Header Ads

অফুরন্ত প্ৰাকৃতিক সম্পদ বনাম চিন্তার দৈনতা



  • অমল গুপ্ত

তিহাসিক মুৰ্শিদাবাদ, পলাশির প্ৰান্তর, পবিত্ৰ নদি গঙ্গার কিনারা থেকে এসে আজ দীৰ্ঘ তিন দশকের বেশি সময় মা কামাখ্যা-ব্ৰহ্মপুত্ৰ নদের পূণ্যভূমির আশীৰ্বাদ ধন্য মানুষ৷ জীবন জীবিকার তাড়নায় আমি কামাখ্যার নীলাচল পাহাড়ের অফুরন্ত প্ৰাকৃতিক ও মনোরম সৌন্ধৰ্য্যময় পরিবেশের শহর গুয়াহাটি, প্ৰাচীন প্ৰাগজ্যোতিষপুরের কোলে  ঠিকানা খুঁজে পেয়েছি৷ চারপাশের সবুজ পাহাড় ঘেরা জঙ্গল, ব্ৰহ্মপুত্ৰের মতো সুদীৰ্ঘ নদী, ডলফিন, বাঘ, বন্যজন্তু, প্ৰাকৃতিক জৈব বৈচিত্ৰের শহর গুয়াহাটির ‘আপাতত’তে সস্ত্ৰীক ডেরা বেঁধেছি৷ সাংবাদিকতা আমার পেশা কিন্তু জীবিকা নয়৷ আমার নেশা দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ জঙ্গল, মনোরম প্ৰাকৃতিক পরিবেশ৷ তার সঙ্গে অবশ্যই আমাদের চারপাশের আত্মকেন্দ্ৰিক স্বাৰ্থপর মানুষ৷ সাংবাদিকতা জীবনে স্বাৰ্থপর মানুষের আকাশ সমান লোভ, কূট-কৌশল, রাজনৈতিক নোংরা খেলা দেখার সৌভাগ্য বা দুৰ্ভাগ্য হয়েছে৷ যার সঙ্গে রাজ্যের লক্ষ লক্ষ শ্ৰমজীবী, সরল গরিব মানুষের কোনও সম্পৰ্ক নেই৷ গগনচুম্বী মূল্যবৃদ্ধি, আকাশ ছোঁয়া মানুষের লোভ এবং হৃদয়হীন মানুষের ভিড়ে গরিব আম জনতার নাভিঃশ্বাস উঠছে৷ সততা, ন্যায়-পরায়ণতা, মূল্যবোধ, মানবতাবোধ আজ বস্তাপচা শব্দে পৰ্যবসিত হয়েছে৷ দীৰ্ঘ বিস্তৃৰ্ণ সবুজ বাঁশবন, শাল-সেগুন, ছাতিম-জারুল, বিপন্ন প্ৰজাতির এক-শৃংগ বিশিষ্ট গণ্ডার আমাকে টানে৷ কাজিরঙার জীবন্ত গণ্ডারের খড়গ কেটে চোরা শিকারীরা পালাছে৷ রক্তাক্ত গণ্ডারের ছট্‌ফটানি আমাকে কাঁদায়৷ জাটিংগা পাহাড়ের আত্মঘাতী পাখিরা স্বেচ্ছায় আগুনের লেলিহান চিতায় জাঁপ দিচ্ছে, তা আমাকে ভাবায়৷ হিটলারের কনসেনট্ৰেশন ক্যাম্পের মতো এ রাজ্যের ডিটেনশন ক্যাম্পে বিনা বিচারে অন্ধকার কুঠুরিতে কমলা, জাহান নেসারা অমানবিক জীবন-যাপন করছেন৷ তা আমার মনকে বেদনায় ভারাক্রান্ত করে৷ আমি ভাবি এই কি আমাদের ক্ষুদিরাম, কনকলতা, জ্যোতিপ্ৰসাদ, নজরুল ও সুভাষের ভারতবৰ্ষ ? নিম্ন অসমের কয়েক হাজার চরাঞ্চলের লক্ষ লক্ষ সংখ্যালঘু মানুষ এক অভাবণীয় যন্ত্ৰণাময় জীবন-যাপন করছে৷ সরকারের ন্যূনতম সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত৷ ১৯৭১ সালের ২৫ মাৰ্চের আগে আসা এবং স্থায়ীভাবে ৫০-৬০ বছর এরাজ্যে বসবাস করার পরেও বাংলাদেশি তকমা তাদের ভবিতব্য৷ বাৎসরিক বিধ্বংসী বন্যায় তাদের ঘর-বাড়ী সব ধুয়ে মুছে যায়৷ বানভাসি গরিব মানুষগুলো শুধুই ঠিকানা বদল করে৷ শেষ পৰ্যন্ত তাদের ঠিকানা হয়ে দাঁড়ায় গুয়াহাটি মহানগরীতে৷ এই তথাকথিত ‘বাংলাদেশি’ মানুষগুলো গুয়াহাটি মহানগরকে গড়ছে, ভাঙছে৷ সুরম্য প্ৰাসাদে ভরে উঠেছে গুয়াহাটি৷ সেই মানুষগুলির কিন্তু কোনও মূল্য নেই৷ গুয়াহাটিতে আমাদের কাজের মেয়েরাও সংখ্যালঘু সম্প্ৰদায়ের মেয়ে৷ কাজ ফুরোলেই দূর-দূর করে তাড়িয়ে দিই তাদের৷

