Header Ads

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৯ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত

 
ছবি, সৌঃ জি প্লাস
নয়া ঠাহর প্ৰতিবেদন, গুয়াহাটিঃ রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন ছাত্ৰ সংগঠন তাদের আন্দোলন আব্যাহত রাখবে বিলটি বাতিল না করা পৰ্যন্ত। ছাত্ৰ একতা সভা সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে বলে- আগামী ১৮ জানুয়ারি যৌথ মঞ্চ তৈরি করে রাজ্য জুড়ে প্ৰচার চালাবে তারা। বিল বাতিল না হওয়া পৰ্যন্ত তারা আন্দোলন আব্যাহত রাখবে। গুয়াহাটি মেডিকেল কলেজের জুনিয়র ডক্টররাও তাঁদের আন্দোলন আব্যাহত রাখেন। রাজ্যের যেকোনও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিজেপির সব নেতা মন্ত্ৰীদের বয়কোট করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমনকি তারা আগামী শিক্ষাবৰ্ষের পরীক্ষা পৰ্যন্ত বৰ্জন করতে প্ৰস্তুত। বিধানসভার বিরোধী দলপতি দেবব্ৰত শইকিয়া ছাত্ৰ নেতাদের প্ৰতি আহ্বান জানৱিয়ে বিবৃতিতে বলেছেন- ছাত্ৰ সমাজের প্ৰতি এমন কোনও ভুল করবেন না যাতে অসম আন্দোলনের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কেন্দ্ৰীয় সরকার অসম চুক্তির ৬ নম্বর ধারা কাৰ্যকরি করার জন্যে উচ্চ পৰ্যায়ের কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন সেই কমিটি থেকে বৃহস্পতিবার দুজন প্ৰতিনিধি পদত্যাগ করলেন। অসম সাহিত্য সভার প্ৰাক্তন সভাপতি ড০ নগেন শইকিয়া এবং আরেক প্ৰাক্তন সভাপতি রংবং টেরাং। ড০ শইকিয়া অভিযোগ করেছেন- এই কমিটি অসমিয়াদের স্বাভিমান রক্ষা করতে পারবে না। রংবং টেরাং বলেছেন- অসম চুক্তি স্বাক্ষরকারি আসু যেখানে প্ৰতিবাদ করে এই কমিটি থেকে সরে এসেছে সেখানে আমাদের থাকার কোনও মানে হয় না। বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী জুবিন গৰ্গের পর পাপনও এই বিলের প্ৰতিবাদ করেছেন। শদিয়া থেকে ধুবড়ি পৰ্যন্ত ছাত্ৰ সমাজের মধ্যে ক্ষোভের বহিঃপ্ৰকাশ লক্ষ্য করা গেছে। আজেকর সবথেকে তাৎপৰ্যপূৰ্ণ ঘটনা হল ড০ হীরেণ গোঁহাইয়ের মতো বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীর বিরুদ্ধে লতাশিল থানায় পুলিশ দশদ্ৰোহিতার অভিযোগ দায়ের করেছে। ধিক্কার দিবসের দিন অৰ্থাৎ মঙ্গলবার তিনি স্বশস্ত্ৰ আন্দোলনের কথা বলেছিলেন। সাংবাদিক মনজিৎ মহন্ত এবং কেএমএসএস নেতা অখিল গগৈর বিরুদ্ধেও এই অভিযোগ করা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০/ বি /১২১ /১২৩ /১২৪ ধারায় তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কেস নম্বর ১৫/২০১৯ পুলিশই স্বতঃস্ফূৰ্তভাবে এই অভিযোগ দায়ের করে। রাজ্যের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করায় গোটা রাজ্য জুড়ে তীব্ৰ প্ৰতিক্ৰিয়া সৃষ্টি হয়েছে। প্ৰাক্তন মুখ্যমন্ত্ৰী তরুণ গগৈ, প্ৰাক্তন মুখ্যমন্ত্ৰী প্ৰফুল্ল কুমার মহন্ত তীব্ৰ ক্ষোভ প্ৰকাশ করেছেন। তরুণ গগৈ বলেছেন- হীরেণ গোঁহাই দোশদ্ৰোহী তা ভাবাই যায় না। তিনি তো কোনও স্বশস্ত্ৰ আন্দোলনের কথা বলেননি। আসুর উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল কুমার ভট্টাচাৰ্য বলেছেন- ‘বিজেপি সরকার ক্ষমতার চূড়ান্ত অপচয় করল। আমরা তার উপযুক্ত জবাব দেব।’ নিজের বিরুদ্ধে দেশদ্ৰোহীতার অভিযোগ খণ্ডন করে হীরেণ গোহাই বলেছেন- ‘আমরা গণতান্ত্ৰিক আন্দোলনের কথাই বলেছিলাম। গণতান্ত্ৰিক আন্দোলনকে যদি উপেক্ষা করা হয় তখনই স্বাধীন অসম প্ৰাসঙ্গিক হবে। সমগ্ৰ ভারতের সংবিধানের সুরক্ষার লক্ষ্যে আমরা সংগ্ৰাম করছি। তাই আমরা অসম বিরোধী বিলকে সমৰ্থন করতে পারি না।’ সিপিএমের বিশিষ্ট নেতা হেমেন দাস সহ বহু ছাত্ৰ নেতা বৃহস্পতিবার বলেছেন- বিজেপি সরকার নিকৃষ্ট ষড়যন্ত্ৰ শুরু করেছে। ড০ গোঁহাইকে গ্ৰেফতার করলে ফল হবে ভয়াবহ। কেএমএসএস-এর নেতৃত্বে ৭০টি সংগঠন এদিনও গুয়াহাটিতে প্ৰতিবাদী আন্দোলন করে। এই আন্দোলনের অভিমুখ ক্ৰমশ ধ্বংসাত্মক দিকে যাচ্ছে, সেদিকে লক্ষ্য রেখে কামরূপ জেলা প্ৰশাসন গুয়াহাটি মহানগরের সৰ্বত্ৰ ১৪৪ ধারা জারি করেছে। দিসপুর, বশিষ্ট, ভাঙাগড়, হাতিগাঁও, এলাকায় পাঁচজনের বেশি কেউ জমায়েত হবে পারবে না। সভা সমিতি প্ৰতিবাদ মিছিল করা যাবে না। মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়ালকে হঠাৎ এদিন হঠাৎই দিল্লিতে তলব করা হয়। বরাক উপত্যকার কংগ্ৰেসের অধিকাংশ নেতা কমলাক্ষ্য দে পুরকায়স্থ সহ নেতারা এই বিলকে সমৰ্থন করলেও শিলচরের একমাত্ৰ কংগ্ৰেস সাংসদ সুস্মিতা দেব দুমুখো নীতি গ্ৰহণ করেছে বলে অভিযোগ তুলে বরাকে কংগ্ৰেসের একাংশের মধ্যে তীব্ৰ ক্ষোখের সৃষ্টি হয়েছে। শ্ৰীমতি দেব দিল্লিতে প্ৰদেশ কংগ্ৰেসের সুরে সুর মিলিয়ে বিলটির বিরোধীতা করেছেন। বরাকে এসে তিনি বিলকে সমৰ্থন করছেন। আসুর সঙ্গে বিজেপির বিধায়ক মৃণাল শইকিয়ার পারস্পরিক কাঁদা ছোড়াছুড়ি চূড়ান্ত পৰ্যায়ে। আজ মৃণাল শইকিয়া আসু নেতাদের বিরুদ্ধে কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করেছেন। মেহদি আলম বরার পর বৃহস্পতিবার সি কে দাস নামে এক বিজেপি নেতা বিলের প্ৰতিবাদে দল ছাড়েন। তবে এদিন এক ব্যতিক্ৰমী দৃশ্য দেখা গেল বঙাইগাঁওয়ের ৩৩ বছরের অগপ বিধায়ক ফণিভূষণ চৌধুরী এদিন মন্ত্ৰীত্ব ছেড়ে বন্ধুর স্কুটারে চেপে গুয়াহাটি রেলওয়ে স্টেশনে যান। বঙাইগাঁও স্টেশনে নেমে সমৰ্থক অনুরাগীদের সামনে দেখে হু হু করে কেঁদে ওঠেন। চোখের জল মুছে তিনি বলেন- ‘আমাদের মন্ত্ৰীত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত সঠিক সিদ্ধান্ত।’ আগামী ৩১ শে জানুয়ারি লোকসভার বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে। বিজেপি নেতাদের দাবি, বাজেট অধিবেশনের সময় রাজ্যসভায় পাস না হওয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৯ পাস করানোর চেষ্টা করবেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.