Header Ads

সবার জন্য বিশুদ্ধ জল প্ৰকল্প রূপায়নের দাবি বিধানসভায়

হাইলাকান্দি জেলায় বিশুদ্ধ একফোটা পানীয় জল নেই, জলপ্ৰকল্পের নামে শুধুই দুৰ্নীতিঃ আনোয়ার হোসেন লস্কর

 অমল গুপ্তঃ গুয়াহটি,
দেশে সবার জন্য স্বাস্থ্য সেবা, সবার জন্য চিকিৎসা সেবা প্ৰভৃতি কৰ্মসূচী আছে, কিন্তু ‘সবার জন্য বিশুদ্ধ জল' এই ধরণের কোনও কৰ্মসূচী নেই। রাজ্যে বিশুদ্ধ পানীয় জলের তীব্ৰ অভাব। অশুদ্ধ পানীয় জল খেতে হয় অধিকাংশ গ্ৰামবাসীকে। হাইলাকান্দি জেলায় বহু মেগা প্ৰকল্প গ্ৰহণ করা হয়েছিল, কিন্তু কোথাও একফোটা জলও নেই। প্ৰত্যেকটি প্ৰকল্পই দুৰ্নীতির জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। আজ বিধানসভায় ‘মেম্বারস আওয়ারস' শীৰ্ষক কৰ্মসূচীতে অংশ গ্ৰহণ করে আনোয়ার হোসেন, মৃণাল শইকিয়া  প্ৰমুখ সরকারের বিভিন্ন প্ৰকল্পের কাজে বিশেষ করে জলপ্ৰকল্পের কাজে অসন্তোষ প্ৰকাশ করেন। হাইলাকান্দির আনোয়ার লস্কর বলেন, তাদের জেলায় বিভিন্ন প্ৰকল্পে ব্যাপক দুৰ্নীতি হচ্ছে। বিশুদ্ধ পানীয় জলের বহু প্ৰকল্প গ্ৰহণ করা হয়েছিল কিন্তু পানীয় জল সরবরাহের কোনও ব্যবস্থায় নেই। এনরেগা, পিএমজিএসওয়াই-র কথা উল্লেখ করে বলেন, ব্যাপক হারে দুৰ্নীতির জন্য কোনও কাজই হেচ্ছ না। মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়ালের কাছে অভিযোগ করেও কোনও কিছু সুরাহা হয় নি। তিনি এক সি ই ও-র কথা উল্লেখ করেন, যার বিরুদ্ধে বহু দুৰ্নীতির অভিযোগ আছে সরকার কোনও ব্যবস্থা গ্ৰহণ করছে না। কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থও অভিযুক্ত সি ই ও-র প্ৰসঙ্গ তুলে শাস্তির দাবি জানান। মৃণাল শইকিয়া বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের জন্য ‘সবার জন্য বিশুদ্ধ জল' কৰ্মসূচী রূপায়ন করে রাজ্যে ১০০টি প্ৰকল্পর উন্নয়নের দাবি জানান। রাজ্যের অব্যবহৃত জলাশয়গুলি সংস্কার করে কচুরিপানাকে শিল্পের কাজে ব্যবহারের দাবি জানান। বলেন, আমদানীকৃত বিষাক্তমাছ খেতে হচ্ছে রাজ্যবাসীকে। জলশয়গুলিকে ব্যবহৃত হলে কচুরিপানাকে শিল্পের কাজে লাগানো যেতে পারে। মাছ চাষও করা যাবে। রাস্তা-ঘাট নিৰ্মাণের পাথরের সমস্যা হচ্ছে তার জন্য বন বিভাগকে দায়ী করে বলেন, বন বিভাগের বাধার জন্য রাস্তার কাজ করা যাচ্ছে না। জবাবে বনমন্ত্ৰী পরিমল শুক্লবৈদ্য কিছু নিয়ম নীতির জন্য টেণ্ডার বন্ধ করতে হয়েছিল। বৰ্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক। গোয়ালপাড়ার বিধায়কের এক প্ৰেশ্নর জবাবে বলেন, সেখানে কিছু এলাকায় ভূগৰ্ভস্থলে কিছু গ্ৰ্যানাইট পাথর পাওয়া গেছে সে সব জায়গায় পাথর সংগ্ৰহের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরী মন্ত্ৰী রিহন দৈমারি অভিযোগ করেন, বিগত সরকারের সময় বহু জল প্ৰকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয় নি। আগামী ২০৩০-র মধ্যে প্ৰতিটি পরিবারের জন্য বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হবে। আজ বিধানসভায় আগের সংকল্প প্ৰস্তাব নিয়ে আলোচনা কালে বিরোধী দল অগপ, কংগ্ৰেস, এআইইউডিএফ-র পক্ষ থেকে পৃথক পৃথকভাবে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, ২০১৬ নিয়ে আলোচনা করে সৰ্বসম্মত প্ৰস্তাব