Header Ads

অসম মাধ্যমিক শিক্ষাবিভাগের নবম দশম ও শ্রেণির দ্রুত পঠন #বৈচিত্র্যপূর্ণ অসম নিয়ে কিছু কথা

 লিখেছেন পাপড়ি ভট্টাচার্য

সিলেবাস বা পাঠ্যসূচির বিশেষ কিছু আদেশ, উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্যপূরণ করার থাকে। সে উদ্দেশ্য সাধনে বিষয়গুলো সামগ্রিকভাবে নিজের নিজের বিশেষত্ব ও বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে প্রকাশে সাহায্য করে। 
এই প্রক্রিয়ায় আদর্শ পাঠ্যক্রম পড়ুয়াদের Domains of Learning বা শিক্ষালাভের স্তরকে সঠিক ভাবে ছুঁয়ে যেতে পারে। লিখতে- পড়তে পারার অর্থাৎ ভাষাশিক্ষার সঙ্গে  সাহিত্যপাঠ  humanities বা 
নৃ-বিদ্যা পরিবারের সদস্য। আলোচ্য বিদ্যার প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্য পড়ুয়ার মানবিক প্রবৃত্তি ও সৌন্দর্যবৃত্তিকে সযত্নে বাঁচিয়ে রাখা বা উত্তরোত্তর পড়ুয়াদের সংবেদনশীলতা বিকাশে সহায়ক হওয়া। এই  উদ্দেশ্য থেকেই  ইংরেজি এবং মাতৃভাষা বা  MIL ( modern Indian Languages) এর পাঠ্যসূচি প্রস্তুত করেন শিক্ষাবিদরা। 


বেশিরভাগ সময় পাঠ্যপুস্তকের সঙ্গে দ্রুতপাঠ বা রেপিড রিডার বলে আরো একটি বই পাঠ্যক্রমে থাকে। পাঠ্য বিষয় পরিবেশনের ক্ষেত্রে প্রণালীগত ভাবে পাঠ্যপুস্তক এবং দ্রুত পাঠ পড়ানোর নিয়মনীতি কিছুটা আলাদা। যেমন, পাঠ্যপুস্তকের ক্ষেত্রে শিক্ষক / শিক্ষিকা ধরে ধরে পড়াবেন আবার ধীরে সুস্থেও। প্রতিটি লাইন, শব্দ, লাইনের মাঝের, ভিতরের নিহিত গুঢ় অর্থের  উপর জোর দেবেন। কিন্তু, দ্রুত পাঠের ক্ষেত্রে ধরনটা আলাদা। শিক্ষক / শিক্ষিকা  ধরিয়ে দেবেন, বিদ্যার্থীরা নিজেরা পড়বে। বইখানি তার ভাষার সাবলীল শৈলী, সাহিত্যরস নিয়ে এতটাই সহজ সরস মধুর ব্যঞ্জনাময়ী হবে যে পড়ুয়ারা তরতর করে নিজেরাই এগিয়ে যাবেন। এইভাবেই বয়:সন্ধির সেই তুমুল সৃষ্টিশীলতার সন্ধিক্ষণে বিশ্বসাহিত্যের একটা হাটখোলা ছোট জানালায় দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল আমাদের, প্রজন্মের পর প্রজন্ম, অজান্তেই। গল্প, ডায়েরি, ভ্রমণ বৃত্তান্ত, আত্মজীবনী, জীবনী----- হোক না সাহিত্যের যে ধারাই, ভাষা, ভাব, প্রকাশভঙ্গি নিয়ে সে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। 

