Header Ads

নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে খিলঞ্জীয়া বজ্ৰনিনাদ-এ কণ্ঠ মিলালেন হাজার হাজার প্ৰতিবাদী

আমাদের আন্দোলন শুধু অবৈধ বাংলাদেশীদের বিরুদ্ধে, অসমের বাঙালি বিরোধী আন্দোলন নয়ঃ সমুজ্জল ভট্টাচাৰ্য


গুয়াহাটিঃ অসমে বাঙালিরা যুগ যুগ ধরে বসবাস করছে, অসমীয়া মানুষ বাঙালি বিরোধী নয়, হিন্দু-মুসলিম, বাঙালি-অসমীয়া এই নামে ভাগ ভাগ করে সাম্প্ৰদায়িক রং দেওয়ার ষড়যন্ত্ৰ চলছে, সমাজে বিভাজন আনা হচ্ছে। আমাদের এই আন্দোলন শুধু অবৈধ বাংলাদেশীদের বিরুদ্ধেই। অসম চুক্তির আধারে ১৯৭১ সালের ২৪ মাৰ্চের পর হিন্দু-মুসলিম যারাই অসমে প্ৰবেশ করবে তাদের আমরা গ্ৰহণ করবো না। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বাতিল করতেই হবে। আজ আসু সহ ৩০টি সংগঠনে ডাকা ‘ খিলঞ্জীয়াদের বজ্ৰনিনাদ' কৰ্মসূচী উপলক্ষে গুয়াহাটি লতাশিল ময়দানে আয়োজিত বিশাল জনসভায় আসুর উপদেষ্টা সমুজ্জল ভট্টাচাৰ্য দৃঢ়তার সঙ্গে এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, খিলঞ্জীয়া জনগোষ্ঠীর  ভাষা সংস্কৃতি, ভূমির অধিকার সহ সাংবিধানিক রক্ষা কবচের ব্যবস্থা করে বিধানসভা, পৌরনিগম প্ৰভৃতি ক্ষেত্ৰে ১০০ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করতেই  হবে। কোনও ভাবেই আপোষ করা হবে না। রাজ্যের সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পী, বুদ্ধিজীবি, আসু, আবসু, নেসো সহ উত্তর পূৰ্বাঞ্চলের ছাত্ৰ সংগঠন এমনকি সারা অসম কৰ্মচারী পরিষদ-এর হাজার হাজার সদস্য এই কৰ্মসূচীতে সামিল হয়েছিলেন। আবসুর সভাপতি প্ৰমোদ বড়োও উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্ৰীয় সরকার এবং মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়ালকে বাংলাদেশীদের রক্ষক এবং ‘বিশ্বাসঘাতক' বলতেও কুণ্ঠাবোধ করলেন না আসুর উপদেষ্টা সমুজ্জল ভট্টাচাৰ্য। তিনি প্ৰতিশ্ৰুতি দেন, ছাত্ৰদের শিক্ষাবৰ্ষ নষ্ট হতে দেওয়া হবে না। গ্ৰামে গ্ৰামে, অঞ্চলে অঞ্চলে গ্ৰামসভা করে বিল বিরোধী জমায়েত করা হবে। খিলঞ্জীয়া বিরোধী এই নাগরিকত্ব বিল ২০১৬ যাতে কোনওভাবে রাজ্যসভাতে পাশ না হয়। তার জন্য বিরোধীদলগুলিকে এগিয়ে আসার দাবি আহবান জানান। হিন্দু বাংলাদেশীদের সমৰ্থন নিয়ে অসমীয়া জাতি কোনও দিন বাঁচবে না এমন মন্তব্য করে সমুজ্জল বলেন, মেঘালয়, মিজোরাম সরকার বিলের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করেছে। ত্ৰিপুরার উদাহরণ তুলে ধরে সমুজ্জল বলেন, ত্ৰিপুরাতে উপজাতি গোষ্ঠী ‘ককবরক গোষ্ঠী' আজ সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছে। আজ তাদের সংখ্যা মাত্ৰ ১২ লক্ষ। জনবিন্যাসের পরিবৰ্তন হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, এই বিলের কোনও ভিত্তি বছর নেই, যে কোনও সময় বিদেশীরা আসতে পারবে। আসু এবং ৩০টি সংগঠন অসম চুক্তির ৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৪ মাৰ্চ পৰ্যন্ত ভিত্তি বছরকে মান্যতা দিয়ে অসম চুক্তির ৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী অসমীয়া খিলঞ্জীয়া জাতিগোষ্ঠীর ভাষা-কৃষ্টি সংস্কৃতি, আসন সংরক্ষণ প্ৰভৃতির জন্য আন্দোলন চালিয়ে আসছে। এখন কেন্দ্ৰীয় সরকার জোর জবরদস্তি করে বিলটি চাপিয়ে দিলো তারা তা মানবে না। আবসুর সভাপতি প্ৰমোদ বড়ো বলেন, বিজেপিকে ভোট দেওয়াটা আমাদের ভুল হয়েছে। প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদিকে গামোছা পড়িয়েছি, তার বিনিময়ে আমরা জাতি-মাটি দেব না। আসুর সাধারণ সম্পাদক লুরিণজ্যোতি গগৈ মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়ালকে একবিংশ শতাব্দির ‘মেরুদণ্ডহীন' ল'রারজা বলে আখ্যা দেন। মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়াল ডেপুটি কমিশনার এবং পুলিশ সুপারদের এক সভা আহবান করে ছাত্ৰ-ছাত্ৰীদের রাজনীতিতে নেমে আন্দোলন না করার নিৰ্দেশ জারি করেছিলেন, পরে তা প্ৰত্যাহার করে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ তুলে আসুর নেতারা বলেন, সৰ্বানন্দ সনোয়ালই আসুর সভাপতি থাকার সময়ই ছাত্ৰ-ছাত্ৰীদের পথে নামিয়েছিলেন। আমরা অসমের মানুষের স্বাৰ্থে প্ৰয়োজন হলেই ছাত্ৰ-ছাত্ৰীদের নিয়ে আন্দোলন করব। শিক্ষাবিদ অমরজ্যোতি চৌধুরী বিপ্লবী কবিতা আবৃত্তি করেন। বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী জুবিন গাৰ্গ, পত্নী গরিমা গাৰ্গ উপস্থিত ছিলেন। জুবিন মঞ্চে উঠে ‘রাজনীতি করো না বন্ধু........... এক কলি গেয়ে বিলটির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করার আৰ্জি জানান।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.