Header Ads

অবশেষে মুক্ত আকাশের নিচে ক্যাপ্টেন সানাউল্লাহ


অমল গুপ্ত
আজ শনিবার সেনাবাহিনীর প্রাক্তন  অফিসার সানাউল্লাহকে আজই গোয়ালপাড়া ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে এনে কামরূপ জেলার সীমান্ত  পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকতা সম্পূর্ণ হওয়ার পর   ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁর দুই জন জামিনদারের স্বাক্ষর, তাঁর হাতের আঙুলের ছাপ প্রভৃতি  বায়োমেট্রিক পরীক্ষার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। সেখানে পত্নী সানিমা সহ পরিবারের মানুষ জন উপস্থিত ছিলেন। কামরূপ গ্রামীণ জেলা বোকো, ছয়গাঁও এর সাতগাঁও নিজের গ্রামে যাবার পথে স্থানে স্থানে গাড়ি থামিয়ে বিপুল সংবর্ধনা জানানো হয় তাঁকে। গামছা এবং ফুলের তোড়া সেই সঙ্গে ওয়েলকাম  সানাউল্লাহ, এখনো বহু সানাউল্লাহ বিনা দোষে জেল খাটছে তাদের অবিলম্বে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে স্লোগান দেয় গ্রামবাসী। সেই সঙ্গে যে সীমান্ত পুলিশ চন্দ্র মল দাসের ভুল প্রতিবেদনের ওপর  ৩০ বছর সেনা বিভাগে কাজ করা ক্যাপ্টেন সানাউল্লাহর জেল হল তাকে কেন গ্রেফতার করা হল না  বলে গ্রামবাসীরা বিষ্ময় প্রকাশ করে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। একই প্রশ্ন তোলেন দেশের বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী তথা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইন্দিরা জয় সিং তিনি আজ এক টিভি চ্যানেলের কাছে বেশ কিছু ব্যাখ্যা তুলে ধরেন, সীমান্ত পুলিশ এবং বিদেশি ট্রাইব্যুনালগুলির  ভূমিকায় ও কার্যপ্রণালীতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি আসামবাসীকে এক বার্তা দিয়ে বলেন গৌহাটি হাইকোর্টে বিদেশি সংক্রান্ত রায় দেখে মানুষের মনে আদালতের প্রতি আস্থা বাড়বে, অবিশ্বাসের বাতাবরণ দূর হবে।  শ্রীমতি ইন্দিরা জয় সিং জোরালো প্রশ্ন তুলে বলেন, সীমান্ত পুলিশ চন্দ্র মল দাস যখন তদন্ত প্রতিবেদনে বলেছেন, মহম্মদ সানাউল্লাহ একজন নিরীহ নিরক্ষর শ্রমিক, তখন কেন বিদেশি ট্রাইব্যুনালের বিচারক সানাউল্লাহ একজন সেনা অফিসার জেনেও ভাল করে নথি পত্র পরীক্ষা করল না? সেই নথি পত্রে দেখলাম সেনা অফিসার সানাউল্লাহের বাবার নাম ১৯৬৬ ভোটার তালিকা তে আছে। তারপর ট্রাইব্যুনালের বিচারাকরা সানাউল্লাহকে বিদেশি ঘোষণা করল। তিনি  বলেন, নথি পত্রে যখন দেখতে পারছি সানাউল্লাহ একজন ভারতীয় নাগরিক তারপর ও নথি পত্র পরীক্ষা করা হচ্ছে কেন?  সর্ম্পূণ বিনা পয়সায় সানা উল্লাহর পক্ষে ওকালতি করা দেশের বিশিষ্ট আইনজীবী  ইন্দিরা জয় সিং স্মরণ করিয়ে দেন হাজার অপরাধীর শাস্তি হোক,কিন্তু একজন নিরপরাধীর ও যেন শাস্তি না হয়।  তিনি বলেন রাজ্য সরকার, পুলিশ, ট্রাইব্যুনালের প্রধান দায়িত্ব জনগণকে ন্যায় দেওয়া, বিচার দেওয়া। বিনাদোষে ১০ দিন ডিটেনশন ক্যাম্পে কাটানোর পরও সেনা অফিসার সানাউল্লাহকে   সরকারের বিরুদ্ধে কোনও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেল না। তিনি সংযত ভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে শুধু  বলেন তাঁর মুক্তির জন্য সবাই সহযোগিতা করেছে, সবাইকে তিনি শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন, এমনকি সরকারকেও। এদিকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বলেন এখনও বহু নির্দোষ ব্যক্তি জেলে  আছে। দেশের জন্যে ৩০ বছর যুদ্ধ করার পর সানাউল্লাহকে বিদেশি সাজানো হল, অথচ তাঁর মুক্তির জন্য সরকার কিছুই করল না । তদন্তকারী পুলিশ চন্দ্র মল দাস ভুল রিপোর্ট দিল, তারপরও তাঁকে   গ্রেফতার করা হল না। হাইকোর্ট সানাউল্লাহকে মুক্তি দিল। সরকারের কোনও কৃতিত্ব নেই। আসামে   ট্রাইব্যুনাল, পুলিশ এর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন দেশের বিশিষ্ট আইনজীবী ইন্দিরা জয় সিং।   

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.