Header Ads

নতুন দল গড়তে পারেন শুভেন্দু, বিজেপির জল্পনা তৈরিতে ভাঙন আশঙ্কা তৃণমূলে !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায়

বিজেপির আলোচনায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ভেঙে নতুন দল গড়তে পারেন। মুকুল রায়ের কাছে সম্প্রতি বিজেপির তরফে জানতে চাওয়া হয়েছিল শুভেন্দু অধিকারী নতুন দল গড়লে ভালো নাকি সরাসরি বিজেপিতে যোগ দিলে। বিশ্বস্ত সূত্রের এই খবরেই তৃণমূলে নতুন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এতদিন তৃণমূলের শতাধিক বিধায়কের দিকে নজর ছিল মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষের। এবার তারা শুভেন্দুর নতুন দল গড়ার জল্পনা সামনে এনে তৃণমূলের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিল। এতদিন মুকুল রায়কে নিয়ে জল্পনার পারদ চড়েছিল। মুকুল বিজেপিতে ‘সক্রিয়’ হয়ে এই মৃহূর্তে শুভেন্দুকে নিয়ে চিন্তায় ফেলে দিলেন তৃণমূলকে।
তৃণমূলের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর দূরত্ব তৈরি হয়েছে সম্প্রতি। তার জেরেই বিজেপির অন্দরে তৃণমূল ভেঙে নতুন দল নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আলোচনার গতিপ্রকৃতি এমনই যে শুভেন্দু অধিকারী
তৃণমূল ভেঙে বেরিয়ে এসে নতুন দল তৈরি করতে পারেন এই ধারণাই জোরালো হচ্ছে। আর তা যদি সত্যিই হয়, তবে রাজনৈতিক সমীকরণ আমূল বদলে যাবে বাংলার। এই সম্ভাবনার কথাটাই আমি গতকালই বিশ্লেষণ করেছি।
বাংলার রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা তৃণমূলে কোণঠাসা হয়ে শুভেন্দু অধিকারী নতুন দল গড়তে পারেন। মূলত তৃণমূল কংগ্রেস ভেঙে এই দল তৈরি হতে পারে। ২০২১-এর আগে আমূল বদলে যেতে পারে বাংলার রাজনৈতিক চিত্র ! শুভেন্দুর সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব তৈরি হওয়ায় এমন জল্পনা দানা বেঁধেছে। যদিও তৃণমূলে ভাঙনের প্রচার ছিল দীর্ঘদিন ধরেই।
উল্লেখ্য, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেস বিধায়ক আবদুল মান্নান বহু আগেই এমন এক আভাস দিয়ে চি্ঠি লিখেছিলেন সোনিয়া গান্ধীকে। তিনি জানিয়েছিলেন ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস ভেঙে নতুন দল বা মঞ্চ তৈরি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে সেই দল বা মঞ্চের মহাজোট হতে পারে। সেক্ষেত্রে তাদের প্রাসঙ্গিকতা বহুগুণ বাড়তে পারে।
তিনি সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখে আগাম অনুমতি চেয়েছিলেন, সেরকম কিছু হলে বিক্ষুব্ধ তৃণমূলীদের জন্য একটা পৃথক মঞ্চ তৈরি করে রাখা যেতে পারে। তাহলে তৃণমূল ছাড়াও অন্যান্য দলের নেতারাও আসতে পারবেন নিঃসঙ্কোচে। তৃণমূল নেতারাও কোনও দলে না গিয়ে ওই মঞ্চে যোগ দিতে পারে। এবং সেই মঞ্চের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতাও হতে পারে।
মান্নানের সেই চিঠি বা সোনিয়ার দেওয়া বার্তা যে মনগড়া নয়, তার একটা নমুনা দেখা যাচ্ছে সম্প্রতি। শুভেন্দু অধিকারী এভাবে দূরে সরে যাওয়ায় তাঁর বিজেপিতে যোগ নিয়ে নানা জল্পনা চলতে থাকা তৃণমূলে ফাটলের ইঙ্গিতই করে। এছাড়া তৃণমূলে অনেক নেতা আছেন, যাঁরা কংগ্রেস, সিপিএম বা বিজেপিতে যেতে চান না।
কিন্তু তাঁরা তৃণমূলের প্রতিও বিরক্ত। তাঁদের নিয়েই বাড়ছে জল্পনার পারদ। এ কথা আমি বেশ কিছুদিন আগে থেকেই বলে আসছি।
এখন আবার বিজেপি তাদের বর্ষীয়ান নেতা মুকুল রায়ের কাছে জানতে চেয়েছিল--শুভেন্দু অধিকারী যদি নতুন দল গড়েন, তাতে বিজেপির সুবিধা হবে না অসুবিধা হবে? এই বিষয়ে আলোচনায় মুকুল রায় বিজেপিকে এমনই বার্তা দিয়েছেন যে, শুভেন্দু নতুন দল গড়লে বিজেপির ক্ষতি। কেননা তখন বিজেপি ভেঙে অনেকেই (এমন কী মুকুল নিজেও দলবল সহ যেতে পারেন, যদিও এটা তিনি এখন বলেন নি) শুভেন্দুর দলে যেতে পারে।
মুকুল রায় এ প্রসঙ্গে বিজেপিকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, শুভেন্দু যদি তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়ে, তবে তাঁকে বিজেপিতে টানতে পারলেই মঙ্গল হবে। অন্যথায় লড়াই কঠিন হবে। তাঁর যুক্তি, শুভেন্দু যদি বিজেপিতে যোগ দেন, তবে তাঁর অনুগামীরাও বিজেপিতে আসবেন। বিজেপির শক্তি বাড়বে অনেক বেশি।
কিন্তু আমার দৃঢ় ধারণা শুভেন্দু বিজেপি’র মতো একটা বিরাট হরি ঘোষের গোয়ালে হারিয়ে যাওয়ার জন্যে নাম লেখাবেন না। শুভেন্দু নতুন দল বা মঞ্চ গড়লে সেখানে বিজেপি বা অন্য দল থেকেও যথেষ্ট ভিড় জমবে। সবচেয়ে ভাল হতে পারে যদি নতুন দল বা মঞ্চের দায়িত্ব (সভাপতি) মুকুলের ওপর দিয়ে শুভেন্দুকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হিসেবে তুলে ধরে একুশের নির্বাচনে তাঁরা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারেন !

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.