গ্ৰহণের দাবি জানানো হয়েছিল। অগপর পক্ষ থেকে রমেন্দ্ৰ নারায়ন কলিতা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে দাবি জানান। অধ্যক্ষ হিতেন্দ্ৰ নাথ গোস্বামী উত্থাপিত বিষয়টি খুবই স্পৰ্শকাতর তা নিয়ে পরে আলোচনার প্ৰস্তাব দেন। অগপর কেশব মহন্ত বলেন, ১৩ ফেব্ৰুয়ারির মধ্যে সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল,২০১৬ পাশ করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তাই তারা বিধানসভায় সৰ্বসন্মতভাবে প্ৰস্তাব গ্ৰহণ করে তা কেন্দ্ৰে পাঠাবার জন্য বিধানসভায় সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। আমিনুল ইসলাম, আব্দুল খালেক, দেবব্ৰত শইকিয়া প্ৰমুখ বিলটির বিরুদ্ধে সৰ্বসন্মতভাবে প্ৰস্তাব গ্ৰহণ করার জন্য অধ্যক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছিল বলে জানান। এই সব প্ৰস্তাবের জবাবে সংসদীয় পরিক্ৰমামন্ত্ৰী  চন্দ্ৰমোহন পাটোয়ারি জানান শংঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। আগের সংকল্প প্ৰস্তাব নিয়ে আলোচনা কালে নিৰ্দলীয় সদস্য ভূবেন পেগু অভিযোগ করেন জোনাই কেন্দ্ৰের ভূমিহীন মানুষদের দূৰ্ভোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, ৬০-৭০ বছর ধরে হাজার হাজার ভূমিপুত্ৰ ভূমির পাট্টা থেকে বঞ্চিত হয়ে আছে। রাজস্ব বিভাগের গাফিলতি, সরকারের অমনোযোগিতা, লালফিতে বাঁধন প্ৰভৃতি কারণে ভূমিপুত্ৰ খিলঞ্জীয়ারা ভূমিপাট্টা থেকে বঞ্চিত হয়ে আছে। রণোজ পেগুও তাকে সমৰ্থন করে বলেন, বন্যা ও ধ্বসের ফলে খিলঞ্জীয়া ভূমিপুত্ৰদের জমির পরিমাণ সঙ্কুচিত হয়ে যাচ্ছে। তাদের জমির পাট্টা দেওয়া হচ্ছে না। বন্যা ও ধ্বসের জন্য ১২৫০ বৰ্গ কিলোমিটার এলাকার  মাজুলীর আজ সঙ্কুচিত হয়ে মাত্ৰ ৬০০ বৰ্গ কিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে। ভূমিপুত্ৰদের দূৰ্ভোগের কথা তুলে ধরেণ রণোজ পেগু। বিগত ১৫ বছরের কংগ্ৰেস শাসনে রাজ্যে এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনও হয় নি। নিজস্ব কোনও বিদ্যুৎ প্ৰকল্প গড়ে উঠে নি। আজ বিধানসভায় রমেন্দ্ৰ নারায়ন কলিতার এক প্ৰেশ্নর জবাবে বিদু্যৎ মন্ত্ৰী তপন কুমার গগৈ জানান, রাজ্যে গ্ৰীষ্মের সময় বিদ্যুৎ-র সৰ্বোচ্চ চাহিদা ১৮২০ মেগাওয়াট এবং শীতকালে সৰ্বোচ্চ চাহিদা ১৪৫০ মেগাওয়াট। কিন্তু নিজস্ব উৎপাদন গড়ে ২৫০ মেগাওয়াট। কেন্দ্ৰীয় সরকারের ইলেক্টিক পাওয়ার সাৰ্ভের প্ৰতিবেদন অনুযায়ী ২০১১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পৰ্যন্ত অসমের বিদ্যুৎ-র সৰ্বোচ্চ চাহিদা হবে ক্ৰমে ২৫০২, ২৭১৩, ২৯৮৯   এবং ৩২৭১ মেগাওয়াট। এই চাহিদা পুরণের জন্য অসম শক্তি বিতরণ কোম্পানী ইতিমধ্যে বঙ্গাইগাঁও তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্ৰের তৃতীয় ইউনিটের সঙ্গে ১৩০ মেগাওয়াট, প্ৰস্তাবিত সৌরশক্তি কেন্দ্ৰে থেকে ১০০ মেগাওয়াট, পিটিসি ইণ্ডিয়া লিমিটেড (ভূটান) ৮০ মেগাওয়াট, বায়ুশক্তি কেন্দ্ৰ (এসইসিআই এবং পিটিসি) থেকে ১০০ মেগাওয়াট, নিপকো (অরুণাচল প্ৰদেশ) থেকে ৬৫ মেগাওয়াট, এন এইস পি সি (টাওয়াং) থেকে ৪৯ মেগাওয়াট এবং ভূটানের পুনাটসাংসু এবং মাংদেসু জলবিদ্যুৎ থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। তাছাড়াও অসমের  নামরূপ সৌরশক্তি থেকে ১৫ মেগাওয়াট, আমগুরি সৌরশক্তি থেকে ৭০ মেগাওয়াট, নিম্ন কপিলি জলবিদ্যুৎ প্ৰকল্প থেকে ১২০ মেগাওয়াট, বরাপানী ১নং ক্ষুদ্ৰ জলবিদ্যুৎ প্ৰকল্প থেকে ২২.