Header Ads

রাজ্য সরকারের আশ্বাস সত্বেও ফের ‘ডি’ ভোটারের নোটিশ পেয়ে আত্মহত্যা আরও এক বাঙালির

প্ৰতীকী ছবি
নয়া ঠাহর প্ৰতিবেদন, গুয়াহাটিঃ এনআরসি নবায়নের কাজ শেষ না হওয়া পৰ্যন্ত আর কাউকে ‘ডি’ ভোটারের নোটিশ পাঠানো হবে না। রাজ্য সরকারের দেওয়া এই আশ্বাসের পরও ফের ‘ডি’ ভোটারের নোটিশ পেয়ে রাজ্যে আরও এক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটল। ওদালগুড়ির হরিশিঙা থানার ঘাগ্ৰা উলুবাড়ি গ্ৰামের বাসিন্দা ৪৯ বছর বয়সের দীপক দেবনাথ এনআরসি-র তালিকায় নাম না ওঠায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। তাঁর কাছে ১৯৭১ সালের লিগ্যাসি ডেটা রয়েছে। সেই মতে এনআরসির প্ৰথম তালিকায় তাঁর নাম ওঠে স্বাভাবিকভাবেই। কিন্তু দ্বিতীয় তালিকায় বাদ পড়ে যায় তাঁর নাম। তিনি এনআরসি কেন্দ্ৰে যোগাযোগ করেন। নতুন করে আবেদন পত্ৰ পূরণ করে জমাও দেন। অথচ তারপরই তাঁকে ‘ডি’ ভোটার (ডাউটফুল- সন্দেহভাজন) নাগরিক তকমা দেগে দেওয়া হয়। এরপর বৰ্ডার পুলিসের কাছ থেকে তাঁর বাড়িতে ‘ডি’ ভোটারের নোটিশ আসে। বৰ্ডার পুলিসের নোটিশ পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি। তীব্ৰ মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে রবিবার তিনি গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। এই প্ৰথম নয়, এর আগেও মঙ্গলদৈ দলগাঁওয়ের অবসরপ্ৰাপ্ত শিক্ষক নিরোদবরণ দাস খসড়ায় নাম না ওঠায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। তিনি তাঁর নাগরিকত্ব প্ৰমাণের সমস্ত নথিপত্ৰ নিয়ে এনআরসি অফিস থেকে শুরু করে আদালতের দ্বারস্থও হয়েছিলেন। দিনের পর দিন নাগরিকত্ব প্ৰমাণে সরকারি অফিসে, আদালতে ঘোরাঘুরি করেও তিনি ব্যৰ্থ হন। তারই জেরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। তার আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর একই কারণে আত্মহত্যা করেন বাকসা জেলার বিনয় চন্দ। তারপর ওদালগুড়ি জেলার গোপালচন্দ্ৰ দাস, টংলার বিমল চন্দ্ৰ ঘোষও আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। এই তালিকার আপাতত শেষ নাম দীপক দেবনাথ। একের পর এক বৈধ ভারতীয় নাগরিক, বাঙালির আত্মহত্যার ঘটনায় র‍াজ্য জুড়ে তীব্ৰ প্ৰতিক্ৰিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এনআরসি-র চাপে অসমে বসবাসকারী বাঙালিদের মৃত্যুর সংখ্যা ক্ৰমশ বেড়ে চলেছে। স্বাভাবিকভাবেই তীব্ৰ প্ৰতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন বাঙালি দল সংগঠন। দীপক দেবনাথের মৃতদেহ নিয়ে হাজার হাজার মানুষ প্ৰকাশ্য রাজপথে বিক্ষোভ দেখায়। স্লোগান ওঠে ‘সৰ্বানন্দ মুৰ্দাবাদ’, ‘প্ৰতীক হাজেলা মুৰ্দাবাদ’, ‘স্বরাষ্ট্ৰ বিভাগ হায় হায়’ ‘বাঙালির ওপর অত্মাচার বন্ধ কর’, ‘ভারতীয় নাগরিকদের হেনস্থা করা অসম সরকার হুঁশিয়ার’ ইত্যাদি। এনআরসি নবায়ন নিয়ে সৃষ্ট এই পরিস্থিতির শেষ কোথায় হবে ? তা আর কারও জানা নেই। অথচ সরকার নীরব দৰ্শক। অসম আজ বাঙালির বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্নে সচেতন মহল।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.