Header Ads

নিৰ্বাচন আসছে, তাই দীৰ্ঘ ৩৫ বছর পর অসম চুক্তি রূপায়ন করে রাজ্যের মানুষের মন ছূঁতে চাইছে বিজেপি

কেন্দ্ৰের সিদ্ধান্ত নিৰ্বাচনমুখী, রাজ্যে বিভাজনের রাজনীতি শুরু করল বিজেপিঃ হাফিজ রশিদ আহমেদ চৌধুরী

দিল্লী-গুয়াহাটিঃ সংসদে নিৰ্বাচন আসছে, তাই দীৰ্ঘ ৩৫ বছর পর সরকারের মনে পড়ল অসম চুক্তি কাৰ্যকরী করতে হবে। অসম চুক্তির ৬-ধারা অনুযায়ী অসমীয়া জনগোষ্ঠীর আৰ্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ভাষিক পরিচয় এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণের রক্ষাকবজের ব্যবস্থা করবে কেন্দ্ৰীয় সরকার। বিশেষ করে অসমীয়া জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক রক্ষাকবজ হিসাবে বিধান সভায় আসন সংরক্ষণ, অসমীয়া যুবক-যুবতীদের চাকরি সংরক্ষণ ইত্যাদির সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্ৰীয় সরকার। আজ কেন্দ্ৰীয় কেবিনেট কমিটির সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী রাজনাথ সিং দিল্লীতে সাংবাদিক সন্মেলনে বলেন, দীৰ্ঘ ৩৫ বছর অসম চুক্তি রূপায়িত হয় নি। তাই অসমীয়া এবং খিলঞ্জীয়া জনগোষ্ঠীর আৰ্থ-সামাজিক রক্ষায় অসম চুক্তির ৬ নম্বর ধারা কাৰ্যকরী করার জন্য এক উচ্চ পৰ্যায়ে এক কমিটি গঠন করা হবে। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যেই কমিটি গঠিত হবে। ১৯৮৫ থেকে আজ পৰ্যন্ত সামগ্ৰিক পরিস্থিতি পৰ্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে ঐ কমিটি। অসমের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবিদেরও এই কমিটিতে স্থান করে দেওয়া হবে। এছাড়া বোড়ো জনগোষ্ঠীর ভাষা, সাংস্কৃতি-কৃষ্টি রক্ষার স্বাৰ্থে ২০০৩ সালের বোড়ো চুক্তির পৰ্যালোচনা করে তা কাৰ্যকরী করার ব্যবস্থা করবে কেন্দ্ৰ। কোকরাঝাড়ের এক সংগ্ৰহশালা গঠন করে কৃষ্টি ভাষা-সাংস্কৃতি সংরক্ষণের ব্যবস্থা হবে। বিটিএডিতে রেডিও এবং দূরদৰ্শন কেন্দ্ৰ উন্নয়ন করা হবে। কোকরাঝাড় থেকে দিল্লী পৰ্যন্ত ‘আরনাই' নামে এক সুপার ফাষ্ট ট্ৰেন চালু করা হবে। আজকে কেবিনেটে গুরুত্বপূৰ্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও ২৬৩ কিলোমিটার অসম সীমান্ত সীল করা, প্ৰকৃত ভূমিপুত্ৰ খিলঞ্জীয়ার সংজ্ঞা নিৰ্ণয় সম্পৰ্কে কোনও কিছু উল্লেখ করা হয় নি। ৫ জনগোষ্ঠী চুতীয়া, তাই আহোম, মরাণ, মটক, কোচ রাজবংশী এবং চা জনগোষ্ঠীকে তপশিলভূক্ত করার প্ৰতিশ্ৰুতি পূরণের আশ্বাসও দেওয়া হয় নি। কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী রাজনাথ সিং এন আর সি রূপায়নের কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু প্ৰস্তাবিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে কোনও কথা বলেন নি। তবে কেন্দ্ৰীয় সরকার নিৰ্যাতিত সংখ্যালঘু মানুষদের এই রাজ্যে আশ্ৰয় দানের ব্যাপারে দরকার পড়লে অৰ্ডিন্যান্সও জারি করতে পারে বিভিন্ন সূত্ৰে জানা গেছে। আজকের কেবিনেট কমিটির বৈঠকে রাষ্ট্ৰায়ত্ব ব্যাঙ্ক অফ বরোদার সঙ্গে বিজয়া ব্যাঙ্ক এবং দেনা ব্যাঙ্ককে সামিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ‘কেন্দ্ৰীয় ট্ৰেড ইউনিয়ন আইন' কাৰ্যকরী করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেন্দ্ৰীয় সরকারের আজকের এই সিদ্ধান্তের মিশ্ৰপ্ৰতিক্ৰিয়ার সৃষ্টি হয়েছে রাজ্যে। জাতীয়তাবাদী সংগঠনগুলো কেন্দ্ৰের সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্ৰকাশ করেছে। নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমিতি-র উপদেষ্টা তথা বিশিষ্ট আইনজীবি হাফিজ রশিদ আহমেদ চৌধুরী বলেন, ৩৫ বছর বাদে অসম চুক্তি রূপায়নের কথা মনে পড়ল কেন্দ্ৰের, লোকসভা নিৰ্বাচনের আগে রাজ্যে বিভাজনের রাজনীতি শুরু করল কেন্দ্ৰের বিজেপি সরকার। এন আর সিতে মাত্ৰ ৭০০ জন আপত্তি জানিয়েছিল তা রাতারাতি লক্ষ লক্ষ আপত্তি কি করে বৃদ্ধি পেল, এই প্ৰশ্ন তুলে আইনজীবি বলেন, প্ৰশাসন জড়িত না থাকলে তা সম্ভব হত না। আসুর সাধারণ সম্পাদক লুরিণজ্যোতি গগৈ বলেন, অসম চুক্তি রূপায়নের দাবি আজ দীৰ্ঘ বছরের, কেন্দ্ৰীয় সরকার শুধুই প্ৰতিশ্ৰুতি দিয়েই যাচ্ছে, আবার নিৰ্বাচনের আগে প্ৰতিশ্ৰুতি দিল। কেন্দ্ৰ উচ্চ পৰ্যায়ে কমিটি গঠন করবে তা কাৰ্যকরী করার আগেই লোকসভা নিৰ্বাচন আচরণ বিধি শুরু হয়ে যাবে। তিনি বলেন, এর আগেও কেন্দ্ৰীয় সরকার আসুর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে অসম চুক্তি রূপায়নের জন্য উপ-সমিতি গঠন করে দিয়েছিল, তা বাস্তবায়িত হয় নি। এক দিকে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল চাপাচ্ছে অপর দিকে অসম চুক্তি রূপায়নের কথা বলছে, তা স্ববিরোধী। রাজ্যের অৰ্থমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা কেন্দ্ৰের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, রাজ্যের মানুষের দীৰ্ঘ দিনের আশা আকাংক্ষা পূরণ হবে। প্ৰসঙ্গত প্ৰস্তাবিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্ৰতিবাদে গতকাল থেকে ৭০টি সংগঠন লাগাতার আন্দোলন শুরু করেছে। রাজ্যের এই জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদী আগামী ৪ জানুয়ারি শিলচরে আসছেন, এক জনসভায় ভাষণ দেওয়ার জন্য।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.