৫ মেগাওয়াট, বরাপানী  মধ্য ২ নং ক্ষুদ্ৰ জলবিদ্যুৎ প্ৰকল্প থেকে ২৪মেগাওয়াট, এবং মাৰ্ঘেরিটা তাপবিদ্যুৎ প্ৰকল্প থেকে ১৬০০ মেগাওয়াট,  বিদ্যুৎ প্ৰকল্প স্থাপন করা হবে। কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থের প্ৰেশ্নর জবাবে বিদ্যুৎমন্ত্ৰী তপন কুমার গগৈ জানান, করিমগঞ্জ জেলার শোচনীয় বিদ্যুৎ পরিস্থিতির কথা তাদের জানা আছে। সেই জন্য ১১২ কেবি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্ৰ এবং ১১২ কেবি বিদ্যুৎ সংবাহন লাইনের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। করিমগঞ্জে পিক আওয়ারে বিদ্যুৎ-র চাহিদা ১৯.৫ মেগাওয়াট। কিন্তু বৰ্তমান এপিডিসিএল ১৪.প্ত মেগাওয়াট সরবরাহ করে। ১১২ কেবি পাঁচগ্ৰাম বিদ্যুৎ উপকেন্দ্ৰ ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সক্ষম। সমগ্ৰ জেলায় পিক আওয়ারে সৰ্বোচ্চ চাহিদা ৩৮.৫ মেগাওয়াট। মামুন ইমদাদুল হক চৌধুরীর এক প্ৰেশ্নর জবাবে, বিদ্যুৎ মন্ত্ৰী তপন কুমার গগৈ জানান, কৃষকদের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্ৰে বৰ্তমান সরকার ব্যাঙ্কের মাধ্যমে কৃষি ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্ৰে ভারত সরকারের কিষাণ ক্ৰেডিড কাৰ্ডের নামে কৰ্মসূচীর সহযোগিতা নিচ্ছে। তাছাড়াও কৃষকদের জন্য ‘ঋণ সংযোগী' সাহায্য প্ৰকল্প গ্ৰহণ করেছে। ২০১৬-১৭ সাল থেকে ২০১৮ সাল ডিসেম্বর পৰ্যন্ত রাজ্যে ৩৯৪৭.৬৪ কোটি টাকার ঋণ কৃষকদের দিয়েছে। ২০১৮-১৯ অৰ্থ বছরে ২৫ শতাংশ (সৰ্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা পৰ্যন্ত সরকার পরিশোধ করবে। ২০১৮-১৯ অৰ্থ বছরে কৃষকদের ২ লক্ষ টাকা পৰ্যন্ত সুদ বিহীন কৃষিঋণ দেওয়া হবে। অশ্বিনী কুমার রায় সরকারের এক প্ৰেশ্নর জবাবে বিদ্যুৎমন্ত্ৰী গগৈ জনান, পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্ৰামীণ বৈদ্যুতিকরণ এবং সৌভাগ্য কৰ্মসূূচী এই প্ৰকল্প সম্পূৰ্ণ হৈ যাওয়ার পর রাজের আগামী ৩১ মাৰ্চের মধ্যে সব গ্ৰামে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ সম্পূৰ্ণ হয়ে যাবে। পবিন্দ্ৰ ডেকার এক প্ৰেশ্নর জবাবে পুত্তমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা জনান, ২০১৮-১৯ অৰ্থ বছরে রাজ্য সরকার মোট ৩৮১২.৩৪ কিলোমিটার পথ পাকা করেছে। এই রাস্তা পাকা করার জন্য ব্যয় হয়েছে ৫৯১২৪৫.৯৩ লক্ষ টাকা। এই টাকার মধ্যে সেতু নিৰ্মাণের টাকাও ধরা হয়েছে। শ্বেরমান আলীর প্ৰেশ্নর জবাবে পুত্ত হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা জানান, পিএমজিএসওয়াই প্ৰকল্পের অধীন ২০১৬-১৮ অৰ্থ বছরে ২৬৯টি রাস্তা মঞ্জুর করা হয়েছে। নুরুল হুদার এক প্ৰেশ্নর জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মতে ১০০০ রোগীর বিপরীতে একজন চিকিৎসক থাকা জরুরী। প্ৰতিটি মডেল হাসপাতালে ৯জন চিকিৎসক এবং ১৯ জন অন্যান্য কৰ্মচারী থাকা প্ৰয়োজন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.