Header Ads

হাজার বিক্ষোভ প্ৰতিবাদ সত্বেও লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোড়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৬ পাশ হল

নয়া ঠাহর প্ৰতিবেদন, নয়াদিল্লিঃ রাজ্য জুড়ে হাজার বিক্ষোভ প্ৰতিবাদ সত্বেও লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোড়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল মঙ্গলবার ধ্বনি ভোটে পাশ হয়ে গেল। সেইসঙ্গে স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী রাজনাথ সিং অসমের ছয় জনগোষ্টী মরান, মটক, কোচরাজবংশী, তাই আহোম, সুতিয়া, সাঁওতালকে তফশিল ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণাও করলেন। তিনি জানান- রেজিস্টার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া তফশিল ভুক্ত কমিশনের পরামৰ্শ মেনে নিয়ে বিজেপি সরকার এই সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করেছে। সেইসঙ্গে ছয় জয়নগোষ্ঠীর অন্তৰ্ভুক্ত প্ৰত্যেকটি উপজাতিগোষ্ঠীকেও স্বীকৃতি দেবে। এছাড়া বোড়োল্যান্ডের বাইরে থাকা, বোড়ো এবং কাছাড়ি জনগোষ্ঠীকেও উপজাতি গোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। রাজনাথ এই বিলটি উত্থাপন করে বলেন- এই বিলটি শুধু অসমের জন্য নয় সারা দেশের জন্য এই বিলটি। অসমে কেবল ভুল বাৰ্তা যাচ্ছে। গুজরাট, রাজস্থান, দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ প্ৰভৃতি জায়গায় তিন দেশ থেকে দেশ বিভাজনের বলি হয়ে যারা এসেছেন তাঁদের এই দেশে নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। শুধু অসমকে এই বোঝা বইতে হবে না। এছাড়াও অসম চুক্তি কাৰ্যকরি করে উচ্চ পৰ্যায়ের এক কমিটি গঠন করা হয়েছে। অসমিয়া জাতির ভাষা সংস্কৃতি, কৃষ্টি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। এনআরসির কাজ শেষ পৰ্যায়ে। প্ৰকৃত ভারতীয় নাগরিকদের কারুর কোনও ভয় পাওয়ার কারণ নেই। প্ৰকৃত ভারতীয় নাগরিকদের ওপর কোনওভাবেই অবিচার করা হবে না। বোড়োদের ভাষা সংস্কৃতি সংরক্ষণের ব্যবস্থা হবে। মঙ্গলবার লোকসভায় এই বিলের তীব্ৰ বিরোধিতা করেন তৃণমূলের সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেন এই বিলটিকে পুরোপুরিভাবে পাশ করার আগে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি জানান। বলেন- এনআরসি থেকে ৪০ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পরেছে। তার মধ্যে ২৮ লক্ষ বাঙালি হিন্দু, ১০ লক্ষ বাঙালি মুসলিম, বাকিরা অন্যান্য জনগোষ্ঠী। এই বিল গহীত হলে বাঙালি হিন্দুরা ক্ষতিগ্ৰস্ত হবে। তিনি আরও বলেছেন- এনআরসি প্ৰক্ৰিয়ায় বাংলাদেশী শব্দটি ব্যবহার না করে উদ্বাস্তু শব্দটি ব্যবহার করা উচিৎ ছিল। তিনি অভিযোগ করেন- জেপিসি অসমের বাঙালি অধ্যুষিত জেলাগুলিতে বাঙালিদের মতামত নিতে যাননি। তাঁর মতে এই বিল বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করবে। অসমের বিভিন্ন প্ৰসঙ্গ উত্থাপন করে বলেন- বিভিন্ন সময়ে অসমে বাঙালিরা টাৰ্গেট হয়েছে। উগ্ৰপন্থী সংগঠন আলফার হাত বলি হয়েছে বাঙালিরা। বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের ২৮ লক্ষ মতুয়া সম্প্ৰদায়ের কথা চিন্তা করে এবং তাদের ভোট পাওয়ার লক্ষ্যেই এই বিলটি আনল। সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করছে এই বিল। ধৰ্মনিরপেক্ষ চরিত্ৰকে অস্বীকার করা হয়েছে এই বিলে। দাৰ্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ এস এস আহলুওয়ালিয়া এদিন লোকসভায় দিজেন্দ্ৰলাল রায়ের ‘ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা’ কবিতাটি আবৃত্তি করে বাংলায় ভাষণ শুরু করে বলেন- পশ্চিমবঙ্গে নমশূদ্ৰ মতুয়ার মতো সম্প্ৰদায়ের মানুষকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। সেইসব বাঙালিকে নাগরিকত্ব দিতে চাইছে বিজেপি। এআইইউডিএফ-এর সাংসদ বদরুদ্দিন আজমল এই বিলের বিরোধিতা করে বলেন- এই বিলে ধৰ্মনিরপেক্ষ চরিত্ৰ বিঘ্নিত হবে। এবং এনআরসি বানচাল হয়ে যাবে। এই বিলের প্ৰেক্ষিতে অৰ্থমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা প্ৰতিক্ৰিয়া ব্যক্ত করেন- বিলটি পাশ হওয়ার ফলে অসমের ১৭ থেকে ১৮টি বিধানসভা কেন্দ্ৰ বাংলাদেশীদের হাত থেকে (খিলঞ্জিয়া) ভূমিপুত্ৰদের হাতে চলে আসবে। অগপ সভাপতি তথা প্ৰাক্তন মুখ্যমন্ত্ৰী প্ৰফুল্ল কুমার মহন্ত সংবাদ মাধ্যমকে বলেন- অগপ-র সঙ্গে সমঝোতা করার পরেই বিজেপি ক্ষমতায় আসে। সমঝোতা ছাড়া আসতে পারতো না ক্ষমতায়। তাই বিজেপির উচিত নেতিকভাবে সরকার ভেঙে দেওয়া। তাদের কোনও নৈতিক অধিকার নেই সরকারে থাকার। বিলটি আজকে লোকসভায় পাশ হয়ে গেল। আগামিকাল রাজ্যসভায় পেশ করা হবে।  
 



কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.