  ডিকেন্স, গোর্গি, মার্ক টোয়েন, ভার্জিনিয়া উল্ফ, রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, তারাশংকর, বিভুতিভূষণ, বুদ্ধদেব বসু, মুন্সি প্রেমচান্দ আরো কত কত দিকপালরা আছেন তালিকায়। তাইতো আজও চল্লিশোর্ধ, ষাটোর্দ্ধ বা অশীতিপর ব্যক্তিকে স্কুল ফাইনালের দ্রুত পাঠ মনে করতে বললে তিনি খুব বেশি সময় না নিয়েই 'বঙ্গ সাহিত্যের তিন কবি' বা  'রবিনসন ক্রুসো 'বলে ফেলতে পারেন।  তাঁদের সময় তাঁরা যে ইংরেজিতে 'মেয়র অফ ক্যাস্টাব্রিজ ', আর বাংলায় 'শকুন্তলা ' পড়েছিলেন, সে স্মৃতি আজও তাজা অনেক অনেক বিস্মৃতির মাঝেও।

দ্রুতপাঠের সেই ট্রাডিশন চালিয়ে যেতে অসম সরকারও ত্রুটি রাখছে না। এই শিক্ষাবর্ষ থেকে নবম এবং দশম শ্রেণির জন্য নতুন রূপে, নতুন ভাবে, নতুন দ্রুত পঠন পাঠ্যসূচিতে স্থান পেয়েছে। 
'বৈচিত্র্যপূর্ণ অসম' শীর্ষক মূল অসমিয়া বই থেকে এ রাজ্যের বিদ্যালয়গুলিতে রাজ্যের স্বীকৃত সকল ভাষায় অনুবাদ করে পড়ানো হচ্ছে বইটি। গ্রন্থের সূচনায় এই নতুন দ্রুত পঠনের  উদ্দ্যেশ্য ব্যক্ত করে বলা হয়েছে  --- "আজ অসমের গরিষ্ঠ সংখ্যক জনগোষ্ঠী রাজনৈতিক ও আর্থ- সামাজিক কারণবশত স্বতন্ত্র হয়েছে বা হতে চাইছে।  অসমিয়া ভাষাকে গ্রহণ করা বা না করাকে নিয়েও  জনগোষ্ঠীসমূহ  মনস্তাত্বিক সংঘাতে  পড়েছে।" তাই সকল জনজাতির সাংস্কৃতিক  ঐতিহ্য এবং ভৌগলিক অবস্থানকে ছাত্রছাত্রীর  সামনে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে আগামীতে ঘটমান বৃহৎ অসমিয়া জাতি গঠনের মহৎ উদ্দ্যেশ্যে এই দ্রুত পঠনের অবতারনা। আবার দু:খ প্রকাশ করা বলা হয়েছে ,স্বল্প পরিসরে অনেক ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর পরিচয় দেওয়া সম্ভবপর হচ্ছে না। এইভাবে একটি নস্ত্যর্থক  স্ববিরোধী অবস্থানে থেকে বইটি পড়ার জন্য পড়ুয়াদের জন্য পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আহোম, রাভা, বর্মন, কছারি, সানোয়াল, নেপালি, ইত্যাদি অনেক জনজাতির পরিচয়ের আলাদা আলাদা পাঠের মধ্যে একটি পাঠ রয়েছে   'কাছাড়ের জনগোষ্ঠী', লিখেছেন চিন্তক- গবেষক ড০ অমলেন্দু ভট্টাচার্য  ।  সেখানে 'বঙ্গীয় সমাজ '   বলে একটি শব্দ পাওয়া গেল। পড়ুয়াদের পড়াতে গিয়ে বা পড়ানোর আগে   স্বভাবতই  শিক্ষক শিক্ষিকাদের মধ্যে এই প্রশ্নের উন্মেষ হবে যে 'বঙ্গীয় সমাজ '-- কাছাড়ে কারা? কীভাবেই বা  'বঙ্গ' শব্দের  সাথে তাদের যোগাযোগ কিছুই  স্পষ্ট হল না ওই লেখাটি থেকে।   এই 'বঙ্গ  'ম্লেচ্ছদেশ' নামে পরিচিত সেই সুপ্রাচীন  বঙ্গ , ইউয়েনসাং, শশাংকের সময়ের বঙ্গ, নাকি ইয়ান্ডাবু সন্ধির সময়ের, অথবা ১৯০৫ এর বঙ্গভঙ্গের সময়ের, অথবা ১৯৪৭ দেশভাগ, নেহেরু লিয়াকত চুক্তির সময়ের?  অথচ এই জরুরি জানাগুলি পড়ুয়াদের অধিকারের মধ্যে পড়ে ।  ভারতে পাঞ্জাবি সমাজ এবং  বঙ্গীয় সমাজ অন্যান্য সমাজ থেকে রাজনৈতিক, সামাজিক, ভৌগলিক তিন কারণেই  অনেক বেশি অস্থিরতার শিকার হয়েছে। তাদের ইতিহাস বাকিদের মত নয় এই সত্যটুকু অসমের পড়ুয়ারা জানবেন না যারা আগামী নতুন অসম গড়ে তুলবেন! অথচ আজকের পড়ুয়ারা সোনার অসম গড়ে তুলবেন বলেই না  এই দ্রুতপাঠ ? 


