৩৭০ ধারা বিলোপ করে মোদী সরকার গণতন্ত্রের উপর হামলা চালাল, প্রতিবাদী সেলিম
বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় : কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদের তীব্র বিরোধিতা করল সিপিএম। সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ সেলিম ফেসবুক লাইভে বলেন, কাশ্মীর থেক ৩৭০ ও ৩৫ এ ধারা লোপ করা গণতন্ত্রের উপর হামলা ও একটি বেআইনি সিদ্ধান্ত। রাজনৈতিক স্বার্থে কেন্দ্রের মোদী সরকার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল।
সেলিম বলেন, ভারতের সঙ্গে থাকার জন্য জম্মু-কাশ্মীরকে এই বিশেষ মর্যাদা প্রদান করা হয়েছিল। ৩৭০ ধারা রদ করে জম্মু-কাশ্মীরের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করল সরকার। যে সরকার সন্ত্রাস মুক্ত করতে পারেনি এতদিনেও, সন্ত্রাসের ভয়ে অমরনাথ যাত্রা শেষ করতে পারে না, তারা কী করে এই সিদ্ধান্ত নেয়।
সেলিম বলেন, সংসদে নতুন বিল আনতে গেলে দু-দিন আগে প্রতিলিপি দিতে হয়। সরকার তা দেয়নি। উল্টে ৩৭০ ধারা বিলোপে সংবিধানকে আঘাত করে কাশ্মীরের পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলল। এর ফলে পাকিস্তানি ও সন্ত্রাসবাদীদের লাভ হবে। সুবিধা পাবে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা।
এই সিদ্ধান্তে কাশ্মীরে গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষের কণ্ঠরোধ করা হল। কেন্দ্রের সরকারে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ৭ আগস্ট সারা দেশব্যাপী কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় প্রতিবাদ দিবস পালন করবে সিপিএম।
তাঁর মতে কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদ করতে গিয়ে শুধু সংবিধানে হাত দিল না মোদী সরকার, একটা রাজ্যকে ভেঙে খান খান করে দিল অবলীলায়। যে পদ্ধতিতে জম্মু-কাশ্মীরকে ভাগ করে দেওয়া হল, এমনটা হতে থাকলে বাংলাও যে কোনও দিন ভাগ হয়ে যাবে। সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম বলেন, কেন্দ্রের সরকার যে কোনও দিন উত্তর-দক্ষিণ বঙ্গকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে।
দার্জিলিংয়ে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন চালিয়েছিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। তারপর তাঁদের সমর্থনে দু-দুবার সংসদে গিয়েছে বিজেপি। বিজেপি প্রকারান্তরে সমর্থন দিয়েছিল বাংলা ভাগকে। যদিও তা চরিতার্থ হয়নি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিততে সিপিএম নেতার মনে হয়েছে, বিজেপি ক্ষমতার দম্ভে যে কোনওদিন যে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
সেলিম বলেন, ভারতের সঙ্গে থাকার জন্য জম্মু-কাশ্মীরকে এই বিশেষ মর্যাদা প্রদান করা হয়েছিল। ৩৭০ ধারা রদ করে জম্মু-কাশ্মীরের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে রাজ্য সরকার। জম্মু-কাশ্মীরকে ভেঙে দু-টুকরো করে দেওয়া হয়েছে কোনও নোটিশ ছাড়াই। আরও এক টুকরো হয়ে যাবে ভারতের এই ভূ-স্বর্গ।
উল্লেখ্য, এদিন কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা ও ৩৫এ ধারা লোপের সঙ্গে সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরকে দুটি অঙ্গরাজ্যে ভাগ করেছে। বিধানসভাযুক্ত কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হয়েছে জম্মু-কাশ্মীর। আর বিধানসভামুক্ত কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হয়েছে লাদাখ। জম্মু আর কাশ্মীরকেও ভেঙে দু-টুকরো করে দেওয়ার সিদ্ধান্তে সিলমোহর লেগে য়েতে পারে যে কোনও সময়ে।
তেমনই গঙ্গার দুপারে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যেও বিভাজন রেখা নেমে আসতে পারে। দুটি পৃথক রাজ্যে রূপান্তরিত হতে পারে বাংলা। সেই আশঙ্কাই এদিন কাশ্মীরের ভাঙন দেখে করেছেন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম।
কোন মন্তব্য নেই