আমার কোনো জাত-পাত ছিল না, সবাইকে নিয়ে আন্দোলন করেছি : প্রদীপ দত্ত রায়
শিলচর : আমার কোনো জাত-পাত ছিল না, সবাইকে নিয়ে আন্দোলন করেছি বলে অভিযোগ করে প্রদীপ দত্ত রায় এক বিবৃতিতে বলেন, মুলচান্দ বৈদ
নামে এক অবাঙালী ব্যবসায়ী যাকে মূলত বরাক উপত্যকার মানুষ শাসকদলের লেজুড় হিসেবে
চিনে ঐ ব্যক্তি আমাকে মাড়োয়ারি বিরোধী এবং সাম্প্রদায়িক বলে আখ্যায়িত করেছে ।
আমাকে সাম্প্রদায়িক আখ্যায়িত করার আগে আমার ইতিহাস উনার জানা উচিত ছিল। যদিও ওই
ব্যবসায়ী বঙ্গাইগাঁও থেকে কাছাড়ে আসার বেশিদিন হয়নি। তাই হয়তো আমার ইতিহাস উনি
জানেন না। আমি ১৯৮৩ থেকে ১৯৯৩ সন পর্যন্ত আকসার নেতৃত্বে সভাপতি হিসাবে ছাত্র
আন্দোলন করেছি । সেই আন্দোলন সফল হয়ে বরাক উপত্যকায় একটি কেন্দ্রীয়
বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন হয়েছিল। আমি যে আন্দোলন করেছিলাম সেই আন্দোলনে হিন্দু
মুসলিম মারামারি মণিপুরী ডিমাসা সবাইকে নিয়ে বরাক উপত্যকার ৩৫ লক্ষ মানুষের
আশীর্বাদে করেছিলাম। আমাদের যে সংগঠন অর্থাৎ আকসা ওই সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন
রাজু গুলগুলিয়া। সাধারণ সম্পাদক ছিলেন প্রমোদ শ্রীবাস্তব ।সহ-সভাপতি ছিলেন
হাইলাকান্দি কলেজের অধ্যাপক হিলাল উদ্দিন লস্কর। তারপরও মুলচান্দ আমাকে মাড়োয়ারি
বিরোধী আর সাম্প্রদায়িক বলছেন । ওই ব্যক্তি আমার সম্বন্ধে বলার আগে আমার খোঁজখবর
নেওয়া উচিত ছিল । শুধু বাঙালি নয় বরাক উপত্যকার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ
আকসার আন্দোলনকে মানসিক শারীরিক এবং আর্থিকভাবে সাহায্য করেছিলেন । কয়েকটি নাম
আমাকে উল্লেখ করতে হচ্ছে তারা হলেন অমরনাথ খান্ডেলওয়াল , মহাবীর জৈন , পবন মুন্ডরা, বুদমল বৈদ , হনুমান গুলগুলিয়া , রামু গুলগুলিয়া , এরা যেভাবে আকসার আন্দোলনে আমাকে সাহায্য
করেছিলেন তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ । তারা যদি আমাকে সহযোগিতা না করতেন তাহলে আকসার
আন্দোলনকে সফল করতে পারতাম না । তারপরও আমাকে বলা হচ্ছে আমি মারোয়াড়ী বিরোধী
সম্প্রদাযয়িক। আমি মাড়োয়ারি বিরোধী কি
না বা সাম্প্রদায়িক কি না তার জবাব বরাক উপত্যকার মানুষ দেবেন । ওই একজন অবাঙালী
ব্যবসায়ীর কথায় আমার কিছু যায় আসে না । ওই ব্যবসায়ী এও বলেছেন আমার এবং দৈনিক
প্রান্তজ্যোতি বিরুদ্ধে মামলা করবেন । অতীতের আসু , অসম জাতীয়তাবাদী ছাত্র পরিষদ , কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি আমার বিরুদ্ধে 50 টি মামলা করেছে । আমি সেগুলো দেখে নিয়েছি ।
মামলা কিভাবে সামাল দিতে হয় তা আমি জানি । তবে ওই ব্যবসায়ী কাছাড় চা শ্রমিক
ইউনিয়নের জায়গায় যেখানে চা শ্রমিকের ছেলেমেয়েরা শিলচর এসে পড়াশোনা করার জন্য
ছাত্রাবাস তৈরি হওয়ার কথা ছিল সেই জায়গায় ডিজিটাল সিনেমা হল এবং রেস্টুরেন্ট
বানিয়ে ব্যবসা করছে । এছাড়া তার কার্যকলাপ সংবাদ মাধ্যমে যেভাবে প্রকাশিত হচ্ছে
বরাক উপত্যকার মানুষ ইতিমধ্যে জেনে নিয়েছে ।
ওই ব্যবসায়ী আমার এবং দৈনিক প্রান্তজ্যোতি বিরুদ্ধে মামলা করবে । উল্টো ওর
বিরুদ্ধে আমরা পাঁচটা মামলা করব । ওর বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং সরকারি অর্থ আত্মসাতের
মামলা করব । তাকে ইতিমধ্যে মাড়োয়ারি সমাজ বর্জন করেছে । তার বিরুদ্ধে মুখ খোলার
জন্য বহু বিশিষ্ট মাড়োয়ারি আমাকে
টেলিফোনে ধন্যবাদ জানিয়েছেন । ওর সম্বন্ধে বেশি কিছু বলতে প্রয়োজন নেই কারণ ও সব
সময় শাসক দলের চামচা হয়ে থাকতে চায় । ওর সঙ্গে থাকা একজন বাঙালি ব্যবসায়ী আমার
সম্বন্ধে কথা বলেছেন তাও আমি জেনেছি ।তাই আমি বরাক উপত্যকায় জনগণের কাছে বিচার
করার জন্য ছেড়ে দিয়েছি । আমি মারোয়াড়ী বিরোধী কি না বা সাম্প্রদায়িক কি না।
(এটা সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব মতামত, এই লেখার
জন্য সম্পাদক কোনো ভাবেই দায়ী নয়।)
কোন মন্তব্য নেই