Header Ads

প্রাক নির্বাচন পর্যালোচনা শাণিত পুর

প্রাক নির্বাচনি পর্যালোচনা 
            ১১ নং শোণিতপুর লোকসভা সমষ্টি, আসাম।
                    বিজয় চক্রবর্তী। hojai




     প্রতিবেদন নং-৫ 
এই লোকসভা সমষ্টির ভোট গ্রহণ প্রথম দফায় অর্থাৎ ১৯ সে এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। ভাষাগত, জাতিগত, ধর্মগত জন বিন্যাসের এই সমষ্টিতে কোনও ভাষাভাষী , কোনও জাতী গুষ্টি একক ভাবে সংখা গরিষ্ঠ নয়। ধর্মের ভিত্তিতে হিন্দু সম্প্রদায় সংখ্যা গরিষ্ঠ। হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় সকল জন গুষ্টির ভোটার এই সমষ্টির স্থায়ী বাসিন্দা। অসমীয়া, বাঙালি, চা শ্রমিক সম্প্রদায়, বড়ো, নেপালী, হিন্দি, দক্ষিণী ( তেলেগু আদি) সাঁওতালি  লোকের মিলন ভূমি এই সমষ্টির হিন্দু, মুসলীম, খ্রিষ্টান, বুদ্ধ মিলেমিশে একাকার। মহাভারতে বর্নিত বান রাজার রাজধানী এই কেন্দ্রের তেজপুর পৌর নিগমের সন্নিকটে আসামের জীবন রেখা ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে পাহাড়ে অবস্থিত ছিল। দ্বারাকা রাজ শ্রীকৃষ্ণ এখন থেকেই বান রাজকুমারী উসাকে হরন করে দ্বারকায় নিয়েগিয়ে ছিলেন। বিষ্ণু রাভা, ভূপেন হাজারিকার স্মৃতি বিজরিত শহর তেজপুর। ইংরেজ আমলে বাঙালিরা এই শহরে একক ভাবে বৃহত জন সংখার সম্প্রদায় ছিল। স্বাধীনোত্তর কালে উগ্র অসমীয়া জাতীয়তাবাদ সৃষ্ঠ বাঙালি বিদ্বেষীর রোষানলের জন্য বহু বাঙালি শহরটি ছেড়ে চলে জান। লোকসভার প্রথম বাঙালি তথা কমিউনিস্ট অধ্যক্ষ (Speakar) সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় বাল্যকাল এই শহরে কাটিয়েছেন। প্রবাদ প্রতীম কমিউনিস্ট নেতা জ্যোতি বসুর দাদুও বহু বছর এই শহরে ছিলেন। শুনা যায় জ্যোতি বসুর আমলের পশ্চিম বঙ্গের পূর্ত মন্ত্রী ননী বাবুরাও এই শহরের বাসিন্দা ছিলেন। তেজপুরের মুখার্জি বাড়ির দুর্গাপূজা সার্ধশত বর্ষের গণ্ডি পেরিয়ে আজও পুরানো ঐতিহ্য বহন করে এগিয়ে যাচ্ছে। ইংরেজ আমলে চা শিল্প এবং ব্যবসা বাণিজ্যের জন্যই তেজপুরে বাঙালির বসতি গড়ে উঠেছিল। এই সমষ্টির ঢেকিয়াজুলি, রঙ্গাপাড়া, বিশ্বনাথ, ঠেলামারা, মঙ্গলদৈ শহরে অধিকাংশ বাসিন্দাই বাঙালি। বরছলা, বিহপুরিয়া, বেহালিতেও অনেকে বাঙালি আছেন। এই সমষ্টির ঢেকিয়াজুলী বিধান সভা কেন্দ্র থেকে ২০১১ সনে হাবুল চক্রবর্তী বিধায়ক হয়েছিলেন। বর্তমান বিধায়ক মারওয়ারি সম্প্রদায়ের বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী অশোক সিংহল।  নেপালি সম্প্রদায়ের প্রায়াত নেতা মনিকুমার ছুব্বা তেজপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে বহুবার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। বরছলা বিধান সভা কেন্দ্র থেকে ২০০১  সন থেকে ক্রমান্বয়ে এখন পর্যন্ত নেপালি সম্প্রদায়ের লোক বিধায়ক হচ্ছেন। পূর্বের বিধায়ক কংগ্রেস নেতা টঙ্ক বাহাদুর রাই। বৰ্তমানের বিধায়ক বিজেপি নেতা গনেশ লিম্বু। জন বিন্যাসে কেন্দ্রটি ভারত বর্ষের ক্ষুদ্র সংস্করণ।
             এই কেন্দ্রে মূল লড়াই বিজেপির প্রাক্তন রাজ্যিক সভাপতি, আসামের প্রাক্তন মন্ত্রী রঞ্জিত দত্ত ও কংগ্রেসের চা শ্রমিক নেতা প্রেমলাল গুঞ্জুর মধ্যে। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যিক সভাপতি , আসামের প্রাক্তন মন্ত্রী , মাননীয় রিপুণ বরার গৃহ সমষ্টি হওয়া সত্বেও এখানে তৃণমুল কংগ্রেসের কোনও প্রার্থী নেই, আছে APP এর প্রার্থী - ঋষি রাজ  কুণ্ডিল্য । তাঁর হয়ে ইতিমধ্যেই পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মান নির্বাচনি প্রচার সেরে গেছেন। তিনি কার ভোট কাটেন বলা মুস্কিল।
১৬ লক্ষাধিক ভোটারের মধ্যে ২ লক্ষধিক মুসলীম ভোট। প্রায় ১৩ লাখ হিন্দু ভোট। হিন্দু ভোটের ৭০% কাষ্ট হলে ৯ লাখের উপর কাষ্ট হবে। সাধারণত মুসলমান ভোট ৯০% কাষ্ট হয়। কাষ্ট ভোটের ৯০% কংগ্রেস পেলে কংগ্রেসের ঝুলিতে যাবে এক লাখ সত্তর হাজার। অন্যান্য সমষ্টির মতো এবং একই কারনে এখানেও কাষ্ট হিন্দু ভোটের ন্যুনতম ৭০% বিজেপির ঝুলিতে যদি যায় তাহলে বিজেপি পেতে পারে হিন্দু ভোটের ন্যুনতম ৭ লক্ষ ভোট। অন্যান্য ভোট ও কিছু পাবার সম্ভাবনা আছে।নির্বাচনী বাতাস এই সমষ্টিতে বিজেপির দিকে এখনো বইছে।১৯ এপ্রিল আব্দি বাতাসের গতিপথ পরিবর্তন না হলে বিজেপি জয়ী হবে। সময়ই বলবে জনগণ কার কপালে বিজয় টিকা অংকন করেন।
           সময় অভাবে অন্য প্রতিবেদনের মত তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে পরলাম না।
                                                 ইতি
                                               প্রতিবেদক
                                              বিজয় চক্রবর্তী।
                                                     হোজাই।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.