Header Ads

সুষমা স্বরাজ একজন সুদক্ষ রাজনীতিবিদের পাশাপাশি ছিলেন একজন সুদক্ষ হোমমেকারও

নয়া ঠাহর ওয়েব ডেস্কঃ চলে গেলেন দেশের প্ৰথম পূৰ্ণ সময়ের বিদেশমন্ত্ৰী। তিনি দিল্লির প্ৰথম মুখ্যমন্ত্ৰী, তিনি ছিলেন হরিয়ানার সৰ্বকনিষ্ঠ মন্ত্ৰী। সুষমা এবং তাঁর স্বীমা স্বরাজ দুজনের রাজনীতি, মতাদৰ্শ, পারিবারিক সংস্কৃতি ছিল ভিন্ন। তবুও সেসব থেকে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছিল হৃদয়ের টান। একজন বড় হয়েছেন কট্টর রাষ্টীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) মতাদৰ্শে। অন্যজন, সমাজবাদী চিন্তাধারায় উদবুদ্ধ। প্ৰেমের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল পারিবারিক সংস্কার। তোয়াক্কা করেননি কেউই। মিলে গিয়েছিল চার হাত। 

                                                                  ছবি, সৌঃ আন্তৰ্জাল
তাঁদের প্ৰথম দেখা হয় কলেজে। সুষমার বাবা হরদেব শৰ্মা তখন আরএসএসের সক্ৰিয় কৰ্মী। হরিয়ানার রক্ষণশীল পরিবারে বেড়ে ওঠা সুষমা নিজেও আরএসএসের পরম্পরায় অনুপ্ৰাণিত। দিল্লির কলেজে একসঙ্গে আইন পড়ার সময়ই স্বরাজ কৌশলের সঙ্গে পরিচয় হয়। প্ৰথম সাক্ষাতের সেই মুগ্ধতা যে কখন প্ৰেমের পথে পা বাড়িয়েছিল সেই রহস্য ভেদ করেননি কেউই। কলেজ পাস করে দুজনই তখন আইনজীবী। ১৯৭৩ সাল। সুপ্ৰিম কোৰ্টে আইনজীবী হিসেবে পথ চলা শুরু হয় তাঁদের। সে সময় লড়াকু সমাজবাদী নেতা জৰ্জ ফাৰ্নান্ডেজের রেল আন্দোলন ঘিরে তোলপাড় গোটা দেশ। ১৯৭৫ সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেন তৎকালীন প্ৰধানমন্ত্ৰী ইন্দিরা গান্ধী। গ্ৰেফতার হন জৰ্জ ফাৰ্নান্ডেজ। সেই মামলা গড়ায় সুপ্ৰিম কোৰ্ট পৰ্যন্ত। হাতে হাত মিলিয়ে সমাজবাদী নেতার মামলা লড়তে শুরু করলেন সুষমা ও স্বরাজ। আইনের পথে একসঙ্গে চলতে গিয়ে সিদ্ধান্ত নেন, জীবনের পথেও একইসঙ্গে চলবেন। বাধ সাধে পরিবার। হরিয়ারার রক্ষণশীল পরিবারের চোখ রাঙানি থামাতে পারেনি সুষমাকে। সব বাধা বিপত্তি টপকে ১৯৭৫ সালের ১৩ জুলাই তাঁদের বিয়ে হয়।


পেশা ও রাজনীতির গণ্ডি পেরিয়ে পরিবারকে প্ৰাধান্য দিয়েছিলেন দু’জনেই। পেশায় আইনজীবী এই দম্পতির একমাত্ৰ কন্যা। তিনিও একজন আইনজীবী। অক্সফোৰ্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ৰী।

 ছবি, সৌঃ আন্তৰ্জাল

জীবনের অনেকটা সময় সক্ৰিয় রাজনীতিতে কাটিয়েছেন সুষমা এবং তাঁর স্বামী স্বরাজ কৌশল। হয়তো এবার সেই লড়াই থেকে অব্যাহতি চাইছিলেন দুজনেই। একসঙ্গে কাটাতে চেয়েছিলেন অবসর। তাই সুষমা যখন প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদিকে জানিয়ে দিয়েছিলেন মন্ত্ৰী হওয়ার লড়াইয়ে তিনি আর নেই, সবচেয়ে বেশি স্বস্তি পেয়েছিলেন তাঁর স্বামী স্বারাজ নিজেই। টুইটে সেকথা অকপটে স্বীকারও করেছিলেন। স্বরাজ কৌশলের কথায়, ‘ম্যারাথন শুরু হয়েছিল ১৯৭৭ সালে। কেটে গেছে ৪১ বছর. ১১ টি নিৰ্বাচনে লড়েছ তুমি। শুধুমাত্ৰ একমাত্ৰ ১৯৯১ এবং ২০০৪ সালে দল তোমাকে নিৰ্বাচনে দাঁড়ানোর টিকিট দেয়নি।’
নিজের প্ৰিয় মানুষটিকে কৌশল বলেছিলেন, ‘‘ম্যাডাম গত ৪৬ বছর ধরে তোমার পিছনে দৌড়চ্ছি। এবার তো থামো! আমার বয়স তো আর ১৯-এর কোঠায় নেই। আমিও হাঁফিয়ে যাই আজকাল....’’

৪১ বছরের ম্যারাথন থামিয়েছেন সুষমা। এবার জীবনের অবসর সময় দুজনে একসঙ্গে কাটাবেন। কিন্তু জীবনের কাছেই হেরে গেলেন। এভাবে আচমকা সবাইকে ফাঁকি দিয়ে চলে গেলেন।


তিনি ভারতের রাজনৈতিক মহলে উজ্জ্বল নক্ষত্ৰ হয়ে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.