Header Ads

প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ছাড়া বিজেপি ভাল ফল করতে পারবে না

 

কলকাতা থেকে অমল গুপ্ত
সারা দেশ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে তাকিয়ে আছে। দেশের বিরোধী দলগুলোকে জোটবদ্ধ করে এক প্লাটফর্মে এনে দিল্লি দখল করার স্বপ্ন দেখেন মমতা। পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রীদের এক গণতান্ত্রিক পরম্পরা রয়েছে, তাঁদের ভাষা সংস্কৃতির প্ৰতি তাঁরা শ্ৰদ্ধাশিল ছিলেন। তাঁরা যথেষ্ট সংযম রক্ষা করেই নিজেদের বক্তব্য রাখতেন। কিন্তু মমতার মত অ্যাতো অসংসদিয় ভাষা ব্যবহার করতেন না। এপ্রসঙ্গে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের উজ্জ্বল পরম্পরা বলা যেতে পারে। নির্বাচনী প্রচার অভিযানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কে যে ধরনের ভাষা প্রয়োগ করছেন তাতে দেশের বৌদ্ধিক মহল ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। গত সোমবার দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিবার্চন আচরণ বিধি লংঘনের জন্যে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্য নাথ, বিএসপি নেত্রী মায়াবতী, উত্তরপ্ৰদেশের বিজেপি এমপি আজম খান, মানেকা গান্ধীর বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করেছেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন মমতার ক্ষেত্রে নরম মনোভাব পোষণ করছেন বলে বিরোধী কংগ্রেস, সিপিএম অভিযোগ করেছে। এমনকি এই অভিযোগ উঠেছে কোচবিহারে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বাদ দিয়ে বেশ কয়েকটি পোলিং স্টেশনে ভোট হল। তৃণমূল কংগ্রেস অবাধে রিগিং করে গেল বলে অভিযোগ এসেছে। সেক্ষেত্ৰেও সিপিএম, কংগ্ৰেসের অভিযোগ, তৃণমূল বিজেপি সঙ্গে গোপন আঁতাত করেই কেন্দ্ৰীয় বাহিনী মোতায়েন না করার বিষয়টি থাকতে পারে। স্থানীয় ক্ষেত্ৰে এই সমঝোতা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বিজেপি তৃণমূল কংগ্রেসকে সুযোগ করে দিল বলেও অভিযোগ করেছে বিরোধীরা। প্রায় ৩৮ শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত বাংলায় হিন্দুত্বের জিগির তুলে বিজেপি জোরদার প্রচার চালাচ্ছে। রামনবমীর দিন কয়েকটি ধর্মীয় শোভাযাত্রা দেখলাম। মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় উৎসব মহরমের সময় অস্ত্র শস্ত্র হাতে নিয়ে মিছিল দেখেছিলাম। প্রশাসনের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। তৃণমূল কংগ্রেস প্রথম থেকে মুসলিম জনগোষ্ঠীকে তোষণ করে চলছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। বিজেপির হিন্দুত্ত্ববাদী কর্মকাণ্ডের ফলে মুসলিম ভোটাররা জোট বাঁধছে। তৃণমূলের ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেস দল  দুটির মধ্যে প্ৰচারাভিযানকে কেন্দ্ৰ করে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের সৃষ্টি হচ্ছে, যা ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিপজ্জনক। এই পরিস্থিতিত তৃণমূলকে হারানো কঠিন। কলকাতায় কয়েকদিন থেকে , মানুষের সঙ্গে কথা বলে বুঝলাম, সেখানে ভোটার এবং নির্বাচন পরিচালনা করা মানুষদের মধ্যে এক অজানা আতঙ্ক এবং ভয় কাজ করছে। মুখ খুলতেও ভয় করছে। গত পঞ্চায়েত নিৰ্বাচনে ভোটের নামে চূড়ান্ত প্রহসন হয়েছিল। সব বুথেই রিগিং , অবাধ লুট, প্রায় ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। রাজ্যের প্রত্যেকটি পাড়ার ক্লাব, প্রত্যেকটি পূজা কমিটি, প্রত্যেকটি মাদ্রাসা, মসজিদ কমিটির মানুষ সরকার থেকে আর্থিক সাহায্য পাচ্ছে। পাড়ায় পাড়ায় সিন্ডিকেট, সাধারণ শান্তিপ্রিয় মানুষ প্রতি ক্ষেত্রে আপস করে চলছে। রাজ্যের প্রত্যেকটি বুথে যদি  কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা না হয় তবে তৃণমূলকে কেউ হারাতে পারবে না। রাজ্যের  যুবসমাজকে নানাভাবে উপকৃত, সরকারী কর্মচারী, এমনকি পুলিশও তৃণমূল কংগ্রেস      সমর্থক, তাদেরকে বিভিন্নভাবে আৰ্থিক সাহায্য করে তাদেরকে কিছু পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি চলছে। বিজেপির অভিযোগ, কেন্দ্ৰীয় সরকার থেকে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ অনুৎপাদক খাতে ব্যয় করছে। তাতে সাৰ্বিক উন্নয়ন তরান্বিত হচ্ছে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন সময় কলকাতায় বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলন করেছিলেন, কিন্তু সেই তুলনায় বিদেশী বিনিয়োগ কিছুই হয়নি। ন্যানো গাড়ির কোম্পানি টাটাকে তাড়িয়ে দেওয়া পড়ে পশ্চিমবাংলার শিল্প জগতে বিরূপ প্ৰভাব পড়েছে। বাইরের কোনও কোম্পানি আসতে চাইছে না। এই প্ৰতিবেদক পশ্চিমবাংলায় বিভিন্ন জায়গায় সফরের সময় দেখলেন অধিকাংশ কলকারখানা বন্ধ। মজার কথা, পশ্চিমবাংলায় বিদ্যুৎ উদবৃত্ত, বাংলাদেশে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। পশ্চিমবঙ্গে কলকারখানা নেই বলে বিদ্যুতের চাহিদাও কমে যাচ্ছে। শিল্পজগতে উন্নয়নের সূচকই হচ্ছে বিদ্যুৎ। কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম ও একই অভিযোগ করে বলেছে, প্রতি বুথে কেন্দ্রিয় বাহিনী ছাড়া ভোটে ব্যপক রিগিং হবে। খুন খারাপি হবে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের মত প্রহসন হবে। তাই বলা যেতে পারে বাংলায় বিজেপি তৃণমূলকে কাবু করতে পারবে না।
 প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ছাড়া বিজেপি ভাল ফল করতে পারবে না।
 এই প্ৰসঙ্গে কংগ্ৰেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরি মন্তব্য করেছেন- পঞ্চায়েত নিৰ্বাচনের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে যদি না প্ৰতিটি কেন্দ্ৰে কেন্দ্ৰীয় বাহিনী মোতায়েন করা না হয়। যারা ভোট পরিচালনা করবেন অৰ্থাৎ পোলিং অফিসার এবং অন্যান্য কৰ্মীদের নিরাপত্তার দাবি করেছেন তিনি। এদিকে তৃণমূলের দাবি, কংগ্ৰেস এবং সিপিএমের দাবি অমূলক। মমতাদি সৰ্বকালের সৰ্বশ্ৰেষ্ঠ মুখ্যমন্ত্ৰী।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.