রাতের সব তারারা আছে দিনের আলোর গভীরেঃনন্দিনীতে মানস চৌধুরীর বক্তব্যে
অমল গুপ্ত, গুয়াহাটিঃ কবিগুরু রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর কোনোদিন জাতীয়তাবাদী ভাবধারায় বিশ্বাসী ছিলেন না। তিনি বিশ্বমানবতাবোধে আস্থা রেখেছিলেন, সেই লক্ষ পূরণে হিন্দু মুসলিম সহ সব জনগোষ্ঠীর ধর্ম ভাষা নির্বিশেষে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ রাখার জন্যে রাখি বন্ধনের সূচনা করেছিলেন। ১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবরে বিপিন চন্দ্র পাল, রামেন্দ্র সুন্দর ত্রিবেদী প্রমুখ এক বিবৃতিতে ওই দিনে সবাইকে সংযম রক্ষার ডাক দিয়ে দিনটি উপোস থেকে ঘরে ঘরে অরন্ধনের আহ্বান জানিয়ে হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে সবাইকে হলুদ রঙের রাখি পড়াবার ডাক দিয়ে রাখি বন্ধনের সূচনা করেছিলেন। আজ কবিগুরুর তিরোভাব দিবসে লামডিঙের মহিলাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নন্দিনীর ফেস বুক অনলাইন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মেঘালয়ের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী মানস চৌধুরী কবিগুরুর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে রবীন্দ্রনাথের বিশ্বমানবতাবোধের বিশালতা ,উদারতা নিয়ে আলোকপাত করেন। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু কংগ্রেস সভাপতি পদে সর্বসম্মতভাবে জয় লাভের পর মহাত্মা গান্ধী ভালোভাবে মেনে নেননি, তার সমালোচনা করেছিলেন, তখন এক মাত্র রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। গান্ধীর কঠোর সমালোচনা করে বলেছিলেন নির্বাচিত সভাপতিকে মেনে না নেওয়ার অর্থ ফ্যাসিবাদী মনোভাবের পরিচয়। রবীন্দ্রনাথ তার সৃষ্টি কর্মে বরাবর গ্রামকে ভালোবেসেছেন, দেশ গড়তে হবে গ্রাম থেকে , গান্ধীর ও একই মনোভাব ছিল। কবিগুরু কলকাতা ছেড়ে বীরভূম জেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলকে বেছে নিয়ে বিশ্ব ভারতী গড়ে তুললেন, সারা বিশ্বের মানুষ আজও শান্তিনিকেতনে অধ্যয়ন করতে আসেন।তিনি মনে প্রানে বিশ্ব মানবতাবাদে বিশ্বাস করতেন, বাস্তবেও সেই কাজ করতেন, তাই তিনি গান্ধীর চরকা কাটা নীতি মেনে নেননি। কবিগুরু বলেছিলেন চরকা ব্যাক্তি কেন্দ্রিক , দাসত্বের জন্ম দেবে । মেঘালয় এর বিশিষ্ট জন নেতা মানস চৌধুরী বক্তব্যের শুরুতে বলেন রবীন্দ্রনাথের মতো বিশাল ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে তার কিছুই জানা নেই, কিন্তু কবিগুরুর জীবনের নানা দিক নিয়ে আলোকপাত করলেন যা অনেকেরই অজানা। লামডিং এর নন্দিনীর কর্ণধার জয়শ্রী আচার্যের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এই বর্ণময় অনলাইন প্রোগ্রামে মানস চৌধুরী অনেক অকথিত কাহিনী বলার শেষে বলেন কবিগুরু তার অপূর্ব সৃষ্টি ২২৩০ টি গানের মধ্যে বেঁচে থাকবেন। শীত গ্রীষ্ম , সুখ দুঃখ সবসময়ের চির সবুজ রবীন্দ্র সঙ্গীত ছাড়া আমরা বাঁচতে পারবো না।তিনি আমাদের মধ্যে বেঁচে আছেন তাঁর সঙ্গীতের মাধ্যমে। রাতের সব তারাই আছে দিনের আলোর গভীরে ....।
কোন মন্তব্য নেই