকে।
নাটকটি শুরু হয় মঞ্চের বাইরে উন্মুক্ত ময়দানে সেখানে লোক নাটকের আঙ্গিকে আসর বন্দনা এবং ঘট পূজা দিয়ে শুরু করে ধীরে ধীরে দর্শকের সাথে কলাকুশলীরা প্রেক্ষাগৃহে প্রবেশ করে মঞ্চে উঠে যান এরপর সেখানেই সম্পূর্ণ নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। তিনি নাটকের এই অভিযান ছড়িয়ে দিতে চান ভারতবর্ষের কোনায় কোনায়, এখন সেই প্রস্তুতিই চলছে। ‘নয়া ঠাহর’এর এই প্ৰতিবেদককে একথা জানালেন তরুণ নাট্যকৰ্মী প্ৰশান্ত এস ধর।
কোন মন্তব্য নেই