Header Ads

রাজ্যের মুসলিম জনগোষ্ঠীর অনগ্ৰসরতার প্ৰধান কারণ শিক্ষাঃ মন্ত্ৰী রঞ্জিত দত্ত

২২৫৫২ অঙ্গনবাড়ী কেন্দ্ৰের কোনও ঘরই নেই, কয়লা কেলঙ্কারী নিয়ে সিবিআই দাবি  বিরোধীদের

অমল গুপ্ত, গুয়াহাটিঃ 
অসমের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংখ্যগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী হচ্ছে ধৰ্মীয় সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী। তাদের মোট জনসংখ্যা হচ্ছে ১,০৬৭,৯,৩৪৫ জন, শতাংশ হিসাবে ৩৪.৩২। খ্ৰীষ্টান ধম্বাবলম্বীদের জনসংখ্যা হচ্ছে ১১,৬৫,৮৬৭ জন, শতাংশ হিসাবে ৩.৭৪। শিখ সম্প্ৰদায়ের জনসংখ্যা হচ্ছে মাত্ৰ ২০,৬৭২ জন, শতাংশ হিসাবে ০.০৭। বৌদ্ধ ধৰ্মাবলম্বী জনসংখ্যা হচ্ছে  ৫৪৯৯৩ জন, শতাংশ হিসাবে ০.১৮ এবং জৈন সম্প্ৰদায়ের জনসংখ্যা হচ্ছে ২৫,৯৪৯জন, শতাংশ হিসাবে ০.০৮। অসমে বৃহৎ মুসলিম জনগোষ্ঠী থাকা সত্বেও বিভিন্ন কারণে এই জনগোষ্ঠীর আৰ্থ সামাজিক, রাজনৈতিক সব দিক থেকেই প্ৰায় অনগ্ৰসর শ্ৰেণীভূক্ত। আজ শুক্ৰবার রাজ্য বিধানসভায় সংখ্যালঘু কল্যাণ বিভাগের মন্ত্ৰী রঞ্জিত দত্ত মুসলিম সম্প্ৰদায়ের অনগ্ৰসরতার প্ৰধান কারণ হিসাবে বলেছেন, শিক্ষা ব্যবস্থার অনুন্নয়নকেই এর জন্য দায়ী করেছেন। রাজ্য বিধানসভায় সরকার এর আগেও জানিয়েছিল রাজ্যে মুসলিম জনগোষ্ঠীর অনগ্ৰসরতার প্ৰধান কারণ শিক্ষার অভাব। আজ বিধানসভায় প্ৰেশ্নাত্তর পৰ্বে এইআইইউডিএফ-র আমিনুল ইসলামের এক প্ৰেশ্নর জবাবে মন্ত্ৰী রঞ্জিত দত্ত এ কথা জানিয়ে বলেন, গত ২০০২-3 অৰ্থ বছরে চর অঞ্চলে আৰ্থ সামাজিক জরিপ করা হয়েছিল। ২০১৮-১৯ অৰ্থ বছরেও পুনরায় ‘অমিয় কুমার দাস ইনষ্টিটিউট অফ সোসাল চেঞ্জ' এই জরিপ চালিয়েছিল। তবে চর অঞ্চলের বাইরে সংখ্যালঘু অধু্যষিত অঞ্চলে এই ধরণের জরিপ চালানো হয় নি। সংখ্যালঘু কল্যাণ মন্ত্ৰী জানান, সংখ্যালঘু লোকদের উন্নয়নের জন্য সরকার সংখ্যালঘু সম্প্ৰদায়ের ছাত্ৰ-ছাত্ৰীদের স্কলারশিপ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। এছাড়াও পরিকাঠামো উন্নতির জন্য রাজ্যের কয়েকটি সংখ্যালঘু অধু্যষিত জেলায় এমএছডিপি কৰ্মসূচী রূপায়ন করেছে। এই কৰ্মসূচী অনুযায়ী ২০০৭-০৮ থেকে ২০১১-১২ একাদশ পরিকল্পনায় ৭০৩.৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল, দ্বাদশ পঞ্চবাৰ্ষিক পরিকল্পনায় (২০১২-১৩ এবং ২০১৬-১৭) ৫২৫.২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। কংগ্ৰেসের নরুল হুদার প্ৰেশ্নর জবাবে দত্ত এই কথা জানিয়ে বলেন, ২০১৭-১৮ অৰ্থ বৰ্ষে পিএমজেভিকে-র অধীনে ১৪৪.৪৫ কোটি টাকা এবং ২০১৮-১৯ অৰ্থ বছরে এই প্ৰকল্পের অধীনে ১১৯.১১ কোটি টকা বরাদ্দ করেছে। ২০১৮-১৯ পৰ্যন্ত কেন্দ্ৰীয় সরকারের রিলিজ করে দেওয়া (সেণ্ট্ৰাল শ্বেয়ার) হচ্ছে ১৮৫৫.৪৯ কোটি টাকা এবং রাজ্য সরকারের রিলিজ করে দেওয়া (ষ্টেট শ্বেয়ার) ২০১৭-১৮ পৰ্যন্ত ৪৬২৮.