ডিমা হাসাও জেলা প্রশাসনের নির্লিপ্ততা, কোভিডে মৃত্যু হওয়া হাফলঙের বলবাহাদুরের শেষ কৃত্য লঙ্কায়!
বি দেব চৌধুরী, হাফলং : কোভিডে মৃত্যু কতটা মর্মান্তিক তা শনিবার ফের প্রমাণিত হয়।
অথচ ডিমা হাসাও জেলার মোট মাটি কালি ৪৮৯০ বর্গ কিলোমিটার। কিন্তু কোভিডে মৃত্যু
হওয়া ব্যক্তিদের দাহ বা সমাধিস্থ করার জন্য সামান্য দুই বিঘা জমি নেই। অভিযোগ মতে
ডিমা হাসাও জেলা প্রশাসনের ব্যর্থতা এবং উদাসীনতার জন্য মৃত্যুর চৌদ্দ ঘন্টা
পর্যন্ত মৃতদেহ মর্গে পড়ে থাকতে হয়।শনিবার দিনের প্রায় দু'টা নাগাদ হাফলং কোভিড কেয়ার সেন্টারে বলবাহাদুর থাপা (৭৫)র মৃত্যু হয়। কিন্তু
অন্তিম সৎকারের কোনো ডেজিগনেটেড জমি না থাকায় মৃতের পরিবারকে বিপাকে পড়তে হয়।
এমনকি রাতে হাফলং কোভিড কেয়ার সেন্টার প্রাঙ্গণে মৃতের সৎকার নিয়ে উত্তপ্ত
পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অবশ্য এরপর ডিমা হাসাও জেলা প্রশাসন হোজাই জেলা প্রশাসনের
সঙ্গে আলোচনা করে লঙ্কাতে অন্তিম সৎকারের সিদ্ধান্ত হয়।
কোভিড-১৯ নিয়ে সেই মার্চ মাস থেকে সরকার সজাগ
রয়েছে। তাই দেশজুড়ে ২৪ মার্চ থেকে লকডাউন হয়। অনুরূপ ভাবে জেলা প্রশাসনকেও সজাগ
থাকতে বলা হয়। এতে কোভিড ইস্যুতে ঘন ঘন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ডিমা হাসাও জেলায়ও
প্রশাসন কোভিড ইস্যুতে বেশ সজাগ থাকা পরিলক্ষিত হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে প্রশাসনের
ভূমিকা কি ছিল তা কোভিডে মৃত্যু হওয়া ব্যক্তির মৃত্যু হওয়ার পর তাঁর
নিকটাত্মীয়রা হাড়ে হাড়ে টের পান।
কোভিড প্রটোকল মতে করোনা ভাইরাসে মৃত্যু হওয়া
ব্যক্তিদের শেষকৃত্য সরকারী ডেজিগনেটেড জমিতে হবে। অবশ্য ডিমা হাসাও জেলা প্রশাসন
জাটিঙ্গা পরিষদীয় সমষ্টির রেটজলের কাছে সড়কের পাশে এক জমি মৃত ব্যক্তিদের দাহ বা
সমাধিস্থ করার জন্য শনাক্ত করেন। কাগজে কলমে ওই জমি পার্বত্য পরিষদের তরফে
প্রশাসনকে তুলে দেওয়া হলেও গত ৫ সেপ্টেম্বর মাইবাঙের ঝন্টু চক্ৰবৰ্তীর কোভিডে
মৃত্যু হওয়ার পর মৃতদেহ সৎকারের জন্য সেখানে নিয়ে যাওয়া হলে গ্রামবাসীরা আপত্তি
করেন। এতে প্রশাসন মৃতদেহ ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয়।
পরবর্তী সময়ে পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের
সহযোগে মাইবাঙে দাহ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ একমাসে ডিমা হাসাও জেলা প্রশাসন বিকল্প
জমি জোগাড়ে সক্ষম হয় নি। যার দরুন হাফলঙের অবসরপ্রাপ্ত এসিএস আধিকারিক থানন
গার্লোসার মৃত্যু হলেও একই সমস্যা দেখা দেয়।
তবে এবার বলবাহাদুর থাপার কোভিডে মৃত্যুর পরও
সেই অনুরূপ সমস্যার সৃষ্টি হয়। শহরের স্মশানে দাহ করতে আপত্তি জানানো হয়। অথচ
প্রশাসন পর পর তিন চারটি ঘটনার পরও সজাগ না হওয়ায় সচেতন মহলে মিশ্র
প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এদিকে গতকাল বলবাহাদুরের মৃত্যুর জেলাশাসক পল বরুয়া
অন্তিম সৎকার নিয়ে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করেন যদিও ব্যর্থ হয়ে ফিরতে হয়। এ ঘটনায়
পার্বত্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ব্যক্ত করেন জেলার সচেতন জনগণ।।
কোন মন্তব্য নেই