এনআরসি তালিকা প্রকাশের আগে অসম নানা সংগঠনের আন্দোলনে উত্তপ্ত হচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য ঘিরে নানা প্রশ্ন, তালিকা প্রকাশ পাবে তো?
নয়া ঠাহর প্ৰতিবেদন, গুয়াহাটিঃ
জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের দিন যত এগিয়ে আসছে, রাজ্যের বিভিন্ন সংগঠন বিশেষ করে শাসক দলের শাখা সংগঠনগুলি এক শুদ্ধ এনআরসি তালিকা প্রকাশের দাবিতে রাজ্যজুড়ে আন্দোলন শুরু করেছে। গতকাল হিন্দু জাগরণ মঞ্চ কোকাড়াঝাড়, নগাঁও, শিবসাগর প্রভৃতি জেলাতে এক শুদ্ধ নাগরিকপঞ্জী প্রকাশের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। তাদের দাবি বহু প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক অসমের ভূমিপুত্র, খিলাঞ্জিয়ার নাম বাদ পড়ে গেছে, এবং লাখ লাখ বাংলাদেশীর নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তাদের নাম বাদ দিতে হবে ।
ছবি, সৌঃ আন্তর্জাল
আজ বিজেপি-এর যুব সংগঠন ভাঙাগড় এনআরসি কার্যালয়ের সামনে প্রায় ৫০০ সদস্য বিক্ষোভ প্রর্দশন করে এক স্মারক পত্র দেয়। প্রত্যেকের হাতে শুদ্ধ তালিকা প্রকাশের দাবির কথা লেখা ছিল। অখিল ভারতীয় বিদ্যাথী পরিষদ স্মারক পত্রে দাবি করেছে লিগাসি ডেটার কারচুপি করে লাখ লাখ বাংলাদেশীর নাম ঢুকে গেছে, তাদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য এনআর সি নতুন করে রিভেরিফিকেশন করতে হবে।
তাদের অভিযোগ বাংলাদেশীর নাম অর্ন্তভুক্ত হবে বলে আমসু চুপচাপ আছে। সুপ্রিমকোর্টের তত্ত্বাবধানে এনআরসি-র কাজ চলছে, কেন্দ্রের বিজেপি ও রাজ্যের বিজেপি সরকারের রিভেরিফিকেশনের দাবি সুপ্রিমকোর্ট মেনে না নেওয়ায় এবং বিষয়টি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্থান করে নেওয়ায় কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার খুব উদ্বিগ্ন, সরকার ১৪৫ কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী তলব করছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পৰ্যালোচনা করা হচ্ছে ঘন ঘন। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনওয়াল আজ অৰ্থাৎ সোমবার আবার দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করার পর তাত্পর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। বলেন, সরকার এনআরসি তালিকা প্রকাশের পর যাতে আইনশৃঙ্খলা অবনতি না হয়, তার জন্যে প্রস্তুত। বলেন, রাজ্যের জনগণ এনআরসি নিয়ে যদি প্রশ্ন তোলে, সেই অধিকার তাদের আছে, সেই ব্যাপারে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের নানা ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। শেষ পৰ্যন্ত এনআরসি তালিকা প্রকাশ পাবে তো? হাজার ভুলের মধ্যে এনআরসি-র নবায়ন চলছে। গুয়াহাটির উপকণ্ঠে কামরূপ গ্রামীণ জেলার চামারিয়া সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে হাজার হাজার ধর্মীয় সংখ্যালঘু মানুষের নামের পাশে অরিজিনাল ইনহাবিটেন্ট বা ওআই লিখে দেওয়ার পর প্রায় ৩০ হাজার মানুষ কে ২৪ ঘন্টার নোটিশে ৪০০, ৫০০ কিলোমিটার দূরে শুনানির জন্যে পাঠানো হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গরিব সংখ্যালঘু মানুষকে নিয়ে এনআরসি কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত তামাসা করছে বলে অভিযোগ উঠছে। আজও হাজার হাজার ভুলের অভিযোগ উঠেছে। অসমের ৩ কোটি, ২৯ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৪ আবেদনকারীর মধ্যে গত জুলাই মাসে প্রথম খসড়া তালিকা থেকে ৪০ লাখ, ৭ হাজার, ৭০৭ জনের নাম বাদ যায়, গত মাসে অতিরিক্ত ১ লাখ, ২ হাজার, ৪৬২ জনের নাম বাদ যায়। মোট ৪১ লাখ, ১০ হাজার, ১৬৯ জনের নাম বাদ গেছে। আগামী ৩১ আগস্ট চূড়ান্ত তালিকা থেকে কত জনের নাম বাদ পড়বে তা নিয়ে রাজ্যে জোর জল্পনা কল্পনা চলছে।
কোন মন্তব্য নেই