 কেনই বা  'বরাক উপত্যকার জনগোষ্ঠী 'না হয়ে পাঠটির নাম 'কাছাড়ের জনগোষ্ঠী' রাখা হয়েছে তাও  বোধগম্য হয় না। এর কোনো ব্যাখ্যাও নেই। পবিত্র ভারত ভূমির বরাক উপত্যকা ও তামিলনাড়ু মাতৃভাষা সংস্কৃতি সুরক্ষার আন্দোলনে প্রাণ বলিদান দিয়ে জাতির মর্যাদা অক্ষুন্ন রেখেছে। পঞ্চদশ মাতৃভাষা শহিদের  উপত্যকা বরাক দেশের প্রথম মহিলা শহিদ কমলা মেয়ের ত্যাগে মহৎ। শত প্ররোচনাতেও বাঙালি প্রধান বরাক বহুভাষিক  ও বহু সাংস্কৃতিক , বহুত্বের বরাকভুমিকে  তার বাঙালি প্রাধান্য দিয়ে গ্রাস করতে উদ্যত হয়নি। অন্য কোনো জনগোষ্ঠীও প্রকট বা প্রচ্ছন্ন মদতে প্রভাবিত হয়নি। এই সংস্কৃতি, শত বৈচিত্রেও বরাকের এই একতা একটি বার ও উল্লেখে এল না। চারপৃষ্ঠায় ঠাসাঠাসি করে কোনরকমে কুড়িটির  মতো জনগোষ্ঠী যাদের  'কাছাড়ের জনগোষ্ঠী' বলা হল যেমন অসমিয়া, বঙ্গীয় সমাজ( হিন্দু, মুসলমান), মিজো, কার্বি, ভেইফেই, রাজস্থানী  ইত্যাদিকে কোনক্রমে ঢুকিয়ে কপাট বন্ধ করা হল যেন। তাছাড়া ছাত্র ছাত্রীর কারো মনে যদি এই প্রশ্ন আসে বইয়ে  অন্যত্র উল্লেখ করা কিন্তু একই রাজ্যে বাস করা 'অসমিয়া মাড়োয়ারি',  'অসমিয়া শিখ', 'বঙ্গীয় মূলের মুসলমানের' সঙ্গে  কাছাড়ের 'রাজস্থানি', 'অসমিয়া '  ' বঙ্গীয় মূলের মুসলমান সমাজের'  কোথায় পার্থক্য, দ্রুত পঠনে কিন্তু এর  উত্তরও লেখা নেই, পড়ুয়ারা জানতে চাইলে  শি ক্ষিকা বা শিক্ষকরাও কীইবা উত্তর দেবেন। প্রচ্ছদের দুদিকেই অসমের মানচিত্রের ছবি,  যেখানে এই রাজ্যের অনেক ভাষাগোষ্ঠীর নাচ গানের ছবি রয়েছে। তবে বঙ্গীয় সমাজের কোন উৎসবের  দৃশ্য চোখে পড়ে না। ইদানীং এই পাঠ নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে বিভিন্ন মহলে। 

