Header Ads

COVID-19 এবং আমরা...



জপমালা চক্রবর্তী : "সে বড় সুখের সময় নয়, সে বড় আনন্দের সময় নয়"--- এই মূহুর্তে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের এই লাইনটা বড়ো বেশি ভাবাচ্ছে। আমরা স্তব্ধ হয়ে আছি এখন। মাথার উপরে খোলা আকাশ, চোখের সামনে বিস্তীর্ণ পাহাড়, নদী, সাগর, সমুদ্র। পায়ের তলায় ঘাসফুল, ডানদিকে মসজিদ আর বাঁদিকে মন্দির। কিছুই স্পর্শ করতে পারছিনা। ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছি ছায়ার সাথে। এই যদি হয় জীবন, এই যদি হয় বাঁচার উপায়, তাহলে, কী ভয়ঙ্কর হবে আমাদের শ্বাস নেওয়াটা। ভাবুন তো! কতো মা-বাবা রাত জাগছেন তার সন্তানের চিন্তায়। কতো প্রিয়জন রাত জেগে অপেক্ষা করছে, তার প্রেমিক কবে ফিরবে? প্রতীক্ষা করে আছে কবে প্রাণভরে তাকে একটু দেখবে বলে। কেউ নিচ্ছে অক্সিজেন, কোথায় পাওয়া যায় তার খোঁজ? ভাবুন তো! এই ভাবে বেঁচে থাকা কি জীবন? হ্যাঁ। তবু, আমাদের এভাবেই বেঁচে থাকতে হবে কিছুটা দিন। যতদিন না মুক্ত হয় পৃথিবী এই ভয়ঙ্কর ভাইরাস থেকে।
   পৃথিবীর সবকটা দেশ, আর দেশের মানুষ আজ যেভাবে ঘরবন্দী হয়ে আছে, শুধু একটাই কারণ, "করোনা ভাইরাস"। এ মূহুর্তে আমাদের উচিত, আমরা আরো বেশি সচেতন হই। আমাদের সচেতনতা বোধ ছড়িয়ে পড়ুক বিশ্বের প্রতিটা মানুষের কাছে। যাতে আর কোনো মৃত্যু নয়। প্রয়োজন এখন স্পর্শের বাইরে থেকেও মানুষের হৃদয় স্পর্শ করা। যাতে একটা শৃঙ্মল তৈরি হয় মানবিকতার। মানুষই যখন ধ্বংসকারী তখন, মানুষকেই তো তার জবাব দিতে হবে? নাহলে মানব সভ্যতার ইতিহাসে বন্যরা হবে ঈশ্বর, আর আমরা হবো দানব। তাই, এ মূহুর্তে আরো বেশি জাগ্ৰত হোক আরো বেশি সচেতনতা বোধ। প্রতিটা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে এ বার্তা। ঘরবন্দী থেকেও পৃথিবীকে বিষমুক্ত করা। আসুন আমরা শ্লোগান তুলি আমাদের দেয়াল ভেদ করে, প্রাচীর ভেদ করে মানুষের কাছে পৌঁছে যাক, যতটুকু শেষ হয়েছে, ততটুকুই শেষ। আর কোনো বিনাশ নয়। এবার শুধু বাঁচানো আর বেঁচে থাকা। পৃথিবীর উঠোনে আবার শিশুরা খেলুক, কৃষকরা চাষাবাদ করুক, মজদুর টানুক রথের রশি। প্রয়োজন এখন মানব শৃঙ্মলের। মানুষের কাছাকাছি না থেকেও হাত ধরাধরি না করেও, একটা শৃঙ্মল শুধু মননের হোক। বিশ্বজোড়া মানুষের ডাকে-- বাঁচুক মানুষ, বাঁচুক পৃথিবী।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.