দিল্লী তে বাংলা সংস্কৃতি বিকাশের লক্ষে সিনেমা
নয়া ঠাহর প্রতিনিধি : নয়াদিল্লি : বাংলা সংস্কৃতিকে প্রবাসে প্রচার এবং প্রসারের অঙ্গীকারে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হল ৩ দিনব্যাপী ইন্দোবাংলা চলচ্চিত্র উৎসব। দিল্লির সিরিফোর্ড অডিটোরিয়ামে পার্পেল টাচ ক্রিয়েটিভ সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত পঞ্চম ইন্দোবাংলা চলচ্চিত্র উৎসবে ৯ টি ভিন্ন স্বাদের ও ভাবনার চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। পার্পেল টাচ ক্রিয়েটিভের প্রধান আশিষ রঞ্জন দাস বাংলার সুপরিচিত বাদ্য ঢাক বাজিয়ে চলচ্চিত্র উৎসবের মুখ্য প্রবেশদ্বার দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেন।প্রথিতযশা অভিনেত্রী রুপা গাঙ্গুলী চারা গাছে জল সিঞ্চন করে সূচনা করেন চলচ্চিত্র উৎসবের। শুরুতে
লোকশিল্পী ইলা মা এবং তাঁর সুযোগ্যা কন্যা আয়ুষী গেয়ে শোনান মঙ্গলস্তোত্র। তনুশ্রী বিশ্বাস ও তাঁর নৃত্য গোষ্ঠী পরিবেশন করেন নৃত্য।
ভিন্ন স্বাদের চলচ্চিত্র ছাড়াও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্না অভিনেত্রী নৃত্য জগতের কিংবদন্তি মমতা শংকরকে আজীবন সুকৃতি - সম্মানে সম্মানিত করা হয়। সন্মান গ্রহন করে আবেগ আপ্লুত মমতা শংকর
এমন অভিনব উদ্যোগ ও অসাধারণ আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি ও সুদেষ্ণা ভট্টাচার্য, চলচ্চিত্র নির্দেশক শিবপ্রসাদ মুখার্জী, অভিজিৎ শ্রীদাস ও তথাগত ভট্টাচার্য, লেখিকা জিনিয়া সেন, প্রযোজক সুজিত রাহা ও সুভেন দাস প্রমুখও উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র উৎসবে। কৌশিক গাঙ্গুলী পরিচালিত 'অর্ধাঙ্গিনী' - চলচ্চিত্রের মধ্যে দিয়ে সূচনা হয় চলচ্চিত্র উৎসবের। প্রেম- ভালোবাসার সম্পর্কের টানা পোড়েনের গল্পের চিত্রনাট্যের এই ছায়াছবি প্রদর্শনের সময়ে হলে ছিলেন অভিনেতা আম্বারেশ ভট্টাচার্য। ছবির প্রদর্শন শেষে আম্বরেশ বাবু দর্শকের নানাবিধ প্রশ্নের উত্তর দেন এবং গান শুনিয়ে উৎসবের আমেজ অন্য মাত্রায় পৌঁছে দেন।দুর্গা পুজার পটভূমিতে পারিবারিক বন্ধন ও জীবন বোধ কে গভীরভাবে তুলে ধরে মমতাশঙ্কর অভিনীত, অভিজিৎ দাস পরিচালিত বিজয়া ছায়াছবি, বিশিষ্ট পরিচালক মৃণাল সেনের জন্মশতবার্ষিকীতে কৌশিক গাঙ্গুলী পরিচালিত, সুভেন দাস প্রযোজিত ছায়াছবি - পালান,বাংলাদেশের অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত, উপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে অনম বিশ্বাস পরিচালিত অতিপ্রাকৃত থ্রিলার চলচ্চিত্র - দেবী, বিশ্বখ্যাত পরিচালক গৌতম ঘোষের পরিচালিত ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনার ছবি 'পদ্মা নদীর মাঝি'ও প্রদর্শিত হয় উৎসবে। ২০২২ সালের অসমীয়া ভাষায় রিমা দাস রচিত, পরিচালিত ও সম্পাদিত এবং প্রযোজিত চলচ্চিত্র তোরা' স হ্যাজবেন্ড ' ও প্রশান্ত সাইকিয়ার - গুয়াহাটির ডায়েরি, শিবপ্রসাদ মুখার্জি রচিত ও পরিচালিত ভিন্ন স্বাদের চলচ্চিত্র 'রক্তবীজ' ও
তথাগত ভট্টাচার্য পরিচালিত পারিবারিক বিষয়ক চলচ্চিত্র আকরিক - প্রদর্শিত হয়।প্রভাস কল্যাণী প্রীতি ট্রাস্টের সহযোগিতায় আয়োজিত চলচ্চিত্র উৎসবে আয়োজন প্রসঙ্গে আয়োজক আশীষ রঞ্জন দাস জানান, এই উৎসবের উদ্দেশ্য হল চলচ্চিত্র এবং কথোপকথনের মাধ্যমে চলচ্চিত্র পরিচালক, শিল্পী, লেখক, সাংবাদিকদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা। কেবলমাত্র কিছু ভালো চলচ্চিত্র দেখানো নয়, তার সঙ্গে ভালো পরিচালক, অভিনেতা অভিনেত্রীদেরকেও উৎসাহিত করা। ঋতব্রত ভট্টাচার্যের মনোমুগ্ধকর সঞ্চালনাও দাগ কেটেছে দর্শকদের মনে। ডঃ অমিতাভ মুখার্জি,ইলা মা, সুব্রত দাস, সিদ্ধার্থ ভাদুড়ী, নবনীতা চ্যাটার্জী, প্রবাল বসু, শান্তনীল দাশগুপ্ত,ডঃ মৌসুমী দাশগুপ্ত, তৃণা ভট্টাচার্য, সুজাতা মুখার্জি এবং ডঃ সুপ্রিয়া শিকারি,চঞ্চল ভট্টাচার্য, বাসব লাহিড়ী,
উষ্নি দাশগুপ্ত ও শুভ্রাংশ চক্রবর্তী প্রমুখদের সার্বিক সহযোগিতায় সাফল্যের সঙ্গে শেষ হয় ৩ দিনের চলচ্চিত্র উৎসব।
কোন মন্তব্য নেই