Header Ads

শেষ পৰ্যন্ত কেন্দ্ৰীয় মন্ত্ৰীসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল অনুমোদন, জোট ছাড়ল অগপ স্বাধীন অসমের দাবিও উঠল



 ছবি, সৌঃ টাইম ৮
নয়া ঠাহর প্ৰতিবেদন, গুয়াহাটিঃ শেষ পৰ্যন্ত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সোমবার কেন্দ্ৰীয় মন্ত্ৰীসভায় অনুমোদন হয়ে হল। তারপরই লোকসভায় পেশ করা হয়। আগামিকাল লোকসভা অধিবেশনের শেষ দিনে বিলটি গৃহীত হবে কিনা তা জানা যাবে। কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে আলোচনার পরই অগপ-র নেতারা নিশ্চিত হয়ে যান। তারপরই অগপ-র নেতা তথা প্ৰাক্তন মন্ত্ৰী বিরেন্দ্ৰ কুমার বৈশ্য এবং সভাপতি অতুল বরা বিজেপির সঙ্গে মিত্ৰতা ভঙ্গের ঘোষণা করেন। অগপ-র সভাপতি তথা কৃষিমন্ত্ৰী অতুল বরা, জলসম্পদ মন্ত্ৰী কেশব মহন্ত এবং খাদ্য সরবরাহ মন্ত্ৰী ফণিভূষণ চৌধুরী এরা ৩ জনই পদত্যাগ করবেন। অগপ সভাপতি-অতুল বরা বলেন-  বিলটি গৃহীত হলে অসম চুক্তি নস্যাৎ হবে, এনআরসি বানচাল হবে। জেপিসির চেয়ারম্যান রাজেন্দ্ৰ আগরওয়ালা প্ৰতিশ্ৰুতি দিয়েছিলেন পুনরায় অসমে এসে বিভিন্ন জনের মতামত নিয়ে বিলটি পাৰ্লামেন্টে পেশ করবেন। তার আগেই অসমের জনগণকে উপেক্ষা করে বিলটি পাৰ্লামেন্টে পেশ করা হল। এদিন লোকসভাতে বিলটি পেশ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে অসম অগ্নিগৰ্ভ হয়ে ওঠে। কেএমএস প্ৰায় ৭০ টি সংগঠনের প্ৰতিনিধিরা এদিন দিল্লিতে সংসদের কাছে উলঙ্গ প্ৰতিবাদ করেন। পুলিশ তাঁদেরকে সংসদ মাৰ্গ থানায় নিয়ে গিয়ে গ্ৰেফতার করে। ওদের প্ৰতিনিধিরা খোভ প্ৰকাশ করে বলেন- বাংলাদেশের ১ কোটি ৭০ লক্ষ বাংলাদেশী হিন্দু অসমে বসবাসকারী ২০ লক্ষ বাংলাদেশী হিন্দু, মোট ১ কোটি ৯০ লক্ষ বাংলাদেশী হিন্দুকে পুনৰ্বাসনের লক্ষে এই বিল আনছে কেন্দ্ৰ। এই চক্ৰান্তে রয়েছে বিজেপি এবং আরএসএস। আগের সিদ্ধান্ত মতই আসু সমেত ৩০ টি সংগঠন এদিন গোটা রাজ্য জুড়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্ৰতিলিপি পোড়ায়। গুয়াহাটিতে শহিদ ন্যাসে আসু নেতৃত্ব এই প্ৰতিলিপি পুড়িয়ে ব্ৰহ্মপুত্ৰের জলে ভাসিয়ে দেয়। এদিনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে ড০ হীরেন গোহাইয়ের মতো রাজ্যের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী কেন্দ্ৰীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে ধিক্কার জানিয়ে বলেছেন- ‘এই বিলের বিরুদ্ধে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে লড়াই করবো। শেষ পৰ্যন্ত লড়াই করবো, ব্যৰ্থ হলে আমরা স্বাধীন অসমের দাবি তুলবো। তা ছাড়া আমাদের সমামনে আর কোনও গত্যন্তর নেই।’ কেএমএসএস-এর নেতা অখিল গগৈ এই দাবিকে সমৰ্থন করেছেন। আসুর সাধারণ সম্পাদক ল্যুরিন জ্যোতি গগৈ, উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল কুমার ভট্টাচাৰ্য বলেন- খিলঞ্জিয়া জনগোষ্ঠীর স্বাৰ্থ জলাঞ্জলি দিয়ে এই বিল আনছে কেন্দ্ৰীয় সরকার। অগপ বিজেপির সঙ্গে মিত্ৰতা ভঙ্গ করাকে তাঁরা স্বাগত জানিয়েছে। অপর দিকে প্ৰাক্তন মুখ্যমন্ত্ৰী তরুণ গগৈ- বলেন আমি কোনওভাবে স্বাধীন অসমের কথা চিন্তা করতে পারি না। আমরা এর ঘোরতর বিরোধী। এদিন আসুর সদস্যরা ডিব্ৰুগড়ে মুখ্যমন্ত্ৰীর বাড়ির সামনে কালো পতাকা দেখিয়ে প্ৰতিবাদ করে। একদিকে ব্ৰহ্মপুত্ৰ উপত্যকা জ্বলছে, অপরদিকে বরাক উপত্যকায় আনন্দ উৎসবে মেতেছে সব দল সংগঠন। কংগ্ৰেস বিধায়ক কমলাক্ষ্য দে পুরকায়স্থ সোমবার গুয়াহাটিতে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে এই বিলকে দৃঢ়তার সঙ্গে সমৰ্থন করেছেন। বলেছেন-আমরা ধৰ্মনিরপেক্ষ চরিত্ৰে বিশ্বাস করি। দেশ বিভাজনের বলি হয়ে যারা আমাদের দেশে এসেছেন আমরা তাদেরকে গ্ৰহণ করার পক্ষে। প্ৰসঙ্গত, রাজ্যের অৰ্থমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা বলেছেন-‘আমরা ধৰ্মনিরপেক্ষ নই। আমরা অসমের জাতি, মাটি, ভেটি রক্ষার পক্ষে। জিন্নাদের সমৰ্থন করি না। ’ বরাক উপত্যাকায় শিলচরের আইনজীবীরা সোমবার একে অপরকে মিষ্টি খাইয়ে ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেছেন- বিলটি পাশ হলে বাঙালি হিন্দুদের দীৰ্ঘ বছরের দুঃখ যন্ত্ৰণা হ্ৰাস পাবে। এদিন মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়াল ফের একবার ডিব্ৰুগড়ে বলেছেন- ভূমিপুত্ৰদের রক্ষার দায়িত্ব আমাদের। আমি অসমবাসীকে ভরসা দিচ্ছি অসমের ভূমিপুত্ৰদের অধিকার খৰ্ব হতে দেব না। খিলঞ্জিয়ার প্ৰতি আমি দায়বদ্ধ। মাতৃভূমির প্ৰতি আমাদের দায়িত্ব আছে। হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা এদিন তিনসুকিয়াতে মেডিকেল কলেজের শিলান্যাস করে বলেন- আমরা বিকাশের রাজনীতি করি। জাতি, মাটি, ভেটি রক্ষার রাজনীতি করি। কালো পতাকা নয়, এই সময় শান্তির পতাকা ওড়ানোর সময়। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বাতিলের দাবিতে আগামিকাল আসুর নেতৃত্বে ৩০ টি সংগঠন অসম বনধের ডাক দিয়েছে। অপরদিকে নেসোর আহ্বানে উত্তরপূৰ্বাঞ্চল বনধ ডাকা হয়েছে। এআইইউডিএফ এই বনধকে সমৰ্থন করেছে। দলের সাধারণ সম্পাদক চম্পক কলিতা বনধ সমৰ্থনের কথা জানিয়েছেন। অগপও আগামিকালের বনধকে সমৰ্থনের কথা ঘোষণা করেছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই আগামিকালের বনধ বরাকে ব্যৰ্থ হলেও ব্ৰহ্মপুত্ৰ উপত্যকায় সৰ্বাত্মকভাবে সফল হবে। নাগরিকত্ব সংসদীয় কমিটির সদস্য ভূবনেশ্বর কলিতা উষ্মা প্ৰকাশ করে বলেছেন- এই বিলটি সৰ্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়নি। ভারতীয় সংবিধানের ১৪ নম্বর দফা ভঙ্গ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন ভিত্তি বছর নেই এই বিলে। মোদ্দা কথা এই বিলকে ঘিরে বরাক ও ব্ৰহ্মপুত্ৰের মধ্যে বিভাজন স্পষ্ট দেখা দিয়েছে।


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.