Header Ads

শতাধিক লোকের হত্যার দায়ে রঞ্জন দৈমারী সহ ১০ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড


দেবযানী পাটিকরঃ গুয়াহাটি
রক্তাক্ত হয়েছিল ৩০ অক্টোবর, ২০০৮ সালের এই দিনে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল গুয়াহাটি সহ কোকরাঝাড়, বঙ্গাইগাও, বরপেটারোড। এই বিস্ফোরণের ফলে ১০০ জন লোকের মৃত্যুর সঙ্গে ৫০০ জন লোক আহত হয়েছিলেন। ইতিহাসের কালো অধ্যায় রূপে পরিচিত হয়ে থাকা এই অভিশপ্ত ৩০ অক্টোবরে পরিজনদের হারানোর বেদনা এখনো  প্রিয়জনরা ভুলতে পারেনি। অনেক মার চোখের জল এখনো হয়তো শুকায়নি। কারণ আপনজনকে হারানোর বেদনা কোনোদিনই ভুলতে পারার মত নয়। একমাত্র যারা আপনজনকে হারিয়েছেন তারাই অনুভব করতে পারেন আপনজন হারানোর ব্যথা। দীপাবলীর পর পরই সংঘটিত হয়েছিল এই ঘটনা। ১০ বছর পর সেই ধারাবাহিক বিস্ফোরণের মাস্টার মাইন্ড এনডিএফবির চেয়ারম্যান রঞ্জন দৈমারী সহ দশ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। বুধবারে এই ঐতিহাসিক রায়দান দেয় আদালত। ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণে দোষী প্রমাণিত হয় ১৪জন। সোমবার এনডিএফবির ১৪ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত। বিস্ফোরণের পর দীর্ঘ সময় ধরে রঞ্জন দৈমারী বাংলাদেশে আত্মগোপন করেছিল। বুধবার ঐতিহাসিক রায়েরদানের পর অনেকের ধারণা যে আবার অশান্ত হতে পারে আসাম। এদিকে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে উত্তাল হয়েই রাজ্য। স্বাভাবিক কারণেই অসম জুড়ে জারি করা হয়েছে হাই এলার্ট। উল্লেখ্য যে সারা অসম জুড়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ সংঘটিত ঘটনার পর রঞ্জন দৈমারী চলে যায় বাংলাদেশ। ২০১০ সালে তাকে বাংলাদেশ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অবশেষে বিস্ফোরণের এই ঘটনায় চূড়ান্ত রায় দানে ১০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাথে আদালত তিন জনকে জরিমানা ও একজনকে বেনিফিট অফ ডাউটে দোষ মুক্ত ঘোষণা করে আদালত। ফলে আদালতে চৌহদে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। ধারাবাহিক বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত ২২ জনকে অভিযুক্ত করে ছিল আদালত তার ভিতরে বিচার প্রক্রিয়া করার সময় মৃত্যু হয়েছিল ৩ অভিযুক্তর। অন্যদিকে ৪ অভিযুক্ত বর্তমানে পলাতক অবস্থায় আছে।যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত রঞ্জন দৈমারী, জর্জ বড়ো, অজয় বসুমতারী, রাহুল ব্রহ্ম, রাজেন গযারী, অনসাই বড়ো, লখরা বসুমতারী, ইন্দ্র ব্রহ্ম, বৈশাখী বসুমতারী ও রাজু সরকার। জয়ন্তী ব্রহ্ম, প্রভাত বড়ো, মথুরাম ব্রহ্মকে জরিমানা। নিলিম দৈমারীকে কে জরিমানা তে মুক্ত। মৃদুল গযারিকে বেনিফিট অফ ডাউটে দোষ মুক্ত ঘোষণা আদালতের। উল্লেখ্য যে অসেমর একটি বিরাট অংশ আদালতের রায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। এত বড় ঘটনার পর এই সামান্য শাস্তিতে সন্তুষ্ট নয় একাংশের সঙ্গে ভুক্তভোগী পরিবার। তারা এখনো আশা করছে যে দোষী ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হোক। ওদিকে রঞ্জন দৈমারী কে যাবজ্জীবন জীবন কারাদণ্ড ঘোষিত করার পর আদালতের চৌহাদেই সে চিৎকার করে বলেছে যে এনডিএফবি পৃথক বড়োলেণ্ড জেলে থাকতে থাকতেই তৈরি হবে। রঞ্জন দৈমারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বড়োলেণ্ড বন্ধ ডাকা হয়েছে।অপরদিকে রঞ্জন দৈমারীর বোন অঞ্জলী দৈমারী আদালতের এই রায় দানের পর বলেছেন, যে আদালতের এই রায় দানের ফলে এনডিএফবি-র সঙ্গে শান্তি আলোচনায় ব্যাঘাত ঘটবে এবং এর জন্য দায়ী থাকবে সরকার।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.