Header Ads

আজও বিলের বিরুদ্ধে গোটা রাজ্য জুড়ে আন্দোলন, প্ৰতিবাদ ভাঙচুর অব্যাহত

নয়া ঠাহর প্ৰতিবেদন, গুয়াহাটিঃ বহুচৰ্চিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে বুধবারও গোটা রাজ্য জুড়ে আন্দোলন প্ৰতিবাদ ভাঙচুর চলে। প্ৰশাসনের স্নায়ুকেন্দ্ৰ দিসপুর জনতা ভাবনের সামনে কেএমএসএস এবং জাতীয়তাবাদী যুব ছাত্ৰ পরিষদের সদস্যরা বাসের ব্যারিক্যাড টপকে জনতা ভাবনে প্ৰবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিচৰ্জ করে ছত্ৰভঙ্গ করে তাদের। ফলে জিএস রোড, গণেশগুড়ি, উলুবাড়ি পৰ্যন্ত ভিষণ যানযটের সৃষ্টি হয়। হাজার হাজার গাড়ি রাস্তায় থমকে দাঁড়ায়। এদিন বহু প্ৰতিবাদকারীকে বুকের রক্ত দিয়ে শ্লোগান লিখে প্ৰতিবাদ করতে দেখা গেল। নগাঁও সাৰ্কিট হাউসের সামনে বিজেপির সভাপতি রঞ্জিত দাসকে কালো পতাকা দেখায় আসুর সদস্যরা। এদিকে অগপ-র তিন মন্ত্ৰী ফণিভূষণ চৈধুরি, অতুল বরা এবং কেশব মহন্ত এদিন বিধানসভা ভবনে জরুরি বৈঠকে বসেন। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্ৰী ডিগবয় থেকে ফিরে এলেই পদত্যাগ পত্ৰ মুখ্যমন্ত্ৰীর হাতে তুলে দেবেন। অসম বিধানসভার অধ্যক্ষ হিতেন্দ্ৰ নাথ গোস্বামী এদিন লিখিত ভাবে জানিয়েছেন- খিলঞ্জিয়া বিরোধী কোনও বিলকে কোনও ভাবেই সমৰ্থন করতে পারি না। জাতীয়তাবাদী যুব ছাত্ৰ পরিষদের নেতা পলাশ চাংমা বলেন- বিজেপি সাংসদ রামেশ্বর তেলি, বিজেপি বিধায়ক তেজন গোয়ালাকে বৰ্জন করেছে। মুখ্যমন্ত্ৰী সহ বিজেপির সব নেতা মন্ত্ৰীকে বৰ্জন করা হবে। এদিনও যোরহাট মেডিক্যাল কলেজ, কটন বিশ্ববিদ্যায়লের ছাত্ৰ একতা সভা ক্লাস বয়কোট অব্যাহত রাখে। অপরদিকে সারা ভারতে ১১টি শ্ৰমিক সংগঠনের চাকা বনধ এবং দেশ জুড়ে ধৰ্মঘট অব্যাহত রয়েছে। উজান অসমের দুলিয়াজানে তৈলক্ষেত্ৰ বেসরকারিকরণের প্ৰতিবাদে শ্ৰমিক সংগঠনগুলো গৰ্জে ওঠে। অখিল গগৈ সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে হুমকি দিয়েছেন তাঁদের আন্দোলনকারী ৭০টি সংগঠন আইন অমান্য আন্দোলনের ডাক দেবে। বিজেপিকে গণশত্ৰু আখ্যা দিয়ে বৰ্জন করবে। আসুর সাধারণ সম্পাদক ল্যুরিন জ্যোতি গগৈ কংগ্ৰেসের সমালোচনা করে বলেছেন- বিলটি নিয়ে সংসদে কংগ্ৰেস সাংসদরা কোনও ভূমিকা পালন করতে পারেননি। বিলটির জন্য গণতন্ত্ৰ আজ ধৰ্মনিরপেক্ষতার হুমকির মুখে পড়েছে। কারণ ধৰ্মের ভিত্তিতে বিলটি আনা হয়েছে। প্ৰাক্তন মুখ্যমন্ত্ৰী তরুণ গগৈ বলেন সৰ্বনন্দকে আর আমরা মুখ্যমন্ত্ৰী হিসেবে গণ্য করবো না। বিজেপির অৰ্থ হল বাংলাদেশী জাতীয় পাৰ্টি। আমরা রাজ্যসভায় বিলটির তীব্ৰ বিরোধীতা করেছি এবং করে যাবো। এদিন রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী