Header Ads

সফটওয়ার, ডাটা এন্ট্রিতে গরমিল ঘটিয়ে মোটা অংকের বিনিময়ে লক্ষ লক্ষ অবৈধ নাগরিকের নাম নাগরিকপঞ্জিতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে, কারও শাস্তি হবে না?

 

অমল গুপ্ত, গুয়াহাটি : অসমে লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশি আছে অসমের অস্তিত্ব বিপিন্ন করে তুলেছে অভিযোগের প্রেক্ষিতে আসু ও অন্যান্য সংগঠনের দাবি মেনে কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ নাগরিকপঞ্জি রূপায়ণের সূত্রপাত করেছিলেনপরে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এসে নাগরিকপঞ্জি রূপায়ণের কাজ শুরু করে। রাজ্যের কোটি ২৯ লক্ষ ৯১ হাজার ৩৮৪ জন আবেদন করেন। প্রথমে ৪০ লক্ষ হাজার ৭০৭ জনকে নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ দেওয়া হয়। পরে ২৫ হাজার সেবা কেন্দ্রে শুনানির সময় অধিকাংশের নাম অন্তভুক্ত হয়দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশ পায় ১৯ লক্ষ হাজার ৬৫৭ জনের নাম বাদ পড়ে। কিসের ভিত্তিতে নাম বাদ পড়লো, কেনই বা বাদ পড়াদের নাম অর্ন্তভুক্ত হল তার কোনো জবাব প্রাক্তন নাগরিকপঞ্জি সমন্বয়ক প্রতীক হাজেলার কাছে ছিল না তিনি একাংশ ছাত্র সংগঠন, একাংশ অফিসারের হাতের পুতুল হয়ে ছিলেন ফিল্ডের খবর তিনি রাখতেন না। প্রায় ৫০ হাজার সরকারি কর্মচারি, আর ১৬০০ কোটি টাকা ব্যয় করে এই মহাযজ্ঞের প্রসাদ ভোগ করেছিলেন ঘন ঘন বিদেশ সফর করা, সফটওয়ারের চাবি কাঠি লুকিয়ে রেখে নাগরিকত্বের প্রমাণ ছাড়াই সফটওয়ার, ডাটা এন্ট্রি করা কর্মচারীরা কাজ করে গেছেন অধিকাংশ চুক্তি ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়েছিল সময় মত পারিশ্রমিক দেওয়া হয়নি। এন আর সি কর্তৃপক্ষ জেলার অফিসার, কর্মচারীদের দিয়ে কাজ করিয়েছিলেন। অসাধু একাংশ কর্মচারী নাগরিকপঞ্জিতে নাম তুলতে মোটা অংকের লেন দেন করেছিলেন বলে ভুঁড়িভুঁড়ি অভিযোগ কি প্রতীক হাজেলার কানে যায় নি? তিনি মুখ বন্ধ করে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়ালকে পর্যন্ত পাত্তা দেননি। তার অভিভাবক ছিলেন প্রাক্তন মুখ্য বিচারপতি রঞ্জন গগৈ আর সুপ্রিমকোর্ট। সেখানে তিনি ভুল ও মনগড়া তথ্য দিতেন তিনি কোনো কোনো বিশেষ চক্রকে খুশি করতে কাজ করতেন বলে নানা অভিযোগ এসে ছিল তিনি যে কত বড় অপরাধ করেছেন তা প্রমাণিত হয়েছে বর্তমান সমন্বয়ক হিতেশ দেব শর্মার আদালতে দাখিল করা হলফনামায় ভয়ঙ্কর সব তথ্য উঠে এসেছে। শতাধিক পৃষ্ঠার হলফনামা না বলে অভিযোগনামা বলা যেতে পারে, এই দায়িত্বে বসার আগেই দেবশর্মা সোশ্যাল মিডিয়াতে ঝড় তোলেন তিনি অভিযোগ করেন নাগরিকপঞ্জিতে লক্ষ লক্ষ অবৈধ বাংলাদেশীর নাম ঢুকেছে এর জন্যে তিনি কয়েকটি সংগঠনের দিকে আঙুল তোলেন। বাংলাদেশীতে ভরা এক তালিকা প্রকাশের পর ও কেন ছাত্র সংগঠনের নেতারা মিষ্টি খেয়ে ছিলেন, সেই প্রশ্নও তুলেছিলেন। আজ তিনিই মুখ্য সমন্বয়ক তাই তিনি তালিকা নিয়ে আসল অসুখ ধরে ফেলেছেন। তিনি লিখিতভাবে বলেছেন সফটওয়ার, ডাটা এন্ট্রি, প্রক্রিয়াগত ত্রুটির জন্যে লক্ষ লক্ষ অবৈধ নাম অর্ন্তভুক্ত হয়েছে। এরপরও রেজিস্টার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া, নাগরিকপঞ্জির তালিকা অনুমোদন করেননি, বাতিলও করেননি। লক্ষ লক্ষ ভুলের সংশোধনের আদেশও দেননি।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারিতে দেব শর্মা এই সব ভয়ঙ্কর ত্রুটি বিচ্যুতি লিখিতভাবে আর জি আই-কে জানিয়েছিলেন। ব্যাপক সংশোধনের আর্জি জানিয়েছিলেন। নাগরিকপঞ্জি চূড়ান্তভাবে প্রকাশ পাওয়ার পর রেজিস্টার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া আজ পর্যন্ত সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করেননি। আইন অনুযায়ী তা না করা হলে এন আর সি তালিকা বৈধ হবে না। অবৈধ তালিকা অথচ নাগরিকপঞ্জি ছুট ১৯ লক্ষের জন্যে রিজেকসন স্লিপ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। আর কত প্রহসন হবে? রাজ্যের হিন্দু মুসলিম সংখ্যালঘু মানুষগুলোকে গিনিপিক সাজিয়ে কত পরীক্ষা হবে? এ পি ডব্লিউ প্রধান অভিজিৎ শর্মা অভিযোগ করেছেন ৫ থেকে ১০ হাজার নয় কম করে ৮০ লক্ষ বাংলাদেশির নাম তালিকাতে অর্ন্তভুক্ত হয়েছে। অসম সরকারও খুশি নয়। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল ডিব্রুগড়ে স্পষ্টভাবে বলেছেন ভুলে ভরা নাগরিকপঞ্জি তারা মানবে না আদালতকে সেকথা জানিয়েছি, তাদের বিদেশি মুক্ত নির্ভুল তালিকা লাগবে। তবে কি ১৬০০ কোটি টাকা, আর ৫০ হাজার সরকারি কর্মচারীর পরিশ্রম জলে গেল? প্রাক্তন সমন্বয়ক প্রতীক হাজেলাকে কেন শাস্তি না দিয়ে নিজের রাজ্য মধ্যে প্রদেশে বিনা বাধায় যেতে দেওয়া হল কেন? এর জন্য কে দায়ী, তার শাস্তি কে দেবে?


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.