Header Ads

মেঘালয়ের প্ৰকৃতির কোলে অনন্য সুন্দর মাজার পৰ্যটকদের আকৰ্ষণের কেন্দ্ৰ বিন্দু







অমল গুপ্তঃ গুয়াহাটি,
মেঘের-আলোয় = মেঘালয়। সুদূর বিস্ত´ৰ্ণ বনাঞ্চল, নীলাকাশ ঢাকা সবুজ পাহাড়, খাসিয়া, জয়ন্তীয়া, গারো উপত্যকাকে নিয়ে মেঘালয়ের উপজাতি মানুষগুলির বৰ্ণময় সাংস্কৃতিক জীবন, বৈচিত্ৰ্যময় কৃষ্টির পসরা সাজিয়ে প্ৰকৃতির কোলে দৈনন্দিন সংগ্ৰামী জীবন থেমে থাকে নি। মেঘালয়ের আনাচে-কানাচে প্ৰকৃতির রহস্য লুকিয়ে আছে। প্ৰতিটি বাঁকই ‘বিউটি স্পট'। চেরাপুঞ্জির বৃষ্টিস্নাত রহস্য ঘন পরিবেশের সঙ্গে পৰ্যটকদের পরিচয় আছে। শৈলনগরী শিলংয়ের পাইন ঢাকা গোলাপী রঙের চেরি ব্লসম গাছের স্নিগ্দ্ধ ঠাণ্ডা ঘেরা লেকের সঙ্গেও আম জনতার পরিচয় আছে। কিন্তু গুয়াহাটি থেকে প্ৰায় ৬০ কিলোমিটার দূরবৰ্তী ছোট্ট জনপথ নংপো থেকে মাত্ৰ ৭-৮ কিলোমিটার পাহাড়ি উপত্যকার চা বাগান, আনারস, কমলা খেতের মাঝে যেখানে লেকের জল ছুয়েছে নীলাকাশকে। মাত্ৰ ১০০০-১২০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত মাজার, ইংরেজি বানানে মাঞ্জার (Mangar) বলা হেচ্ছ। উপজাতিদের এই মনোরম শান্ত পরিবেশের মাজার যেতে ছোট ছোট আকা-বাঁকা পাহাড়ি পথ, দুই ধারে চা বাগান, আনারস, কমলা, প্ৰভৃতি ফলমূল ছাড়াও অজানা গাছ-গাছরাই সবুজ পাহাড় ধনুকাকৃতি লেককে জড়িয়ে রেখেছে। ঢালু পাহাড়ে ঘাসের আস্তরণ জল টল-টলে লেকে কচুরিপানা গুল্মলতা, বুনো ঘাস ঢাকা ছোট ছোট মাছ, রংবেরংয়ের প্ৰজাপ্ৰতির মাঝে স্বচ্ছ জলেবোটিংয়ের ব্যবস্থাও আছে। এই লেকের ওপারে যাওয়ার ব্যবস্থার জন্য সংযোগসেতু নিৰ্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। নরম ঘাসে পা রেখে, লেকের জলে পা ডুবিয়ে কিশোর-কিশোরীরা নিজস্বী (সেলফি) তুলতে ব্যস্ত। লেকের এক দিকে পাহাড় ঘেরা প্ৰাচীর ওপারে আনারস খেতি, গাছ থেকে কেটেই গ্ৰাহকদের মাত্ৰ ১০ টাকা করে আনারস বিক্ৰি করতে দেখা গেল উপজাতি মানুষগুলিকে। মেঘালয়ের রিভই জেলার অন্তৰ্গত নংপোর এত কাছে এমন এক দূৰ্দান্ত প্ৰাকৃতিক সৌন্দয্যের লেক। মানুষের চোখেই পড়ে নি এত দিন। শিলং শহর থেকে ৬০ কিলোমিটার এবং গুয়াহাটি থেকেও ৬০ কিলোমিটার। মধ্যবৰ্তী স্থানে জনপদ নংপো, সেখান থেকে মাজারের চড়াই উৎরাই ভাঙাচোরা পথ, শুধুই সবুজ আর সবুজ। সেখানে গিয়ে দেখলাম– চার পাশে মানুষ হাঁড়ি-কড়াই দিয়ে রান্না-বান্না করছে, বিশেষ কোনও হই-হুল্লা নেই, মাতালদের দৌরাত্ব নেই, লাউড স্পীকারগুলি একশো ডেসিবেলের কম শেব্দই বেজে চলেছে, কেউ বিরক্তবোধ করছেনা। মাজারকে পারিবারিক বনভোজনের আদৰ্শ স্থল হিসাবে বলা হয়ে থাকে। আমরা সেখানে গিয়ে সেই পরিচয় পেলাম। এক ফলক লক্ষ্য করা গেল মেঘালয়ের প্ৰাক্তন মুখ্যমন্ত্ৰী ডি লাপাংয়ের। পৰ্যটকদের সুবিধার জন্য লেকটির চার পাশে জল সরবরাহের ব্যবস্থাও আছে। লেকের কাছে মাথা ঢাকার আচ্ছাদন করে দেওয়া হয়েছে। লেকটির প্ৰবেশ পথে এক বৃহৎ মৃত্যু পথযাত্ৰী বট বৃক্ষ মাটিতে পড়ে গিয়েও আলিঙ্গনের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। যেন বলতে চাইছে– “আসুন পাহাড়িয়া মাজারের সৌন্দয্য উপভোগ করে যান।”



কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.