রাজনাথ সিং পুনরায় আশ্বাস দেন অসমিয়া মানুষের স্বাভিমান ভাষা কৃষ্টি সংস্কৃতি রক্ষা করার সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সমাজে শুধু শুধু ভুল বাৰ্তা ছড়ানো হচ্ছে। আমরা আবেদন জানাচ্ছি শান্তি সম্প্ৰীতি রক্ষার জন্যে। উত্তরপূৰ্বাঞ্চলের ৭ মুখ্যমন্ত্ৰীর সঙ্গে শীঘ্ৰই আলোচনায় বসবো। তিনি আবারও বলেন- অসমে ছয় জনগোষ্ঠীর তফশিল অন্তৰ্ভুক্ত উপজাতি হিসেবে নেওয়ার সব ব্যবস্থা গ্ৰহণ করা হয়েছে। এর জন্য সংবিধানও সংশোধন করা হবে। এদিন আবার বোড়োল্যাণ্ডের কথা উল্লেখ করে বলেছেন বোড়ো জনগোষ্ঠীর ভাষা সংস্কৃতি রক্ষারও একটা ব্যবস্থা করা হবে। স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী আশ্বাস দিয়েছেন- উত্তরপূৰ্বাঞ্চলের মানুষের স্বকীয় বৈশিষ্ট্য ভাষা সংস্কৃতি রক্ষার জন্য তারা প্ৰতিশ্ৰুতিবদ্ধ। গত চার বছরে বিজেপি সরকার অসমের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছে। এদিন রাজ্যের সমাজকল্যাণ মন্ত্ৰী বোড়োল্যাণ্ডের প্ৰমিলা রানি ব্ৰহ্ম বলেছেন- অসমে আবেগিকভাবে আন্দোলন চলছে। তার প্ৰতি আমরা শ্ৰদ্ধাশিল। বিজেপি এমন কোনও কাজ করবে না যাতে ভূমিপুত্ৰদের স্বাৰ্থ বিঘ্নিত হয়। তিনি আবারও বলেন- বোড়োল্যাণ্ডে এই আন্দোলনের কোনও প্ৰভাব পড়েনি। কংগ্ৰেস পরিষদীয় দলের নেতা দেবব্ৰত শইকিয়া অগপ-কে বিজেপি ছাড়ার জন্য ধন্যবাদ দিয়েছেন। অসমের জাতি গোষ্ঠী স্বাভিমান বিরোধী এই বিলকে কোনও পৰ্যায়ে সমৰ্থন করতে পারি না। অখিল গগৈ সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন- এই বিল যদি পাস হয়, তাহলে রাজ্যকে অচল করে দেওয়া হবে। রাজ্যের প্ৰত্যেকটি শিক্ষা প্ৰতিষ্ঠান সব বন্ধ করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। র‍াজ্যের আইনজীবীরাও আন্দোলনের পথে নেমেছেন। সব আন্দোলন সব বিক্ষোভের বিরুদ্ধে একা দাঁড়িয়ে অৰ্থমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা এদিন আবারও বলেন- অসমিয়া হিসেবে তিনি গৌরবান্বিত। এমন একটি বিল পাস করতে চলেছে কেন্দ্ৰীয় সরকার যার ফলে ভূমিপুত্ৰ অসমিয়াদের স্বাৰ্থ সুরক্ষিত হবে। তবে এই প্ৰতিবেদন লেখা পৰ্যন্ত রাজ্যসভায় বিল পাস হয়নি। এদিন নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে তথা গোটা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের বুদ্ধিজীবীরা রাজ্যসভার অধ্যক্ষের কাছে এক বিশেষ চিঠি পাঠান। সন্ধ্যেবেলায় মহানগরের বুদ্ধিজীবীরা তথা শিল্পী সমাজ সকলে মিলে চান্দমারি থেকে গুয়াহাটি ক্লাব পৰ্যন্ত এক বিশাল মশাল মিছিলে অংশগ্ৰহণ করেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.