খালি দাও, দাও, দাও ! লাফিয়ে বাড়বে মাইনে, পার্শ্ব শিক্ষকদের আন্দোলনকে কটাক্ষ মুখ্যমন্ত্রীর
বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় : বেতন বাড়াতে পার্শ্ব শিক্ষকদের আন্দোলনের সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্লাস বাদ দিয়ে আন্দোলন কেন সেই প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। হাওড়ার প্রশাসনিক বৈঠক মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করে বলেন, একজন শিক্ষক যদি বলেন, স্ট্রাইক করব, কালো ব্যাজ পরব, তাহলে বাচ্চারা কী শিখবে।
সমকাজে সম বেতন সহ একাধিক দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে রাজ্যের পার্শ্বশিক্ষকরা। আন্দোলনে সামিল রাজ্যের প্রায় ৪০ হাজার পার্শ্ব শিক্ষক। এর আগে বিধাননগরে আন্দোলনে বাধা পেয়ে শনিবার পার্শ্বশিক্ষকরা কল্যাণী বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে অবস্থান শুরু করেন। সেখানে পুলিশ লাঠি চালিয়ে সেই অবস্থান তুলে দে। অবস্থান তুলতে গিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছিলেন পার্শ্বশিক্ষকরা। অন্যদিকে পার্শ্বশিক্ষকদের আন্দোলনে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন অভিনেত্রী অপর্ণা সেন।
পার্শ্বশিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, একজন শিক্ষক যদি বলেন, স্ট্রাইক করব, কালো ব্যাজ পরব, তাহলে বাচ্চারা কী শিখবে। মাইনে কি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বে, প্রশ্ন করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানান, ২০১৮-তে পার্শ্বশিক্ষকদের মাইনে ৪ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকার বেশি করা হয়েছিল।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন পার্থদার একটা এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট নিয়ে মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। একথা বলে একের পর এক শিক্ষক আন্দোলনে সরকার যে নাজেহাল তা স্বীকার করে নেন মুখ্যমন্ত্রী। দিন কয়েক আগেস একটানা আন্দোলনে নিজেদের দাবি আদায় করেছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন প্যারা টিচারদের সম্মান করি বলে তাঁদের মাইনে বাড়ানো হয়েছিল। এদিন কেন্দ্রকে বিঁধে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্র সর্বশিক্ষা অভিযানের টাকা দেয়নি। মুখ্যমন্ত্রী এদিন উল্লেখ করেন প্রাথমিক শিক্ষকদের মাইনে বাড়ানোর কথা। পাশাপাশি তিনি বলেন, কেন্দ্র বিভিন্ন করেন মাধ্যমে রাজ্য থেকে টাকা তুলে নিয়ে যায়। তিনি টাকাটা দেবেন কোথা থেকে প্রশ্ন করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি বলেন, একটা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক করে দিন, সব দিয়ে দেবেন।
এদিকে, রাজ্যের ষষ্ঠ পে কমিশনের রিপোর্ট জমা পড়ার আগে কার্যত নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, যতটা তিনি মনে করবেন, ততটাই করবেন। প্রসঙ্গত আগামী ডিসেম্বরের শেষ হচ্ছে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের মেয়াদ। অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারকে প্রধান হিসেবে রেখে তৈরি হওয়া বেতন কমিশনের মেয়াদ এখনও পর্যন্ত পাঁচবার বৃদ্ধি করা হয়েছে।
লোকসভা ভোটের পর রাজ্যের প্রথম প্রশাসনিক বৈঠকে মধ্যমগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, দিতে তো চাই। কিন্তু টাকা আসবে কোথা থেকে। তিনি বলেন এবছর ৫৬ হাজার কোটি টাকা সুদ হিসেবে দিতে হবে। প্রসঙ্গত এই বৈঠকের দিনই স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল রাজ্য সরকারি কর্মীদের কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাষা দিতে স্পষ্ট করেই নির্দেশ দেয়।
যদিও ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিসেন যাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের সমান মাইনে চান, তাঁরা কেন্দ্রে চলে যান। স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালের নির্দেশের পরে সরকারি কর্মীদের মধ্যে আশা জাগে শীঘ্রই বেতন কমিশন কার্যকর হবে এবং বেতন বৃদ্ধিও আশানুরূপ হবে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর পর পর মন্তব্য নিয়ে সরকারি কর্মীদের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই