স্তন্যপানই একমাত্র মাধ্যম শিশুদের সুরক্ষিত ও সুস্থ জীবন শুরু করার
আশীষ কুমার দেঃ লামডিং বিশ্ব স্তন্যপান সপ্তাহ ২০১৮ প্রতি বছর সারা বিশ্বে পালিত হয় বিশ্ব স্তন্যপান সপ্তাহ যার একটিমাত্র উদ্দেশ্য স্তন্যপানই একমাত্র মাধ্যম শিশুদের সুরক্ষিত ও সুস্থ জীবন শুরু করার । এবছরও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বব্যাপী স্তন্যপান সপ্তাহের মাধ্যমে এর প্রয়োজনীয়তা, গুণাবলী, রাজনৈতিক ও সামাজিক সমর্থনের উপর গুরুত্ব আরোপ করা । এই বছরের থীম; 'স্তন্যপান : জীবনের বুনিয়াদ', শিশুদের স্তন্যপানের প্রয়োজনীয়তার স্বীকৃতি যা শিশুদের ভবিষ্যৎ । জন্মের ছয় মাস নবজাতকদের শুধুমাত্র মাতৃদুগ্ধ পান করানো কে প্রতিষ্ঠিত করা - শিশুদের বিকাশের ক্ষেত্রে সাহায্য করা, কুপোষন কে প্রতিহত করা, মস্তিষ্কের বিকাশ, এবং অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি কমানো । স্তন্যপান নবজাতকের প্রথম প্রতিষেধক, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে । নবজাতকের জন্মের একঘন্টার মধ্যে স্তন্যপান করালে নবজাতক মৃত্যুর হার কম হয় । জন্মের পর থেকেই স্তন্যপান শিশুদের জীবন ও মৃত্যুর ব্যাপারে নির্ণায়ক হয় । বাস্তবে, স্তন্যপানের অভ্যাস প্রতি বছর পাঁচ বছর বয়সী ৮২৩,০০০ শিশুদের মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব । যখন প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা স্থানান্তর এর পরিস্থিতি তৈরি হয়, এবং শুদ্ধ পানীয় জল ও বুনিয়াদী স্বাস্থ্য পরিষেবার অভাব হয়, তখন মাতৃদুগ্ধ একমাত্র সুরক্ষিত ও পুষ্টিকর খাদ্য শিশুদের জীবন রক্ষা ও রোগ প্রতিরোধ করতে পারে । এত ধরনের উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও অনেক শিশুই এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত । বিশ্ব ব্যাপী, পাঁচজন নবজাতকের মধ্যে মাত্র দুইজন নবজাতক জন্মের একঘন্টার মধ্যে স্তন্যপান করার সুযোগ পায় , এবং মাত্র ৪০ প্রতিশত শিশুকে শুধুমাত্র মাতৃদুগ্ধ দেওয়া হয় । মায়েরা কেন শিশুদের স্তন্যপান করাতে পারেন না, তার পেছনে অনেক কারন বর্তমান । যেমন, প্রচুর গর্ভবতী নারী এমন স্থানে শিশুদের জন্ম দিতে বাধ্য হন, যেখানে গুনগত স্বাস্থ্য পরিষেবা নেই, অভাব যোগ্য স্বাস্থ্য কর্মীদের, সঠিক পরামর্শ পাওয়া যায় না । আমাদের বিকল্প পথ খুঁজতে হবে - রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব, এই সকল শিশুদের বাঁচিয়ে রাখতে - এবং জীবিত শিশুদের স্তন্যপান সুনিশ্চিত করা । বিশ্ব স্তন্যপান সমূহ, ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ পরামর্শ মতে, স্তন্যপান কে বোধগম্য প্রোগ্রাম করা, স্তন্যপানের প্রতি ঝোঁক কে বুঝতে উন্নত মনিটরিং, মাতৃত্বকালীন ও পিতৃত্ব সবেতন ছুটি কে শক্তিশালী করা যাতে স্তন্যপানের সুযোগ বৃদ্ধি পায় । স্তন্যপানই সুস্থ জীবনের বুনিয়াদ, এবং শিশুদের বৃদ্ধির সহায়ক তাদের জীবনের পূর্ণতা লাভের একমাত্র পথ ।
কোন মন্তব্য নেই