অনেকেই  অসমিয়া আধিপত্যবাদের গন্ধ পাচ্ছেন।  বাংলাভাষীদের আধাখেঁচড়া অতীত বর্তমানের অর্ধসত্য পাঠ করে বেশির ভাগই অসন্তুষ্ট এবং তর্জনী সরাসরি মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের   মনোভাবের দিকে।  তবে  কাছাড় বা বরাক নিয়ে লেখার দায়িত্ব কিন্তু কোন অ-বরাকবাসীর ছিল না। ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি এই পাঠ  অসমের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় প্রজন্ম যারা সত্যিই ভবিষ্যতে এই রাজ্যের কারিগর হবেন তাদের কাছে  নিজেদের  তুলে ধরার, অসম তথা সমগ্র ভারতের ইতিহাসে বরাক তথা অসমে বাস করা সকল বাঙ্গলাভাষীর সঠিক অবস্থান দেখানোর সুবর্ণ সুযোগ ছিল। এই নিষ্পাপ  সুযোগের আমরা সদব্যবহার করতে পারি নি। 

বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা বিদ্যার্থী কেন্দ্রিক(child centric). যেহেতু  কেন্দ্রবিন্দু  অসমের নবম এবং দশম শ্রেণীর পড়ুয়ারা, তাই পুরো ব্যাপারটা তাদের বয়স, রুচি, আগ্রহ অনুযায়ী আমাদের দেখতে বুঝতে হবে। তাছাড়া, মনে রাখতে হবে এই বই থেকে তাদের পরীক্ষায় প্রশ্ন থাকবে এবং  ভালো মন্দ ফল অনেকটাই এর উপর নির্ভর করে। এই বই  ইতিহাস, নৃতত্ববিজ্ঞান, সাধারণ জ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান এমন কিছু বিষয়ের একটি খিচুড়ি, যা হয়ত বা  আন্তরিক যত্নে পড়ুয়াদের বয়স এবং দ্রুত পঠনের আসল উদ্দেশ্য মাথায় রেখে তৈরি করলে উপাদেয় হতে পারত। কিন্তু বাস্তবে তা হয় নি। এমনিতেই মাতৃভাষা পড়ুয়াদের কাছে তেমন জনপ্রিয় বিষয় নয়, তার উপর এই নিরস পাঠ তাদের ভালো লাগা থেকে আরো দূরে ঠেলে দেবে। সে  রাজ্যের যে ভাষাভাষীর পড়ুয়াই হোক না কেন। এই লেখার শুরুতে Domains of Learning এর উল্লেখ করা হয়েছিল। এই ডোমেইন বা স্তর  ইংরেজি তিনটি 'এইচ 'অক্ষরের উপর দাঁড়িয়ে আছে। হেড, হার্ট, হ্যান্ড। অর্থাৎ বইএর পাঠ তার চেতনা /মেধা(cognitive) ,  হৃদয়(Affective), শরীর (Psychomotor)  স্পর্শ করবে। বইয়ের পাঠ তাকে আকর্ষণ করবে, তাকে পড়তে  আগ্রহী করবে।

