Header Ads

দিল্লির তখ্ত কী ফের কেজরিওয়ালেরই ?

ননী গোপাল ঘোষ

৮ ফেব্রুয়ারি দিল্লির নির্বাচন । দেশের রাজধানীর ভোট ফলাফলের দিকে নজর থাকবে সব পক্ষেরই। নিশুল্ক জল , সস্তায় বিদ্যুৎ , স্কুলের ফি বৃদ্ধি না হওয়া ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়ন দিল্লির ভোটারদের বেশিরভাগকেই ফের আমার আদমি পার্টিকে  ক্ষমতায় আনতে আকৃষ্ট করার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে । সাদা চোখে লড়াইটা আমার আদমি পার্টি, কংগ্রেস ও বিজেপির লড়াই মনে হলেও দিল্লির বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল যে এই লড়াইয়ে এগিয়ে রয়েছেন তা দেখাচ্ছে বিভিন্ন মাধ্যমের করা সার্ভে। ভোট ভাগাভাগির সুফলও কেজরিওয়ালের ঝুলিতে যাওয়ার সম্ভাবনা । যদিও রাজনৈতিক মহলের ধারণা ২০১৫  সালের ভোটের মতো  দিল্লির মোট ৭০ আসনের মধ্যে ৬৭  -টি আসনই নিজেদের ঝুলিতে পুরে ফেলাটা এবারে ততটা সহজ নাও হতে পারে আম আদমি পার্টির পক্ষে । রাজনৈতিক মহলের ধারণা এর বড় কারণ হতে পারে, কিছুটা প্রতিষ্ঠান বিরোধীতা ও বাকিটা সংখ্যালঘু ভোটারদের একটা বিরাট অংশের কংগ্রেসের পক্ষে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা ।



ছবি, সৌঃ আন্তৰ্জাল
বিভিন্ন মাধ্যমের করা সার্ভে দেখাচ্ছে আপের ক্ষমতায় ফেরা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা । কিন্তু, অনেক সময় দেখা গেছে ভোটের ফলাফল আর সার্ভের ফলাফলে আসমান-জমীন ফারাক । বিজেপি দিল্লির তখ্তের লড়াইটা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বনাম মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মধ্যে দেখাতে চাইছে । এর বড় কারণ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে   তুলে ধরার মতো নেতা বিজেপি শিবিরে নেই , যার ক্ষমতা রয়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ক্যারিশমাকে মোকাবিলা করার। তাই কিছুটা বাধ্য হয়েই বিজেপি মোদীকেই লড়াইয়ের মুখ করতে চাইছে । কেজরিওয়াল বিরোধীদের বলা ভাল কংগ্রেস শিবিরের একাংশের অভিযোগ, কেজরিওয়াল মোদী বিরোধীতায় ততটা উচ্চরব নন। ব্যক্তিগত পর্যায়েও ততটা   আক্রমণ হানছেন না । এনআরসি , সিএএ , এনপিআর নিয়েও কেজরিওয়াল ততটা সরব নন বলে কেজরিওয়াল বিরোধীদের বড় অভিযোগ । কট্টর কেজরিওয়াল বিরোধীরা তলায় সমঝোতার আশঙ্কাও করছেন ।

২০১৫ সালের ভোটে বিজেপি মাত্র তিনটে আসন জিততে পেরেছিল । কংগ্রেসকে ফিরতে হয়েছিল শূন্য হাতে । ওই নির্বাচনে বিজেপির সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী মুখ ছিলেন কিরণ বেদী । কিন্তু, তাতে চিঁড়ে ভিজেনি। এবারে এখনও অবধি বিজেপি জিতলে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে স্পষ্ট করে বিজেপি কিছু জানায়নি। বিজেপি মোদীর ক্যারিশমাকে ভর করেই লড়তে চাইছে ।



কংগ্রেসও খুব একটা ভাল অবস্থাতে নেই। দলের ভেতরের দলাদলি এই কদিন আগেও সংবাদমাধ্যমের খবরে ছিল । গতবছরের লোকসভা ভোটে দিল্লির সাত আসনের মধ্যে পাঁচ আসনে আপকে তৃতীয় স্থানে ঠেলে কংগ্রেস দ্বিতীয় হওয়ায় খোদ কংগ্রেসের অনেক নেতাই অবাক হয়েছিলেন । বিভিন্ন সার্ভে দেখাচ্ছে, দিল্লির যেসব জায়গাতে নাগরিকত্ব আইনের  বিরোধীতা করে প্রতিবাদ হচ্ছে সেসব জায়গাতে কংগ্রেসের ভাল ফল করার সম্ভাবনা রয়েছে । অন্ততপক্ষে  পাঁচটি আসনে সংখ্যালঘু ভোটাররা বড় ফ্যাক্টর ।  এছাড়াও আরো  বেশ কটি আসনে সংখ্যালঘু ভোট প্রভাব  ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে । এর সঙ্গে বস্তি এলাকা ও আনঅথরাইজড কলোনির ভোটারদের কংগ্রেস প্রভাবিত করতে পারলে কংগ্রেসের জন্য অভাবনীয় ফলাফল অপেক্ষা করছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।


বিজেপির আশা, দিল্লির বিজেপি প্রধান মনোজ তেওয়ারি দিল্লির বাইরে থেকে আসা হিন্দিভাষী ভোটারদের ওপর প্রভাব ফেলতে পারবেন । এবং সঙ্গে উচ্চ - বর্ণের বানিয়া সম্প্রদায় ও পাঞ্জাবি ভোটারদের একাংশের ওপরও নির্ভর করছে বিজেপি । কংগ্রেসের আশা তারা হিন্দিভাষী, বস্তিবাসী ও সংখ্যালঘু ভোটারাদের ভোটে বাজিমাত করতে পারবে । আপের আশা ২০১৫ সালের মতো ফের আপের পক্ষে ভোটারদের ঢল ঝাড়ুকে এগিয়ে দেবে । আপের এই আশার বড় কারণ, উন্নয়ন দিল্লির ভোটারদের কাছে বড় ইস্যু নয় । কারণ , দেশের অন্য  অনেক অংশের চেয়ে উন্নয়ন ক্ষেত্রে দিল্লি সাত কদম এগিয়ে । তাই উন্নয়নের গাওনা দিল্লির ভোটে খুব বড় ফ্যাক্টর নয় । তাই সস্তায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ , প্রায় নিশুল্ক জল ইত্যাদি নির্বাচনের ইস্যু করেছে আপ। বিজেপিকে মোকাবিলা করতে  হবে নাগরিকত্ব আইনের মতো বড় ইস্যু। সব মিলিয়ে লড়াই জমজমাট । এখন অপেক্ষা ১১ ফেব্রুয়ারির । কারণ ওই দিনই বেরোবে দিল্লির ভোট ফলাফল ।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.