প্ৰাকৃতিক সম্পদে ভরপূর অসম৷ বিশ্ব পৰ্যটন মানচিত্ৰে স্থান করে নেওয়ার মতো নানা বৈশিষ্ট্য এরাজ্যে রয়েছে৷ এশিয়ার বৃহত্তম নদিদ্বীপ মাজুলি৷ শ্ৰীমন্ত শংকরদেবের স্মৃতি বিজড়িত এই মাজুলি সত্ৰীয় সংহতির পীঠস্থান হিসেবে বিশ্ব দরবারে পরিচিত৷ অসমের বিহু নৃত্যও বিশ্বে আজও সমানে সমাদৃত৷ অসমের এক শৃংগ গণ্ডার রাজ্যকে বিশ্বের কাছে পরিচয় করে দিয়েছে৷ মিশরের পিরামিড দেখতে মানুষ ছুটে যায়, কিন্তু অসমে শিবসাগর জেলার চরাইদেউয়ের পিরামিড স্বরূপ মাটির স্তূপ দেখার জন্য বিশ্বের পৰ্যটকরা যান না, জানেনও না৷ আহোম রাজত্বের রাজা মহারাজাদের সমাহিত করা হত সেই সব স্তূপের মধ্যে৷ সেই মাটি খুঁড়ে আজও রাজা-মহারাজাদের সোনালী ইতিাহাস, তাদের ব্যবহৃত স্বৰ্ণালংকার, আসবাবপত্ৰ, পোষাক-পরিছদ ও কঙ্কাল পাওয়া যাছে যা বৰ্তমানে জিও’লজিক্যাল সাৰ্ভে অফ ইণ্ডিয়ার তত্ত্বাবধানে সংরক্ষিত হয়ে আছে৷ দাৰ্জিলিঙের টয়ট্ৰেন চড়তে মানুষ ছুটে যান৷ কিন্তু লামডিং-শিলচরের পাহাড় লাইনের অনিন্দ সুন্দর প্ৰাকৃতিক সৌন্দৰ্যে্যর যে হাতছানি তাকে কেউ অগ্ৰাহ্য করতে পারবে না৷ কেবল মাত্ৰ সরকারের অবহেলা-অনাদরে পাহাড় লাইনে কোনও পরিকাঠামো নেই৷ উত্তর-পূৰ্ব সীমান্ত রেলওয়ে জাটিংগা-হাফলং-মাহুর মিটারগেজ লাইনের প্ৰায় একশো কিলোমিটার পরিত্যাগ করে ব্ৰডগেজ লাইন নিৰ্মাণ করায় পাহাড়ের সৌন্দৰ্য্য পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে৷ শত বছরের প্ৰাচীন ৩৭ ট্যানেলের মধ্যে ১০ টি ট্যানেল বাদ দিয়ে ব্ৰডগেজ নিৰ্মাণ করা হয়েছে৷ পরিত্যক্ত প্ৰায় একশো কিলোমিটার মিটারগেজ লাইনে দাৰ্জিলিঙের মতো টয়ট্ৰেন চালিয়ে সরকার রাজস্ব বৃদ্ধি করতে পারতো৷ অসমের ভূগৰ্ভে কয়লা, গ্যাস, তেল প্ৰভৃতির অফুরন্ত ভাণ্ডার৷ উজান অসমে ভূগৰ্ভস্থ গ্যাস ২৪ ঘটা অবিরতভাবে পুড়েই চলেছে৷ সেই বহু মূল্যবান গ্যাস ব্যবহারের কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি৷ মাৰ্ঘেরিটার ওপেন কাষ্ট কয়লার অফুরন্ত ভাণ্ডার৷ সেই কয়লায় সালফার থাকা সত্বেও বিদ্যুৎ প্ৰকপ্লে ব্যবহার করা যাছে না৷ সামান্য প্ৰযুক্তি ব্যবহার করে সেই সালফার বিযুক্ত করা যেতে পারতো৷ বঙ্গাইগাঁওয়ের বৃহৎ আয়তনের তাপ বিদ্যুৎ প্ৰকপ্লের কয়লা বাইরের রাজ্য থেকে আমদানি করা হছে৷ চিন-তিববত, হিমালয়ের উৎস থেকে ২৯০৬ কিলোমিটার ব্ৰহ্মপুত্ৰ নদ প্ৰবাহিত হয়েছে যা অসমের জাতীয় জীবনের অবিছেদ্য অংগ৷ চীনের ধ্বংসাত্মক ‘হুয়াংহো’ নদী নিয়ন্ত্ৰণ করে চীন সরকার অৰ্থনীতিকে স্বচছল করে তুলেছে৷ অপরদিকে অসমে প্ৰতি বছর ব্ৰহ্মপুত্ৰের ভয়াবহ বন্যায় রাজ্যের অৰ্থনীতিকে ধ্বংস করে দিছে৷ এই প্ৰথম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সোণোয়াল নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ব্ৰহ্মপুত্ৰ খননের সিদ্ধান্ত হাতে নিয়েছে৷ যদি সত্যিই তা বাস্তবায়িত হয়, তবে রাজ্যের আৰ্থিক অবস্থার আমূল পরিবৰ্তন ঘটবে৷ রাজ্যে পিক আওয়ারে ১৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা৷ কিন্তু নিজস্ব উৎপাদন মাত্ৰ ৩০০ মেগাওয়াট৷ ব্ৰহ্মপুত্ৰের অঢেল জলরাশিকে সদ্ব্যবহার করা হলে অসমের