Header Ads

ঐতিহাসিক জোনবিল মেলায় শতাব্দী প্রাচীন বিনিময় প্রথার মাধ্যমে চলছে বেচা-কেনা

দেবযানী পাটিকর, গুয়াহাটিঃ সমন্বয়ের বার্তা নিয়ে পাহাড় ও সমতলের সম্প্রীতি রক্ষার জন্য প্রতি বছর জোনবিলের পাড়ে আয়োজন হয় জোন বিল মেলার। শতাব্দী প্রাচীন বিনিময় প্রথা এখনও চালু রয়েছে এই জোনবিল মেলাতে। গুয়াহাটি থেকে থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে মরিগাঁওয়ে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে জোনবিল মেলা। অসমিয়া ভাষায় ‘জোন’-এর অর্থ চাঁদ আর ‘বিল’ শব্দের অর্থ বড় জলাশয় অর্থাৎ ঝিল। মাঘ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার থেকে এই মেলা বসে। তিন দিনের এই মেলাতে হাজার হাজার লোকের ভিড় দেখা যায়।  দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষ উপজাতীয় এই মেলা দেখতে উপস্থিত হয় জোন বিলের পাড়ে। এই বিলের নামের জন্য এলাকার নাম জোন বিল। প্ৰসঙ্গত, পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে এই মেলা হয়ে আসছে। মেলার মুখ্য আকর্ষণ হল বিনিময় প্রথা। মেলাতে পাহাড় থেকে নেমে আসে উপজাতির লোকেরা। তারা সমতলের লোকদের কাছে বিক্রি করে পাহাড়ে উৎপাদিত বিভিন্ন সামগ্রী যেমন- হলুদ, কচু, আদা, মিষ্টি কুমড়া, বেগুন শাকসবজি ইত্যাদি। ইতিমধ্যেই উৎপাদিত সামগ্রী নিয়ে অস্থায়ী শিবির করে পসরা সাজিয়ে বসেছেন তারা। শুক্রবার ভোররাতে পাহাড় ও সমতলের এই বিনিময় প্রথা হয়ে যায়। যেখানে আধুনিক মুদ্রার প্রচলন বন্ধ। পাহাড় ও সমতলের মাঝে চলে আদান-প্রদান। সমতলের লোকের সাথে জিনিষপত্ৰ কেনা বেচা হয়  বিনিময় প্রথার মাধ্যমে। অর্থাৎ যে জিনিসের প্রয়োজন সেটা দিয়ে সেই সামগ্ৰীর বিনিময়ে প্রয়োজনীয় অন্য সামগ্ৰী কেনা। সমতলের লোকদের কাছ থেকে কেনা হয় শুকনো মাছ, মিষ্টি, চিড়ে ইত্যাদি। মেলা উপলক্ষে লোকে- লোকারণ্য হয়েছে বিলের পাড়। শনিবার তারা পাহাড়ে চলে যাবে। সেখানে গিয়ে তারা নিজেদের মধ্যে বিহু পালন করবে। খুব দুর্গম রাস্তা ভেঙ্গে পাহাড়, জঙ্গল পেরিয়ে নিচে নেমে আসে এইসব উপজাতীয় লোকেরা। মেলাতে বিভিন্ন উপজাতীয় খাদ্য দ্ৰব্য, মাছও বিক্রি হচ্ছে।
 মেলাতে ঘরে তৈরি জিনিস এর সাথে বিক্রি হয় কাঠের তৈরি সামগ্রীও। বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে এখানে চলে টাকা। স্থানীয় লোক সংস্কৃতি মেলাকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
 প্ৰসঙ্গত, মেলার অন্তিম দিনে শনিবার উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। সেখানে তিনি ১৮ জন রাজা কে ‘রাজ ভাতা’ প্রদান করবেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.