Header Ads

অসম তথা উত্তরপূৰ্বাঞ্চলে ৫ মে ঘূৰ্ণীঝড় ফণীর প্ৰভাব পড়ার সম্ভাবনা



নয়া ঠাহর প্ৰতিবেদন, গুয়াহাটিঃ আবহাওয়া দফতরের সতৰ্ক বাৰ্তায় বলা হয়েছে অসম তথা উত্তরপূৰ্বাঞ্চলে ৫ মে ঘূৰ্ণীঝড় ফণীর প্ৰভাব পড়বে। তবে উৎপত্তিস্থল ফণীর গতিবেগ প্ৰতি ঘন্টায় ২০০ কিলোমিটার হলেও অসমে এর গতিবেগ থাকবে ৬০ থেকে ৭০ কিমি। অসমের কোকরাঝাড়, বঙাইগাঁও সহ বিটিএডির বিভিন্ন এলাকায় সতৰ্ক বাৰ্তা জারি করা হয়েছে। বরঝাড় বিমান কৰ্তপক্ষ জানিয়েছেন ঝড়ের ফলে ৯ টি অবতরণ সহ মোট ২৩টি বিমানের উড়ান বাতিল করা হয়েছে। সারা দেশে উত্তরপূৰ্বাঞ্চল সহ মোট ৪৩টি ট্ৰেন বাতিল করা হয়েছে। আবহাওয়া দফরের মতে ৩ মে অসমে ফণীর প্ৰভাব আছড়ে পড়বে। ৪ এবং ৫ মে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলত রাজ্যের কিছু কিছু অঞ্চলে বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফণীর প্ৰভাবে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে পরেছে। আগামী ৪৮ ঘন্টা তৃণমূল নেত্ৰী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্ত জনসভা বাতিল করেছেন। ইতিমধ্যেই ওড়িশার উপকূল রক্ষী বাহিনী ক্ষতিগ্ৰস্ত এলকায় বিতরণের জন্য হেলিকপ্টারে ত্ৰান সামগ্ৰী মজুত করে রেখেছে। এখন পৰ্যন্ত ওড়িশায় ঝড়ের দাপটে ৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ভুবনেশ্বরের এইমসে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জলের ট্যাঙ্ক উড়ে গিয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে। জলমগ্ন হয়েছে বহু গ্ৰাম। উপড়ে গিয়েছে গাছ। ফণীর তাণ্ডবে ভুবনেশ্বরের আইআইটির কাচের দরজা ভেঙে যায়, উল্টে যায় বাস, নাইসের হোস্টেলে ভাঙে জানলা, কেআইটিতে উপড়ে যায় কাঠের দরজা। ভিবনেশ্বরে প্লাটফৰ্মের শেড ভেঙে যায়। কটকে ছাদ উড়ে যায়, উড়ে যায় মোবাইল ফেনের টাওয়ার।  সেসময় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ১৮০ থেকে ১৯০ কিলোমিটার। আবাহাওয়া দফতরের আগের পূৰ্বাভাস ছিল বিকেল ৩টে নাগাদ পুরীর দক্ষিণে ফণী আছড়ে পরবে। তার ৬ ঘন্টা আগেই শুক্ৰবার  সকাল ৯ টায় ঘূণীঝড় পুরীর উপকূল অতিক্ৰম করে ভেতরে ঢোকে। ত্ৰাণের জন্য কেন্দ্ৰ আগাম ১০০০ কেটি টাকা মঞ্জুর করে রেখেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিজেপি সুপ্ৰিমো নরেন্দ্ৰ মোদি উচ্চ পৰ্যায়ের বৈঠকে বসেন। সেখানে ওড়িশা সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘূৰ্ণীঝড়ের মোকাবিলার জন্য সমস্ত বিভাগের আধিকারিকদের অপ্ৰীতিকর পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য প্ৰস্তুত থাকতে নিৰ্দেশ দিয়েছেন। সূত্ৰের খবর, ঘূৰ্ণীঝড়ের জন্য ওড়িশার উপকূল এলাকা থেকে প্ৰায় ১০ লক্ষ মানুষকে সরিয়ে অন্যত্ৰ নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তর করা হয়েছে। নিম্ন অসমের এবং পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবৰ্তী জেলাগুলোতে সব ধরনের সতৰ্কতামূলক ব্যবস্থা গ্ৰহণ করা হয়েছে। এদিকে, উত্তরপূৰ্ব সীমান্তে বিভিন্ন ট্ৰেন পরিষেবা বাতিল করা হয়েছে। সেকেন্দ্রাবাদ -গুয়াহাটি এক্সপ্রেস যা কিনা রবিবারে রওনা হওয়ার কথা ছিল বাতিল করা হয়েছে। ডিব্রুগড়-তাম্বারাম এক্সপ্রেস রবিবারে রওনা হওয়ার কথা ছিল বাতিল করা হয়েছে। তিরুঅনন্তপুরম সেন্ট্রাল শিলচর এক্সপ্রেস যা কিনা মঙ্গলবার রওনা হওয়ার কথা ছিল বাতিল করা হয়েছে। কিছু ট্রেনকে বিকল্প রুটে চালানো হচ্ছে। পুরী ও কামাখ্যার মধ্যে চলাচল করা পুরী কামাখ্যা এক্সপ্রেস শনিবারে রওনা হওয়ার কথা ছিল বাতিল করা হয়েছে। কামাখ্যা এবং সেকেন্দ্রাবাদ এর মধ্যে চলাচল করা কামাখ্যা সেকেন্দ্রাবাদ স্পেশাল ট্রেন সোমবারে রওনা হওয়ার কথা ছিল বাতিল করা হয়েছে। সেকেন্দ্রাবাদ এবং কামাখ্যা মাঝে চলাচল করা সেকেন্দ্রাবাদ কামাখ্যা স্পেশাল ট্রেন শুক্রবার রওনা হওয়ার কথা ছিল বাতিল করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে রেলের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জনসংযোগ অধিকারিক নৃপেন ভট্টাচার্য বলেন- যাত্রী সুরক্ষার দিকে লক্ষ্য রেখে কিছু- কিছু ট্রেনকে বাতিল করা হয়েছে ও কিছু ট্রেনকে বিকল্প পথে চালানো হচ্ছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, শুক্ৰবার বিকেল থেকে পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুরে ৬০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড়বৃষ্টি হতে শুরু হয়েছে। দুই মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কাও করছেন আবহবিদেরা। এগুলো ছাড়াও উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, কলকাতা, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, দুই বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া জেলাতেও প্রভাব পড়বে ফণীর। ঝড়ের প্রভাবে উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলাতে বৃষ্টিপাত হবে। পশ্চিমবঙ্গ হয়ে দক্ষিণবঙ্গ অসম হয়ে ফণী যাবে বাংলাদেশের দিকে। তবে ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে বাংলাদেশের বরিশাল অঞ্চলে থেমে থেমে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে দমকা বাতাসের সঙ্গে শুরু হয় বৃষ্টি। থেমে থেমে চলে বৃষ্টি। ফণীর আতঙ্কে মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ঠাঁই নিয়েছে। অপ্ৰীতিকর পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রায় সাড়ে ২৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকেই বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কৰ্তপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জলপথে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রেখেছে।  

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.