৪৪৪১৫ কোটি টাকা। কংগ্ৰেসের আব্দুল খালেকের এক প্ৰেশ্নর জবাবে মন্ত্ৰী দত্ত জানান, রাজ্যের প্ৰত্যেকটি মহকুমায় সংখ্যালঘু উন্নয়ন বোৰ্ডের শাখা কাৰ্যালয় স্থাপন করা হবে। কংগ্ৰেসের নুরুল হুদার এক প্ৰেশ্নর জবাবে মন্ত্ৰী দত্ত জানান, সাচার কমিটির প্ৰতিবেদনের আধারে অসমে ধৰ্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের কৰ্মসূচী হাতে নেওয়া হয়েছে। আজ বিধানসভায় অগপর পবিন্দ্ৰ ডেকার এক প্ৰশ্নকে ঘিরে বিধানসভা উত্তপ্ত হয়ে উঠে। বিরোধীরা সরকারকে চেপে ধরে কয়লা কেলেঙ্কারী অভিযোগে সিবিআই তদন্তের দাবি জানান। এই কেলেঙ্কারীর সঙ্গে শাসক দলের যোগসূত্ৰ থাকার অভিযোগ করে বিরোধীরা। খনিজ ও সামগ্ৰী বিভাগের দায়িত্বপ্ৰাপ্ত মন্ত্ৰী নব কুমার দলে জানান, অসমের টিরাপ, টিকক, টিপঙ, লিডু, গরমপানী খাতা আৰ্দা প্ৰভৃতি জায়গায় কয়লার খনি আছে। এই সব খনি থেকে উৎপাদিত কয়লার পরিমাণ ২০১৫-১৬ সালে ৩২.২৭ কোটি টাকা, ২০১৬-১৭ সালে ৩৪.৬২ কোটি টাকা, ২০১৭-১৮ সালে  ৪৫.৪৯ কোটি টাকা এবং ২০১৮-১৯ জানুয়ারি পৰ্যন্ত ৩৫.১৮ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। মন্ত্ৰী নব দলে স্বীকার করেন কয়লা নিয়ে দুর্নীতিচলছে। অগপ সদস্য পবিন্দ্ৰ ডেকা সরাসরি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, কয়লা নিয়ে ব্যাপক চলছে মাফিয়া এবং সিণ্ডিকেট রাজ চলছে, কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারােচ্ছ সরকার। মন্ত্ৰী জানান, এই সব অভিযোগ সরকারের দৃষ্টিগোচর হয়েছে, সঠিক তথ্য তাদের হাতে নেই, তবে এই সব অবৈধ কাৰ্যকলাপ প্ৰতিরোধ করার জন্য সরকার বিভিন্ন ব্যবস্থা হাতে নিয়েছে। তিনসুকিয়া, শিবসাগর, কাৰ্বি আংলং এবং ডিমা হাসাও জেলায় ডেপুটি কমিশনার তথা পুলিশ সুপার এবং গৃহ বিভাগকে এই সব অবৈধ কাৰ্যকলাপের অভিযোগ খতিয়ে দেখে সিআইডি তদন্তের নিৰ্দেশ দিয়েছে সরকার। কিন্তু বিরোধীরা তার জবাবে অসন্তোষ প্ৰকাশ করেন। সিবিআই তদন্তের দাবি জানান, বিরোধীরা। মন্ত্ৰী সেই দাবির মেনে নেওয়া হবে বলে জানান, নিৰ্দিষ্ট কোনও প্ৰতিশ্ৰুতি দেন নি। বিজেপির সুমন হরিপ্ৰিয়ার প্ৰেশ্নর জবাবে খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগের দায়িত্ব প্ৰাপ্ত মন্ত্ৰী রঞ্জিত দত্ত জানান, অসমে খাদ্য সুরক্ষাআইনের অধীনে নিৰ্ধারিত হিতাধীকারির সংখ্যা হল– ২৫২১৮০০১ জন। এই আইনের অধীনে ২১-০১-১৯ তারিখ পৰ্যন্ত মোট ৫৭৮৩০৪৭ (এএওয়াই- ৬৯২৪৪৯ + পিএইচএইচ ৫০৯০৫৯৮) এই সব পরিবারের বিপরীতে ২৪৮৮৫১২৩ (এএওয়াই- ২৮৫৫৭১৩ + পিএইচএইচ ২২০২৯৪১০) লোককে অন্তৰ্ভুক্ত  করা হয়েছে। এখনও ৩৩২৮৭৮ জনকে অন্তভূক্ত করার বাকী আছে। রাজ্যে চাল,ডাল, মাছ, মাংস, শাক-সব্জি প্ৰতিটি ক্ষেত্ৰে রাসায়নিক দ্ৰব্য ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। সেক্ষেত্ৰে কড়া পদক্ষেপের দাবি জনান বিধায়িকা সুমন হরিপ্ৰিয়া। জবাবে মন্ত্ৰী জানান, খাদ্য সুরক্ষা এবং ষ্ট্যাণ্ডাৰ্ড আইন, ২০০৬ অনুযায়ী জেলায় জেলায় খাদ্য সুরক্ষা অফিসাররা প্ৰতিটি জেলার বাজারগুলি পরিদৰ্শন করেন। ২০১৬-১৭ সালে রাজ্যে ৫২৬টি নমুনা সংগ্ৰহ করে ৬৭টির ক্ষেত্ৰে অনিয়ম ধরা পড়েছে ২৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ সাব্যস্ত করা হয়েছে, দোষী সাব্যস্ত হয়েছে মাত্ৰ দুজন। ২০১৭-১৮ অৰ্থ বছরে ৬১০টি নমুনা সংগ্ৰহ করা হয়েছিল ৭৮টির ক্ষেত্ৰে অনিয়ম ধরা পড়ে ৪৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে মাত্ৰ ৬ জন। ২০১৮-১৯ অৰ্থ বছরে ৪৬৩টি নমুনা সংগ্ৰহ করা হয়েছিল ৯৮টির ক্ষেত্ৰে অনিয়ম ধরা পড়ে ৫৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে মাত্ৰ ১৭ জন। আজ বিধানসভায় কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ প্ৰশ্ন উত্থাপন করেন বিশেষ করে শিক্ষকরা অবসরের তিন মাসের মধ্যে পেন্সন পাচ্ছেন কি না। এই সরকারই প্ৰতিশ্ৰুতি দিয়েছিল তিন মাসের মধ্যে পেন্সন দেওয়া হবে। জবাবে পেন্সন, গণ অভিযোগের দায়িত্ব প্ৰাপ্ত রঞ্জিত দত্ত জানান, অসম সরকারের অধীনে কৰ্মরত প্ৰাদেশিকৃত বিদ্যালয় এবং পঞ্চায়েত সমূহের কৰ্মচারীদের পেন্সন নিয়মিত করেন পেন্সন সঞ্চালক, নিৰ্দিষ্ট শিক্ষক কৰ্মচারীরা অবসরের ৬ মাসের আগে যাবতীয় নথিপত্ৰ সঠিকভাবে পূরণ করে সঞ্চালক কাৰ্যালয়ে জমা দেওয়া তিন মাসের ভিতর পেন্সন দেওয়া হয়। তবে নথিপত্ৰে ভুল থাকলে তা সময় মত দেওয়া যায় না। তবে সরকারী কৰ্মচারীরা অবসরের পর পেন্সন চূড়ান্ত না হওয়া পৰ্যন্ত প্ৰভিশনাল পেন্সন দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। আবুল কালাম রশিদ আলমের প্ৰেশ্নর জবাবে সমাজা কল্যাণ বিভাগের মন্ত্ৰী প্ৰমিলা রাণী ব্ৰহ্ম জানান, অসমে ৫৬৭২৮ টা অঙ্গনবাড়ী কেন্দ্ৰ এবং ৫৪২৫টা ক্ষুদ্ৰ অঙ্গনবাড়ী কেন্দ্ৰকে ধরে সৰ্বমোট ৬২,১৫৩টি অঙ্গনবাড়ী কেন্দ্ৰ আছে। ৮০০ জন অঙ্গনবাড়ী কৰ্মী ৭৭৯ জন অঙ্গনবাড়ী সহায়িকা ৩১৫জন ক্ষুদ্ৰ অঙ্গনবাড়ী কেন্দ্ৰের পদ খালি হয়ে আছে। মন্ত্ৰী জানান, ২২৫৫২ অঙ্গনবাড়ী কেন্দ্ৰের কোনও ঘরই নেই, বিপরীতে ১১৭৭৮টি অঙ্গনবাড়ী কেন্দ্ৰ ভাড়া ঘরে চলছে এবং ১০৭৭৪ টি অঙ্গনবাড়ী বিভিন্ন বিদ্যালয় এবং ক্লাবে চলছে। বিজেপির অশ্বিনী রায় সরকারের এক প্ৰেশ্নর জবাবে মন্ত্ৰী জানান, রাজ্যে চারটি নারী নিবাস আছে। সেখানে ১৬৭জন মহিলা থাকেন। ধুবুড়ি জেলার গোলকগঞ্জের হালাকুরায় দীঘলটারী নারী নিবাসে ৯ জন মহিলা আছেন। বিধানসভায় দুৰ্গা ভূমিজ অভিযোগ করেন, প্ৰেট্ৰোল পাম্প, ডিপোগুলিতে সঠিক পরিমাণ তেল দেওয়া হয় না। বিভিন্ন চা বাগানে কাঁচা চা পাতা মাপ জোখের ক্ষেত্ৰেও কারচুপি করা হয়। জবাবে অসামরিক খাদ্য সরবরহা বিভাগের দায়িত্ব প্ৰাপ্ত রঞ্জিত দত্ত জানান, প্ৰেট্ৰোল পাম্প, ডিপোগুলির ক্ষেত্ৰে অইল কোম্পানীগুলির নিজস্বভাবে কোয়ালিটি চেক করে। অভিযোগ পেলে সরকার খতিয়ে দেখবে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.