বরাক উপত্যকা অসমের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, অধ্যক্ষ হিতেন্দ্ৰ নাথ গোস্বামী
বরাকের আৰ্থ সামাজিক অবস্থা নিয়ে দীৰ্ঘ আলোচনা
অমল গুপ্ত, গুয়াহাটিঃ
অধ্যক্ষের ব্যক্তিগত এই উদ্যোগকে বরাকবাসী অকুন্ঠ সমর্থন করেছেন। মঙ্গলবার বিধানসভার লাইব্রেরি প্রেক্ষাগৃহে অপরাহ্নে শতাধিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। প্রায় ৬০ জন বক্তব্য রাখেন এবং নিজস্ব মতামত জানিয়ে স্মারকপত্রও দেন অধক্ষ্যের কাছে। এই দীর্ঘ আলোচনায় দুই উপত্যকার মধ্যে মানসিক বিচ্ছিন্নতাবোধের পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থার দুরাবস্থার কথা তুলে ধরা হয়। দিসপুরের বঞ্চনা, অবহেলা, বাংলাভাষার প্রতি অবজ্ঞা প্রভৃতি তুলে ধরেন প্রতিনিধিরা। অসম সাহিত্য সভার সভাপতি পরমানন্দ রাজবংশীও বক্তব্য রাখেন। তিনি বরাকের ভাষা সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ঘোষণা করেন,বাঙালি কবি, বাংলা নাটকের দলকে তাদের সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হবে। রাজ্যের বিশিষ্ট আইনজীবী হাফিজ রশিদ আহমেদ চৌধুরী বরাক ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা অপ্রতুলতার জন্যে মানসিক বিছিন্নতাবোধের সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী সব সময় বরাক ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় সম উন্নয়ন সম অধিকারের কথা বলেন, তবে বরাক এত অবহেলিত কেন? বলেন ইস্ট ওয়েস্ট করিডোরের মাত্র কয়েক কিলোমিটার রাস্তা বন বিভাগের সবুজ সংকেত না থাকায় ২০০৪ সাল থেকে বন্ধ, প্রসঙ্গত বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। তিনি রেলওয়ে ডাবল লাইন করার ওপর জোর দেন। নব বার্তার সম্পাদক হবিবুর রহমান চৌধরী বরাক ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে বরাকে মিনি সচিবালয় স্থাপন করার দাবি সহ সেখানে একবার করে ক্যাবিনেট বৈঠক করার আর্জি জানান। বাংলাদেশের সঙ্গে রেলপথ চালু করা, শন বিল উন্নয়ন, শীতল পাটি ব্যাবসাকে সরকারি ভাবে স্বীকৃতি প্রভৃতির দাবি জানান। সাময়িক প্রসঙ্গ-র সম্পাদক তৈমুর রাজা চৌধুরী অভিযোগ করেন ও এন জিসি কোনও কাজ করেনা, আদমতিলা, বাঁশকান্দি গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে, অথচ পাশেই সিলেট সেখানে ঘরে ঘরে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। তিনি বলেন, বরাকের রেলওয়ে টানেলগুলো সিঙ্গল লাইনের জন্যে নির্মাণ করা হয়েছিল সেখানে আর ডাবল লাইন করা যাবে না। তিনি লঙ্কা দিয়ে বিকল্প রেল পথ নির্মাণের পরা মর্শ দেন। আইনজীবী ডায়ান হোসেন বরাকের ঐতিহাসিক লাতু মালেগর টিলার ইতিহাসকে বিদ্যালয়ে পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান। বরাকে কয়লা সিন্ডিকেটের মতো দুর্নীতি বন্ধের দাবি জানান। প্রাক্তন বিধাযাক মিশন রঞ্জন দাস অভিযোগ করেন বৈচিত্র্যময় অসম নামে শিক্ষাবিভাগের এক গ্রন্থ বাঙালি এবং বিষ্ণুপ্রিয়া মনিপুরীদের স্বকীয় বৈশিষ্ট বিনষ্ট করছে। প্রসেনজিৎ চৌধরী, শঙ্কর সিনহা, অরুণ ভট্টাচার্য্য, নিবেদিতা পাল, নিজামুদ্দিন তালুকদার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অমল গুপ্ত, গুয়াহাটিঃ
বরাক উপত্যকা অসমের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হলেও, বরাকের তিনটি জেলার প্রায় ৩৮ লাখ মানুষ আজও উপেক্ষিত, অবহেলিত তা জলের মতো স্পষ্ট। জন্মলগ্ন থেকে দিসপুরের বৈষম্যের ফলে মানসিক বিচ্ছিন্নতা বোধ, দুই উপত্যকার মধ্যে দূরত্বের সৃষ্টি হয়েছে। সম বিকাশ, সম উন্নয়ন হয়নি। এই প্রথম অসম বিধানসভার অধ্যক্ষ হিতেন্দ্র নাথ গোস্বামী নিজ প্রচেষ্টায় বরাকের সব দল সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসে মত বিনিময় করে বরাকের আর্থ সামাজিক নানা সমস্যাগুলো লিপিবদ্ধ করলেন। মতামতগুলির উপর এক প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ৯০ দিনের মধ্যে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হবে।









কোন মন্তব্য নেই