বিদ্যুৎ চিত্ৰ আমূল পাটে যেত৷ রাজ্যের ৮০০ -রও বেশি চা বাগানে দেশের ৬০ শতাংশ চা উৎপাদন করে নানা সমস্যায় জৰ্জরিত চা বাগানগুলি৷ যথাযথভাবে সদ্ব্যবহার করা হলে রাজ্যের অৰ্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করা সম্ভব হতো৷ এ ছাড়াও অপার বনজ সম্পদ, ঔষধি গাছ-গাছড়া, বিভিন্ন প্ৰজাতির অৰ্কিড, প্ৰজাপতি, কাজিরঙার এক শৃংগ বিশিষ্ট গণ্ডার, সাদা ডানার বুনো হাঁস, ডিব্ৰু-সাইখোয়া অভয়ারণ্যের বুনো ঘোড়া, মানসের ব্যঘ্ৰ প্ৰকপ্ল, অফুরন্ত জৈব বৈচিত্ৰ, শুয়ালকুছির মুগা সিল্ক, ভূতলঙ্কা, সৰ্থেবারির কাঁসা শিল্প প্ৰভৃতি অসমকে নতুন মাত্ৰা দিয়েছে৷ বিশ্ববাজারে বিপণন করা হলে অসম আৰ্থিকভাবে স্বচ্ছলতা লাভে সক্ষম হতো৷ অসম সরকার ১০ কোটি বৃক্ষ রোপণের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে৷ কিন্তু বৃক্ষ রোপণ হলেও তা সংরক্ষণের বড় অভাব৷ আমারই লেখা ‘বনে বনান্তরে’ শীৰ্ষক গ্ৰন্থে দেশের অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্ৰামী বিপ্লবী পান্নালাল দাসগুপ্ত গত ২০১৫ সালের ২৪শে মে’তে তাঁর ‘ভূমিকা’য় লিখে গেছেন ‘‘আমাদের অন্যতম শ্ৰেষ্ঠ প্ৰাকৃতিক সম্পদ ছিল তার বন সম্পদ৷ মানুষের লোভে সেই বন সম্পদকে বেপেরোয়াভাবে উজাড় করে ফেলছে৷ ভবিষ্যৎ প্ৰজন্মকে এর জন্য কি মূল্য দিতে হবে, সে কথা এখন কেউ চিন্তাও করেনা৷ বনসম্পদ ধ্বংস করার অন্যতম কুফল হলো বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যাওয়া এবং ভূমিক্ষয়৷ গত কয়েক বছর ধরে আমি আসামের সরকারী-বেসরকারী নেতাদের বনজ সম্পদ ধ্বংসের ভয়াবহ পরিণাম সম্পৰ্কে বলে আসছি৷ আকাশ থেকে বীজ ছিটিয়ে (এরিয়্যাল সিডলিংস) বন সৃজন করার প্ৰস্তাব আমি দিয়ে ছিলাম৷’’ আমার পরিবেশ প্ৰকৃতি বিষয়ক দ্বিতীয় গ্ৰন্থ ‘অসমের রবীন আঙ্কল’ বা প্ৰকৃতি প্ৰেমীওরফে রবীন ব্যানাৰ্জীর এক দীৰ্ঘ সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম৷ পিপল ফর আ্যনিমেলস -এর কৰ্ণধার সংগীতা গোস্বামী তার ভিডিওগ্ৰাফি করেছিলেন৷ সেই দীৰ্ঘ সাক্ষাৎকারে রবীন ব্যানাৰ্জী বলে গেছেন ‘‘কাজিরঙাকে আর বেশিদিন বাঁচিয়ে রাখা যাবেনা৷ মানুষের লাগাম ছাড়া লোভের বলি হতে হবে কাজিরঙাকে৷’’ এই প্ৰকৃতি প্ৰেমী ব্যানাৰ্জী ৬০ দশকে কাজিরঙার এক শৃংগ বিশিষ্ট গণ্ডারের ছবি বাৰ্লিন টেলিভিশনে দেখিয়ে বিশ্ববাসীকে চমকে দিয়েছিলেন৷ তার পরই কাজিরঙাকে রাষ্ট্ৰীয় উদ্যান হিসেবে স্বীকৃতি জানানো হয়৷ ২৬৩ কিলোমিটার অসম-বাংলাদেশ সীমান্তের ৬১ কিলোমিটারে জল ও স্থল সীমান্ত আজও উন্মুক্ত যা আজও সিল করা হলো না৷ আজও বাংলাদেশি ইস্যু ছাড়া রাজ্যের রাজনীতিকদের রাজনীতি হয় না৷ অসমের থেকে চারগুণ বেশি ৮৫৬ কিলোমিটারের সীমান্ত রাজ্য ত্ৰিপুরার মুখ্যমন্ত্ৰী মানিক সরকারকে এই প্ৰতিবেদক জিজ্ঞেস করেছিলেন আপনাদের কোনও বাংলাদেশি সমস্যা আছে কি না? জবাবে মানিক বাবু বলেছিলেন ‘বাংলাদেশী সমস্যা একমাত্ৰ অসমেই আছে৷ দেশের অন্য কোনও রাজ্যেই নেই৷ প্ৰতিবেশী রাষ্ট্ৰ বাংলাদেশ থেকে বাংলাদেশিরা ত্ৰিপুরায় আসে, দিনভোর পরিশ্ৰম করে, আবার ফিরে যায়৷ আমাদের অৰ্থনীতি চাঙ্গা হয়৷ এতে আমরা লাভবান হই৷’ 

