গুয়াহাটিঃ দুৰ্নীতিমুক্ত স্বচ্ছ প্ৰশাসন উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করে বিজেপি সরকার অসমে ক্ষমতাসীন হয়েছে। মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়াল আজ নুমলিগড়ে বলেছেন, দুৰ্নীতি বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। ‘নিদিও', নলওঁ (দেব না এবং নেবও না) নীতি গ্ৰহণ করা হলেই দুৰ্নীতিমুক্ত সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেছেন। আজই এপিএসসির চাকরি ক্ৰয়ের নামে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে কৃষি বিভাগের ৮জন ডেভেলপমেণ্ট অফিসারকে দিশপুর থানায় ম্যারাথন জেরা করা হয়। বরাক উপত্যকার কয়লা পাচার চক্ৰের এক বৃহৎ দুৰ্নীতির অভিযোগ এসেছে দিশপুরে। ব্যাপকহারে বাংলাদেশে অবৈধ কয়লা চোরা চালান, ব্যাঙ্কে জালিয়াতি, সরকারি অফিসার, করিমগঞ্জ জেলার পদস্থ অফিসার, অন্যান্য পুলিশ অফিসার শাসক ও বিরোধী দলের একাংশ রাজনীতিবিদ এমনকি কয়েকজন বিধায়কের নামেও গুরুতর অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। করিমগঞ্জের সুতারকান্দি এলাকার প্ৰয়াত তহিদুর রহমান চৌধুরীর পুত্ৰ আব্দুল আহাদ চৌধুরীর বাসগৃহে করিমগঞ্জ পুলিশ তদন্ত চালিয়ে কোটি কোটি টাকার দুৰ্নীতির এমন সব গুরুত্বপূৰ্ণ নথি-পত্ৰ, কম্পিউটার সিপিউ প্ৰভৃতি উদ্ধার করা করেছে। সেই সব নথি-পত্ৰে বরাক উপত্যকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে আৰ্থিক লেনদেনের নানা যোগ সাজসের তথ্য পাওয়া গেছে। করিমগঞ্জ, কাছাড় জেলা এবং প্ৰতিবেশী রাজ্য মিজোরামের বিভিন্ন থানায় আব্দুল আহাদ চৌধুরীর নামে ৩৬টি মামলা রুজু করা হয়েছে। ব্যাঙ্কে জালিয়াতি এবং কয়লা পাচার চক্ৰের অভিযোগে আব্দুল আহাদ চৌধুরীকে গ্ৰেফতার করা হয়েছে। করিমগঞ্জ থানায় তার বিরুদ্ধে ৬৪৭/১৮, ৪২০/৪৭১/৪৬৮/৩২৩/৫০৬ আইপিসি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। কংগ্ৰেস বিরোধী দলের নেতা দেবব্ৰত শইকীয়া আজ অভিযোগ করে বলেছেন, বরাক উপত্যকায় ব্যাপকহারে দুৰ্নীতি চলছে।
|
কয়লা মাফিয়া আব্দুল আহাদ চৌধুরী |
শাসক দলের নেতারা এই দুৰ্নীতিতে জড়িয়েছে। শুধু সি আই ডি তদন্তে প্ৰকৃত অপরাধীদের গ্ৰেফতার করা যাবেনা। সি বি আই-এর তদন্ত দাবি করেছেন তিনি। মেঘালয়ের গ্ৰীণ ট্ৰাইব্যুনালের নিষেধাজ্ঞা সত্বেও মেঘালয়ের বিভিন্ন কয়লাখনি থেকে বেআইনীভাবে কয়লা উত্তোলন চলছে। এই কয়লা বরাক উপত্যকার হাইলাকান্দি এবং করিমগঞ্জ সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়াল বরাকের অবৈধ কয়লা পাচারের ঘটনা কড়া হাতে তদন্তের জন্য ডিজিপি কুলধর শইকীয়াকে নিৰ্দেশ দিয়েছেন বলে দিশপুর সূত্ৰে জানা গেছে। আজ ডিজিপি কুলধর শইকীয়া বলেছেন, বরাকের দুৰ্নীতির সব নথি-পত্ৰ পরীক্ষা করার জন্য নিৰ্দেশ দেওয়া হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে পুলিশ অফিসার, আমলা এবং রাজনীতিদের বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা গ্ৰহণ করা হবে। কয়লা মাফিয়া আব্দুল আহাদ চৌধুরীরঘর থেকে পাওয়া ‘ডায়েরী' অনুযায়ী রাজনীতিবিদসহ হাইপ্ৰোফাইল ব্যক্তিকে গুণ্ডাকরসহ ৩কোটি ৫১ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। সেই ‘ডায়েরী'তে ৩জন বিধায়কের নামও আছে। করিমগঞ্জের নেতৃস্থানীয় সব পুলিশ অফিসারকে দিশপুরে তলব করা হয়েছে। এই বৃহৎ আৰ্থিক কেলেঙ্কারীর অভিযোগের ফলে বরাকে তীব্ৰ প্ৰতিক্ৰিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই