Header Ads

‘একা এবং কয়েকজন’-এর ৩৯তম বার্ষিক উৎসব সম্পন্ন


দেবযানী পাটিকর
গুয়াহাটিঃ প্ৰত্যেক বছরের মতো এবছরও বৃহত্তর গুয়াহাটির সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক পত্ৰিকা ‘একা এবং কয়েকজন’ শনিবার মহানগরে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করে। মাছখোয়ার আইটিএ-র প্রেক্ষাগৃহে আয়োজন করা হয় পত্ৰিকার ৩৯তম বার্ষিক উৎসবের। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নৃত্যশিল্পী অঙ্কিতা কুলভীর গণেশ বন্দনা দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। পত্ৰিকার পক্ষ থেকে স্বাগত ভাষণ দেন ‘একা এবং কয়েকজন’ গোষ্ঠীর সভাপতি  উদয়ন বিশ্বাস। তিনি বলেন, কাগজটির যখন জন্ম হয় সেই সত্তর দশকের শেষের দিকে তখন ব্রহ্মপুত্র ও বরাক উপত্যকার রাজনৈতিক প্ৰরোচনা ও অন্ধ ভাষা-সংঘাতে বিধ্বস্ত। চারদিকে ভাতৃঘাতি সংঘাত চলছে। সেই পরিবেশেই ‘একা এবং কয়েকজন’-এর জন্ম ও শৈশব কাটিয়েছে। সামগ্রিক ক্ষয় ও বিকৃতির বিরুদ্ধে এক প্রতীকী সামাজিক নীতির বিরুদ্ধে এক প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবেই ‘একা এবং কয়েকজন’-এর জন্ম বলে তাঁর ভাষণে উল্লেখ করেন। প্ৰসঙ্গক্ৰমে তিনি আরও বলেন- এই প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন এ অঞ্চলের কবি সাহিত্যিক শিল্পীরাও। পত্রিকার ভাষা বাংলা অথচ অসমিয়া বুদ্ধিজীবী সাহিত্যিক কবি লেখক-শিল্পীদের স্নেহপ্রীতি স্পর্শে পত্রিকার যাত্রাপথ আরও সচল হয়েছে। এবছর ক্ৰীড়া ব্যক্তিত্ব ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব দীপেন্দ্র কুমার মুখোপাধ্যায়, কৃতি নাট্যাভিনেতা, পরিচালক ও সংগঠক বিমল জ্যোতিচৌধুরি এবং সৃষ্টিশীলতায় দীপ্ত ভাবীকালের কৃতি শাস্ত্রীয় নাট্য প্রতিভা গুনাকর দেব গোস্বামীকে পত্ৰিকার পক্ষ থেকে সংবৰ্ধনা দেওয়া হয়। তাঁদের উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করেন ক্রমে ‘একা এবং কয়েকজন’ গোষ্ঠীর সহ-সম্পাদক তাপস রায় ,সহ-সভাপতি কুমার অজিত দত্ত ও কার্যনির্বাহক কমিটির সদস্য বরুণ সেন এরপর দীপেন্দ্র কুমার মুখোপাধ্যায়ের হাতে পুষ্পস্তবক, শাল ‘একা এবং কয়েকজন’ ক্রীড়া স্মারক ২০১৮ এবং মানপত্র তুলে দেন পত্রিকা গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক রতন কুমার দত্ত। এরপর বিমল জ্যোতি চৌধুরির হাতে পুষ্পস্তবক, শাল, একা এবং কয়েকজন সাহিত্য-সংস্কৃতি স্মারক ২০১৮ এবং মানপত্র তুলে দেন প্রবীণ অভিনেতা তথা পরিচালক কুলদা কুমার ভট্টাচার্য্য এবং একা এবং কয়েকজন গোষ্ঠীর সভাপতি উদয়ন বিশ্বাস। গুনাকর দেব গোস্বামীর হাতে পুষ্পস্তবক শাল এবং একা এবং কয়েকজন সাহিত্য-সংস্কৃতি স্মারক ২০১৮, মানপত্র তুলে দেন পত্রিকার উপদেষ্টা ড০ উষা রঞ্জন ভট্টাচার্য। এরপর সংবর্ধিত ব্যক্তিরা এক এক করে তাঁদের অনুভব ব্যক্ত করে করেন।
এরপরের পৰ্বে পত্রিকার সুধাকণ্ঠ সংখ্যা উন্মোচন করেন প্রবীণ অভিনেতা ও ভূপেন হাজারিকার দীর্ঘদিনের সাথী কুলদা কুমার ভট্টাচার্য এবং ভূপেন হাজারিকা রচনাবলী সম্পাদক সূর্য হাজারিকা। সংখ্যাটি তিনটি পর্বে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ভাগে রয়েছে সুধাকণ্ঠের বাংলা রচনা। দ্বিতীয় পর্বে তাঁর অসমিয়া রচনা (বাংলা অনুবাদ) এবং তৃতীয় ভাগে রয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তির দৃষ্টিতে সুধাকণ্ঠ। লেখকরা সবাই এই অঞ্চলের। পত্রিকার সম্পাদক বলেন- ৩৯ তম বর্ষের এই সুধাকন্ঠ স্মরণ সংখ্যা বর্তমান সময়ের সামগ্রিক ক্ষয় ও বিকৃতির বিরুদ্ধে এক প্রতীক হিসাবে কাজ করবে, পাশাপাশি জন্ম হবে সুধা কন্ঠ সম্পর্কে পরবর্তী প্রজন্মের নয়া চিন্তা চর্চার। এরপর ফের দুটো ওড়িশি নৃত্য পরিবেশন করেন অঙ্কিতা কুলভি। তার পরিবেশিত নিত্য অনুষ্ঠানের মর্যাদা বাড়িয়েছে। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ছিল বৃষ্টিলেখা নন্দিনী ও সুজয় ভৌমিকের গান। তাঁদের গান দর্শকদের স্মৃতির সরণি বেয়ে নিয়ে গেছে সুরধারার অনির্বাচনীয় জগতে। এদিনের অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন গৌতম ভট্টাচার্য ও উর্মিলা দাশগুপ্ত।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.