২১ টি জেলার বন্যা পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে, ১০ জনের মৃত্যু, এনকেফেলাইটিস রোগ বেড়ে চলেছে
মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে টেলিফোনে অসমের বন্যা পরিস্থিতির কথা জানালেন
নয়া ঠাহর প্ৰতিবেদন, গুয়াহাটি
অসমের ২১ টি জেলার বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে, প্রায় লক্ষাধিক মানুষ বন্যার কবলে পড়েছে। প্রায় এক লাখ হেক্টর কৃষি জমি প্লাবিত হয়েছে, এ পৰ্যন্ত প্রায় ১০ জন মারা গেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। গুয়াহাটি মহানগরের ফেন্সি বাজার এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের জল ঢুকে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, ব্রহ্মপুত্র নদ গুয়াহাটিতে ৪৯.৯৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। প্রতি ঘন্টায় ১ সেন্টিমিটার করে জলের স্তর বাড়ছে বলে জল সম্পদ বিভাগ জানিয়েছে।
ছবি, সৌঃ আন্তর্জাল
গুয়াহাটি থেকে উত্তর গুয়াহাটি ফেরি পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্যার সঙ্গে এনকেফেলাইটিস রোগও বেড়ে চলেছে। প্রায় ৭০ জন মারা গেছে, ৩০০ জনের বেশি এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে ডাক্তারদের ছুটি বাতিল করে নিজে কয়েকজনকে নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেট খেলা দেখতে লন্ডন গিয়ছেন বলে জানা গেছে। শনিবার মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ-এর সঙ্গে টেলিফোনে এ রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির কথা জানান। মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে জানান ২৪ ঘন্টা কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। তিনি ব্যাক্তিগত ভাবে ডেপুটি কমিশনারদের সঙ্গে যোগযোগ করে ত্রান ও উদ্ধার অভিযান সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছেন।
সব এমপি এবং এমএলএ-দের বন্যা পীড়িতদের কাছে যাবার নির্দেশ দিয়েছেন। অসম প্রদেশ কংগ্রেস অভিযোগ করেছে বন্যায় অধিকাংশ নদী বাঁধ ভেঙ্গে গেছে, টাকার অভাবে বন্যার আগে বাঁধ গুলো মেরামত করতে পারেনি, যা বড় লজ্জার কথা, বন্যার সময় এনকেফেলাইটিস রোগ মহামারী রূপ ধারণ করেছে সরকার নির্বিকার, নির্লিপ্ত। প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অপূর্ব ভট্টচাৰ্য এদিন এই অভিযোগ করেন। বন্যার ফলে ত্রান সাহায্যের অভাবে দুর্গত মানুষগুলোর মধ্যে হাহাকার, বিদ্যালয় ভবন সহ হাজার হাজার ঘর ভেঙে পড়েছে। ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে বরাক উপত্যকা, ত্রিপুরার রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয় পাহাড়ে ধসের ফলে।
গত বন্যায় কাজিরাঙা রাষ্ট্রীয় উদ্যানে প্রায় ৪০০ বন্য জন্তু মারা পড়েছিল, কাজিরাঙা অভয়ারণ্যের মাঝখানে ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়ক পার হতে গিয়ে শতাধিক প্রাণী গাড়ি চাপা পড়ে মারা গিয়েছিল, গতি নিয়ন্ত্রনের ব্যবস্থা হলেও শনিবার একটি হরিণ গাড়ি চাপা পড়ে মারা যায়। কাজিরাঙার ৮০ শতাংশ ব্রহ্মপুত্রের জলে ডুবে গেছে। গণ্ডার হরিণ প্রভৃতি জন্তু প্রাণের ভয়ে পার্শ্ববর্তী কার্বি পাহাড়ে গিয়ে প্রাণ বাঁচায়, সেখানে যেতে হলে ৩৭ নম্বর সড়ক অতিক্রম করতেই হবে। এই ভয়াবহ বন্যার সময় চোরা শিকারিরা কার্বি পাহাড়ে ওৎ পেতে বসে থাকে লাখ লাখ টাকার গণ্ডার হত্যার জন্যে। এবার গণ্ডার হত্যা প্রতিরোধে বন বিভাগ বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করেছে। প্রত্যেকের হাতে হাতে মারণাস্ত্র এসএলআর দেওয়া হয়েছে।









কোন মন্তব্য নেই