অসমে বরাক-ব্ৰহ্মপুত্ৰ উপত্যকার মধ্যে নানা টানা পোড়েন চলছে৷ একাংশ জাতীয়তাবাদী শক্তি নানাভাবে উস্কানিমূলক কাণ্ড-কৰ্ম করে সাম্প্ৰদায়িক সম্প্ৰীতিকে বিষিয়ে তুলছে৷ আজও লাওখোয়া, নেলী প্ৰভৃতি জায়গার মতো বিশ্ব কাঁপানো হত্যাকাণ্ড অনেকের স্মৃতিপটে অম্লান হয়ে আছে৷ তারপরেও জাতীয়তাবাদী চক্র, অশুভ দেশবিরোধী শক্তিকে সঙ্গী করে অস্ত্ৰের ঝন-ঝনানি শুনাছে৷ তাই আজান ফকির, শংকরদেবের সম্প্ৰীতির রাজ্যে আজও সংখ্যালঘু মানুষেরা অজানা-আশংকায় আতংকিত৷

অসমের এত অফুরন্ত সম্পদ থাকা সত্বেও তা সঠিকভাবে ব্যবহৃত হছে না৷ আমরা আত্মকেন্দ্ৰিক স্বাৰ্থপর মানুষেরা আজও সাম্প্ৰদায়িক-সম্প্ৰীতি, ভাতৃত্ববোধে উদ্বুব্ধ হয়ে রাজ্যকে উচ্চাসনে পৌঁছে দিতে পারছি না৷ অবশেষে আগামী শারদীয় উৎসবে  হিন্দু-মুসলিমসহ বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর পারস্পরিক ভাতৃত্ববোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে রাজ্যের সমৃদ্ধিতে আত্মনিয়োগ করুকএই আশা নিয়ে সবাইকে শারদীয়া-দীপাবলীর শুভেছা জানালাম৷

নয়া ঠাহর - ২০১৭র সম্পাদকীয়

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.