Header Ads

শিলচরে বিজেপি-টিকিট : রাজদীপ-দিলীপ না-হেমাঙ্গ, কার ভাগ্যে শিঁকে ছিড়বে, জল্পনা

গুয়াহাটি, ১১ মার্চ (হি.স.)- লোকসভা নির্বাচন দোরগোড়ায়। মর্যাদা-সম্পন্ন শিলচর আসনে কংগ্রেস তাদের প্রার্থী ঠিক করে নিলেও নানা জটিলতার কারণেএখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বিজেপি। অনেকের ধারণা, এ ব্যাপারে শেষ পর্যন্ত আরএসএস-এর দ্বারস্থ হতে পারে দল। কেননা, আরএসএস তথা সংঘ সরাসরি রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ না করলেও ভারতীয় জনতা পার্টি বরাবর শিলচরের কেশব
নিকতন বা গুয়াহাটির কেশবধামের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। বিশেষ করে টিকিট বণ্টনের সময় অধিক গুরুত্ব থাকে সংঘের, এমনই মনে করেন কেউ কেউ। শিলচর আসনে নানা কারণে কাকে প্রার্থী করা হবে এখনও ঠিক করতে পারেনি বিজেপি-র প্রদেশ কমিটি। তাই শেষ ভরসা হিসেবে আরএসএস-এর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হতে পারে বলে দলের প্রদেশ স্তরের কতিপয় নেতার ধারণা। তাঁদের কাছে জানা গেছে, শিলচর আসনে বিজেপির প্রার্থী প্রত্যাশীর তালিকা নেহাত ছোট নয়। ইতিমধ্যে টিকিটের দাবিদারদের মধ্যে অগ্রভাগে রয়েছেন অসম প্রদেশ বিজেপির প্রবক্তা ডা. রাজদীপ রায়, অসম বিধানসভার প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ তথা শিলচরের বিধায়ক দিলীপ পাল এবং প্রাক্তন জেলা সহ-সভাপতি হেমাঙ্গশেখর দাস। এর পর যাঁরা, তাঁরা, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ধ্রুবেন্দুশেখর ভট্টাচার্য, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী তথা কাটিগড়ার বিধায়ক অমরচাঁদ জৈনের দাদা মোহনলাল জৈন,কাছাড় জেলা গ্রাম সুরক্ষা বাহিনীর সভাপতি আশিস হালদার, আইনজীবী শান্তনু নায়েক, ব্যবসায়ী বিবেক পোদ্দার, কাছাড় কলেজের শিক্ষক তথা এপিএসসি সদস্য সজলেন্দু দাসলস্কর, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কবীন্দ্র পুরকায়স্থের ছেলে কণাদ পুরকায়স্থ। প্রদেশ সূত্রের তথ্য, ২০১৪ সালের নির্বাচনে বরাক উপত্যকার শিলচর এবং করিমগঞ্জ, দুই আসন খুইয়েছিল বিজেপি। এবার এই দুই আসন পুনরুদ্ধার করতে উপযুক্ত প্রার্থীর সন্ধান করছেন দলীয় নেতারা। তলে তলে ভাবছে আরএসএসও। খেদের সঙ্গে সূত্রটি জানান, কাছাড় বিজেপি এ মুহূর্তে দুই এবং তিন ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে এক দল চাইছে রাজদীপ রায়, তো অন্য গোষ্ঠী বিধায়ক দিলীপ পালকে প্রার্থী করতে ময়দান চষে বেড়াচ্ছে। তৃতীয় প্রত্যাশী হেমাঙ্গশেখর দাসকে নিরপেক্ষ গোষ্ঠীর বলে মনে করা হচ্ছে। হেমাঙ্গশেখরের ভিত সংঘের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ছাত্রজীবন এবং পরবর্তীতে বহুদিন তিনি অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের কার্যকর্তা ছিলেন। সংঘের স্বয়ংসেবকও। তাছাড়া দু দফায় ভারতীয় জনতা যুবমোর্চার প্রদেশ উপ-সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন সক্রিয়তার সঙ্গে। সেই সব নানা কারণে এবং শিলচর লোকসভা নির্বাচন কেন্দ্রের আনাচে-কানাচে তাঁর জনসংযোগ দেখে সংঘও হেমাঙ্গের ওপর আশীর্বাদ বর্ষণ করতে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০১৬ সালে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে ১২নম্বর উধারবন্দ আসনে হেমাঙ্গশেখর দাসকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দল। কিন্তু চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে তাঁর নাম কর্তন করা হয়। তাঁকে আশ্বাস দেওয়া হয় বিধানসভার পরিবর্তে লোকসভা নির্বাচনে শিলচর আসনে টিকিট দেওয়া হবে। তিন বছর আগে প্রদত্ত আশ্বাসের ভিত্তিতেই এবার শিলচর লোকসভা আসনের দাবি করেছেন। অপর দিকে ডা. রাজদীপ রায় ইতিপূর্বে শিলচর বিধানসভা আসনে কংগ্রেসের সুস্মিতা দেবের (বর্তমান সাংসদ) কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে এবার কংগ্রেস প্রার্থী সেই সুস্মিতার প্রতিদ্বন্দ্বী করে রাজদীপ রায়কে টিকিট দিতে সাতপাঁচ ভাবছে বিজেপি-র জেলা ও প্রদেশ নেতৃ্ত্ব। এছাড়া দলীয় এবং সংঘের সমীক্ষাও ডা. রাজদীপের অনুকূলে নয়। সর্বোপরি রাজদীপ রায় এবং দিলীপ পালের মধ্যে বিদ্যমান ক্ষমতার লড়াইও ভাবাচ্ছে প্রদেশ বিজেপিকে। কোন্দল, ক্ষমতার লড়াই, জনপ্রিয়তা ইত্যাদি নানা বিষয় ভেবে এবং সংঘের শলায় শেষ পর্যন্ত তৃতীয় কোন প্রত্যাশীর ভাগ্যে শিঁকে ছিড়ে তা দেখতে উদগ্রীব রাজনৈতিক মহল। এদিকে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কংগ্রেস নেতা গৌতম রায় বিজেপিতে যোগদান করে শিলচর আসনে দলের টিকিট পেতে পারেন বলেও এক খবরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল কাছাড়ের রাজনীতিতে। সে খবর অবশ্য নিজেই অস্বীকার করেছেন গৌতম। তবে অন্য এক সূত্রের খবর, গৌতম রায়ের সঙ্গে রাজ্যের প্রভাবশালী মন্ত্রী তথা নেডা-র আহ্বায়ক হিমন্তবিশ্ব শর্মার সুসম্পর্কে রয়েছে। এই সম্পর্কের বলে গৌতম রায়কে শিলচরে টিকিট দিয়ে কংগ্রেসের ভোট ব্যাংকে থাবা বসানোর ছক কষছেন হিমন্তবিশ্ব। তবে এ খবর কতটা বাস্তবায়িত হবে তা নিয়ে সন্দেহ ব্যক্ত করেছেন অনেকে।

সৌজন্য : হিন্দুস্থান সমাচার

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.