Header Ads

রাষ্ট্রসংঘের প্ৰতিবেদনে শুধুই বাঙালি মুসলিমদের অত্যাচারের কথাই বলা হয়েছে, হিন্দুদের কথা গুরুত্ব পায়নিঃ কবিন্দ্ৰ, অৰ্ধেন্দু

গুয়াহাটিঃ জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নবায়ন প্ৰক্ৰিয়া শেষ পৰ্যায়ে পৌঁছিয়ে গেছে। কিন্তু কাদের নাম থাকবে এবং কাদের নাম বাদ পড়বে তা নিয়ে প্ৰায়ই জাতীয় নাগরিকপঞ্জির সমন্বয়ক প্ৰতীক হাজেলার নতুন নতুন নিৰ্দেশ এবং হাইকোৰ্টেরে রায়ের ফলে রাজ্যের ধৰ্মীয় এবং ভাষিক সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভয় ও আতঙ্কের বাতাবরণ সৃষ্টি হচ্ছে। গত ১-২ এবং ২৫ মে' প্ৰতীক হাজেলা পর পর তিনবার বিভিন্ন নিৰ্দেশ জারি করেছেন। সুপ্ৰীমকোৰ্টের ২০১৭ সালের এক নিৰ্দেশকে প্ৰায় উপেক্ষা করা হয়েছে। সেই নিৰ্দেশে বলা হয়েছিল যাদের নাম বিদেশী ট্ৰাইবুন্যালে থাকবে স্বাভাবিক ভাবে তাদের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত এই পৰ্যন্তই, তাদের নাম এন আর সি তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলা হয় নি। সেই নিৰ্দেশকে উপেক্ষা করে প্ৰতীক হাজেলা বিদেশী ট্ৰাইব্যুন্যালে থাকা মানুষগুলির পরিবারের নামগুলি ‘হোল্ড' করে রেখে এন আর সি তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সরাসরি সিদ্ধান্তকে সমালোচনা করেন রাজ্যের বিশিষ্ট আইনজ্ঞ হাফিজ রশিদ আহমদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ২০১৭ সালের নিৰ্দেশে কখনই বলা হয়নি ট্ৰাইব্যুন্যালগুলিতে বিচারাধীন মানুষগুলির পরিবারের নাম এন আর সি তালিকায় উঠবে না। ‘হোল্ড করে রাখা মানুষগুলির নাগরিকত্বর প্ৰমাণের জন্য সীমান্ত পুলিশ তদন্ত করে নথি-পত্ৰ দেখে প্ৰয়োজনবোধে ট্ৰাইব্যুন্যালে পাঠাবে। কিন্তু এখন সীমান্ত পুলিশ নথি-পত্ৰগুলি ভালোভাবে পরীক্ষা না করেই ‘দুৰ্বল নথি' বলে সরাসরি নামগুলি বাতিল করে দিচ্ছে। তাদের লক্ষ্য যে কোনও ভাবে ধৰ্মীয় ও ভাষিক সংখ্যালঘু মানুষগুলির নাম বাদ দেওয়া। রাজ্যের এই জটিল সন্ধিক্ষণে রাষ্ট্ৰসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার দীৰ্ঘ প্ৰতিবেদন এবং অসম তথা উত্তর পূৰ্বাঞ্চলের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন প্ৰাক্তন কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰ সচিব জি কে পিল্লাইয়ের মন্তব্যে পরিস্থিতিতে নতুন মাত্ৰা এনে দিয়েছে। কেন্দ্ৰীয় বিদেশমন্ত্ৰী সুষমা স্বরাজের কাছে পাঠানো রাষ্ট্ৰসংঘের প্ৰতিবেদনে বলা হয়েছে অসমে এন আর সি নবায়নে বাঙালি মুসলিমদের প্ৰতি বৈষম্য করা হচ্ছে। তাদের নানা ভাবে নিৰ্যাতন করা হচ্ছে। এন আর সি থেকে তাদের বাদ দেওয়ার অভিসন্ধি চলছে। বিনা কারণে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে বাঙালি মুসলিমদের মানবাধিকার লঙঘন করা হচ্ছে। ধৰ্মের ভিত্তিতে তৈরি নাগরিকত্ব বিলেরও সমালোচনা করা হয়েছে। কিন্তু প্ৰতিবেদনে অত্যাচারিত বাঙালি হিন্দুদের কথা উল্লেখই করা হয় নি। এদিকে জি কে পিল্লাই দিল্লীতে এক আলোচনাচক্ৰে প্ৰশ্ন তুলেছেন, এন আর সি তালিকা থেকে বাদ পরা লক্ষ লক্ষ মানুেষর ভাগ্যে কি হবে? বাংলাদেশ সরকারতো বলেই দিয়েছে তারা একজনকেও গ্ৰহণ করবে না। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনও প্ৰত্যপণ চুক্তি হয় নি। অসমে কোনও বাংলাদেশী নেই বলে বাংলাদেশ সরকার দাবি করেছে। তিনি পরামৰ্শ দিয়েছেন, এন আর সি থেকে বাদ পরা রাষ্ট্ৰহীন মানুষগুলিকে অসমে রেখে তাদের রাজনৈতিক অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে শুধু ওয়াৰ্ক পারমিটদেওয়া হোক। অসমের অভিজ্ঞতা সম্পৰ্কে পিল্লাই বলেছেন, অসম থেকে বিতারণ করা হলেও বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশীরা পুনরায় অসমে প্ৰবেশ করে থাকে। কেন্দ্ৰীয় প্ৰাক্তন মন্ত্ৰী কবিন্দ্ৰ পুরকায়স্থ রাষ্ট্ৰসংঘের প্ৰতিবেদন সম্পৰ্কে বলেন, অসমে বাঙালি হিন্দুদের মধ্যে কোনও মিল নেই, হাজার বিভাজন, কংগ্ৰেস, বামপন্থী সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেনা, আখের গোছাতে ব্যস্ত। তিনি বলেন, হাজার বিরোধিতা হলেও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হবেই, তখন বাঙালি হিন্দুদের সমস্যা থাকবেনা। প্ৰাক্তন কংগ্ৰেস মন্ত্ৰী ড০ অৰ্ধেন্দু কুমার দে বলেন, রাজ্যের মুসলিম জনগোষ্ঠীর মানুষ তাদের সমস্যাকে তুলে ধরতে রাষ্ট্ৰসংঘে পৌঁছিয়ে গেল। অথচ রাজ্যে বাঙালি হিন্দু জনগোষ্ঠীর মানুষ হাত খুলে বিজেপিকে ভোট দিয়ে নিজেদের সৰ্বানাশ ডেকে আনলো। তাদের রক্ষা করার কেউ নেই। গুয়াহাটি হাইকোৰ্টের বিশিষ্ট আইনজীবি হাফিজ রশিদ আহমদ চৌধুরী বরাক-ব্ৰহ্মপুত্ৰ উপত্যকার বাঙালি হিন্দু নেতাদের বিদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, মেদণ্ডহীন বাঙালি হিন্দু নেতাদের জন্য হিন্দু জনগোষ্ঠীর মানুষের দূৰ্দশা বেড়ে গেছে। বরাক উপত্যকায় বাঙালি হিন্দুদের নাম এন আর সি তালিকা থেকে বেশি বাদ পড়বে। রাজ্যের বাঙালি হিন্দুরা বিজেপিকে ভোট দিল অথচ বিজেপি সরকারের আমলে বাঙালি হিন্দুদের বিদ্ধে বেশি হেনস্থা করা হচ্ছে। তাদের নাম বেশি বাদ পড়বে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.