 ১৯৯৪ সালে নবম দশম শ্রেণির দ্রুত পাঠ ছিল বিশিষ্ট অসমিয়া  সাংবাদিক, সাহিত্য একাডেমি পুরষ্কার প্রাপ্ত লেখক  হোমেন বরগোহাঞি রচিত ' কিতাপ পঢ়ার আনন্দ"। 'বই পড়ার আনন্দ' নাম দিয়ে বাংলার ভাষান্তরও তিনি নিজেই করেন। বই এর মূল বিষয় ছিল যথেষ্ট শক্ত এবং ভয়ের, অন্তত সেই বয়সে।  বিষয় পড়াশুনা। বই পড়া, পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়ানো, পৃথিবী নানা দেশের লেখক, চিন্তাবিদের সাথে পরিচয় করানো।  অথচ  বড় সহজেই উদ্দ্যেশ্য সাধন করলেন তিনি।  মনোমুগ্ধকর ভাষা, সরস সজীব ছোট ছোট মজার গল্প সম্ভারে, অনন্য ব্যঞ্জনায় মহান লেখকদের  শিশুসুলভ নানা ঘটনা প্রবাহে লেখক চুম্বকের মত পড়ুয়াদের মনোযোগ ধরেই শুধু রাখলেন না,অনেকের জীবনেই এই বই টার্নিং পয়েন্টের মত হয়ে রইল। কিছু মুখস্ত করতে হল না "তোতাকাহিনীর " মত।  অনাসায়ে  সাগ্রহে পরীক্ষায় খাতায় বানিয়ে লেখা গেলো, নিজে বানিয়ে লেখার উৎসাহ এবং প্রবণতা বাড়ল, সাথে পকেটে  ভালো নম্বর ও এসে ঢুকল সহজেই । বই পড়াটা যে আনন্দের   তিনি সত্যি শেখালেন, সাথে বিশ্বকে সামনেও  মেলে ধরলেন। অনেকের জীবনে বই পরম বন্ধু হল।   আলঝাইমার্স, স্ক্রিজোফ্রেনিয়া, ফ্রয়েড, ইগো, ইড, ইডিপাস কমপ্লেক্স, নাট্য শাস্ত্র, গ্রীক ড্রামা, নামের দাঁতভাঙা অনেক নতুন  শব্দের সাথে তাদের পরিচয় হল।  ইবসেন বলে এক মহান নাট্যকার সবকিছু এমন  বেমালুম ভুলে গিয়েছিলেন যে  তিনি আবার নতুন করে অক্ষর শেখেন এই আশ্চর্য তথ্য জেনে একজন এমন আগ্রহী হল সে পুরো ইবসেনই পড়ে ফেলল আগামি বছর গুলোতে। তাই বিষয় বস্তু যত ভালোই হোক, তাকে মনোগ্রাহী করে উপস্থাপন না করলে পাঠ্যসূচির লক্ষ্য পূরণ হয় না, উল্টে পড়ুয়াদের ক্ষতির আশংকা।  অসমের নবম দশম শ্রেণীর দ্রুত পঠন পড়ুয়াদের মেধা মনন বুদ্ধি হৃদয় কিছুই  আকর্ষণ করার ক্ষমতা রাখে না। নিজেদের রাজ্য, কৃষ্টি সংস্কৃতিকে পড়ুয়ারা জানবে, এই প্রস্তাব যথেষ্ট  যুক্তিযুক্ত। কিন্তু গুগুল বা উইকিপিডিয়ার মত ঠাসাঠাসা তথ্যের পড়ুয়াদের কি প্রয়োজন?  তাও সাহিত্যে! অসমীয়া সংস্কৃতির অন্যতম পথিকৃৎ মহাপুরুষ শ্রীমন্ত শংকরদেব মূল পাঠগুলোতে স্থান পেলেন না। শেষের পৃষ্ঠায় একলাইনে তাঁকে একবার উল্লেখ করা হল মাত্র।  সমস্ত বই এ 'ভারত' বা 'ভারতীয়' শব্দের চোখে পড়ার মত অনুপস্থিতি কেমন যেন পীড়াদয়ক।

পরিশেষে বলব বিষয়বস্তু একই রেখে বইটি  পড়ুয়া এবং সাহিত্যপোযোগী করে তোলার কথা ভাবা  হোক। ভারত ভূমি, অসম ও বরাকের এই 'মিলন মহান আত্মা' ই সুনিবিড় পাঠ্যক্রমের মধ্য দিয়ে আমাদের পড়ুয়াদের মন ও মনন নির্মাণে সহায়ক হয়ে উঠুক। কারণ আগ্রাসন, বিরোধ বা 'অপর' এর ধারণাবশত অন্যকে অবজ্ঞা, অবহেলা করে রচিত কোনো প্রকল্প ইতিবাচক কোনো প্রভাব তো ফেলেই না , বরং সুন্দর ভরা সমাজ সংসারে আত্মঘাতী বিষ্ফোরণ ঘটায়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.