Header Ads

ভারতের মুসলিম নেতাদের তোপের মুখে নেপালের প্রধানমন্ত্রী !!

বিশ্বদেব চট্টোপাধ্যায় 
 
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি আসল অযোধ্যা নেপালে এবং হিন্দুদের দেবতা রামচন্দ্রকে নেপালি বলে মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন। এবার ভারতের মুসলিম নেতারাও ওলির মন্তব্যের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন।
বাবরি মসজিদ মামলার একজন বাদি ইকবাল আনসারি বলেছেন, ওলি যা শুরু করেছেন, তাতে ভগবান হনুমানজি একবার খেপলে, আর রক্ষা নেই। গদার এক আঘাতে নেপালকে ধ্বংস করে দেবেন। যত যা-ই হোক, রাম যেখানে যান, হনুমানজি তো তাঁকে অনুসরণ করেন।
মুসলিম এই নেতা আরো বলেন, নেপালের প্রধানমন্ত্রী সম্ভবত দেশ এবং বিশ্বে অযোধ্যার গুরুত্ব সম্পর্কে জানেন না। সেজন্য এমন উদ্ভট মন্তব্য করেছেন। ওলি একবার অযোধ্যায় এলে, এর গুরুত্ব এবং তাৎপর্য উপলব্ধি করতে পারবেন।


 
মুসলিম আলেম সাইফ আব্বাসও ওলির অযোধ্যা বক্তব্যের নিন্দা করে বলেছেন, এমন মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক এবং অগ্রহণযোগ্য।
আব্বাসের ধারণা, ভারতে অশান্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে চীন ও পাকিস্তানের ইশারায় এমন উদ্ভট মন্তব্য করছেন কে পি শর্মা ওলি। নেপালের প্রধানমন্ত্রী নিজেকে অন্যের হাতের পুতুল করে তুলছেন। পড়শি প্রধানমন্ত্রীর উচিত নিজের বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে, তা প্রত্যাহার করা।
রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের সাধু-সন্ন্যাসীরাও ক্ষেপেছেন। তাদের প্রশ্ন, এত দিন ধরে এত লড়াই করে এখানে মন্দির কি এমনিই তৈরি করছি আমরা? সোশ্যাল মিডিয়ায় এক করসেবকের কটাক্ষ, তাহলে তো বাবরি মসজিদ ভাঙারও প্রয়োজন ছিল না। মন্দির গড়া যেত নেপালেই।
নেপালের প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে ক্ষুব্ধ বিজেপি। বিজেপির মুখপাত্র বিজয় সোনকর শাস্ত্রী কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ভগবান রাম আমাদের কাছে গভীর বিশ্বাসের বিষয়। তা নিয়ে কারো ছেলেখেলা মেনে নেওয়া হবে না। তা সে তিনি নেপালের প্রধানমন্ত্রী হলেও।
উত্তরপ্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রকাশ মৌর্যের কথায়, মানসিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছেন ওলি। তার জানা উচিত, নেপাল আর্যাবর্তের অংশ ছিল। এমন মন্তব্য করার আগে জরুরি ছিল ইতিহাস পড়া।
এদিকে অযোধ্যা ও রাম বিতর্কে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পক্ষ নিয়ে এবার কথা বললেন সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ গিওয়ালি। অযোধ্যাকে নেপালের মানচিত্রে ঢুকিয়ে, রামচন্দ্রকে নেপালি বানিয়েছেন ওলি।
তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো এগিয়ে দাবি করেন, রামায়ণ সভ্যতার কোনো ভিত্তি নেই। রামায়ণ সভ্যতা নিয়ে এখনো ভারতে ও নেপালে অধ্যয়ন চলছে। কেবল বিশ্বাসের ভিত্তিতে সমস্ত বিষয় আমরা অনুসরণ করে চলেছি। এর মধ্যে কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
প্রদীপ গিওয়ালি আরো বলেন, আমরা জেনেছিলাম সীতার জনাকপুরে জন্ম। রাম জন্মেছিলেন অযোধ্যায়। কিন্তু, যেদিন এর বাইরে অন্য কিছু গবেষণায় প্রমাণ হবে, সেদিন রামায়ণের ইতিহাস নিজেই বদলে যাবে। বিষয়টির সঙ্গে বহু মানুষের আবেগ জড়িত। তাই এ বিষয়ে খুব বেশি কথা বলে বিতর্ক বাড়াতে চাই না।
তিনি আরো বলেন, আমি যতদূর বুঝতে পেরেছি, রামায়ণ সভ্যতার প্রত্নতাত্ত্বিক অধ্যয়নের বিষয়টি নিশ্চিত করার মতো পর্যাপ্ত প্রমাণ এখনো আমাদের কাছে নেই। প্রচলিত বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে আমরা বলে আসছি, সীতা জনাকপুরে জন্মেছিলেন। অযোধ্যায় রামচন্দ্রের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, ভবিষ্যতের গবেষণা যদি এই প্রচলিত বিশ্বাস, ধ্যান-ধারণার বাইরে অন্য কিছু প্রমাণ করে, অনেক কিছুই তখন বদলে যেতে পারে। তাই যতক্ষণ না পর্যন্ত অন্য কোনো সত্য সামনে আসছে, আমরা কেবল এটাকেই সত্য হিসেবে ধরে নেব। এর সঙ্গে সাধারণ মানুষের আবেগ জড়িত। তাই রামায়ণের উপস্থাপন সেই মতো করতে হবে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.