Header Ads

নেতাজির পথ ধরেই ভারত এগোচ্ছেঃ প্ৰধানমন্ত্ৰী

নরেন্দ্র মোদীর বিজয় সংকল্প সমাবেশ
নয়া ঠাহর প্ৰতিবেদন, গুয়াহাটিঃ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আসন্ন ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ১০ দিনের মাথায় দু’ বার উত্তর পূর্বাঞ্চল সফরে এলেন। দু’টি জনসভা করেন। একটি মণিপুর এবং অন্যটি বরাক উপত্যকার শিলচরের রামনগরে অংশগ্রহণ করেন। প্ৰসঙ্গত, মণিপুরের হাট্টা কিং জেই বাং স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে স্মরণ করে বলেন- এই মণিপুরেই নেতাজির আজাদ হিন্দ বাহিনী অখণ্ড ভারতের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। স্বাধীন ভারতের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। তাঁর আজাদ হিন্দ বাহিনী ভারতবর্ষের স্বাধীনতার একটা দরজা খুলে দিয়েছিল। নেতাজির সেই গেটওয়ে দিয়েই এক নুতন ভারতের বিকাশের যাত্রা শুরু হয়েছে। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আজাদ হিন্দ বাহিনী মণিপুর থেকে যে স্বাধীনতার যাত্রা শুরু করেছিল সেই পথেই দেশের উন্নতি ও বিকাশের পথে যাত্রা শুরু করার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্ৰ মোদী। নেতাজির আদর্শে আজাদ হিন্দ বাহিনীর স্মরণে একটি স্মৃতি স্তম্ভও মণিপুরে তৈরি করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেখানে ১৫,০০০ কোটি টাকার ১২ টি উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস করে বলেন- মণিপুর সহ সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে এর আগে কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বাজপেয়ী সরকার আসার পর দিল্লিকে কাছে আনা হয়েছে। বিগত সাড়ে চার বছরে আমি ৩০ বার উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভ্রমণ করেছি। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং বলেন - মহিলাদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের ঘটনা রোধ করার জন্য মণিপুরে একটা ফাস্ট ট্রাক কোর্ট বসানো হয়েছে। এর সঙ্গে মণিপুরকে মাদক মুক্ত রাজ্য হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন- এখানকার উন্নয়নমূলক প্রকল্প গুলি প্রায় ৩০ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত আটকে ছিল। আর এই আটকে থাকা প্রকল্পের কোন ফাইলই খোলা হয়নি। দিল্লিতে ‘প্রগতি’ নামের একটি পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। যেখানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন উচ্চপদস্থ আধিকারিক এর সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন- এখানকার উন্নয়নমূলক প্রকল্প গুলি প্রায় ৩০ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত আটকে ছিল। আর এই আটকে থাকা প্রকল্পের কোন ফাইলই খোলা হয়নি। দিল্লিতে ‘প্রগতি’ নামের একটি পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। যেখানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন উচ্চপদস্থ আধিকারিকের সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। শুক্ৰবার শিলচরের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন- দেশ বিভাজনের বলি হয়ে যেসব বাঙালি হিন্দু উদ্বাস্তুরা বিভিন্ন সময় অসম তথা উত্তর পূর্বাঞ্চলে প্রবেশ করেছে তাদের নাগরিকত্বর সমস্যা বড় সমস্যা। এদিন প্রধানমন্ত্রী শিলচরের রামনগরে জনসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল লোকসভায় পাশ করানোর কথা উল্লেখ করেন। এনারসি নিয়ে তিনি বলেন - দীর্ঘ বছরের এক সমস্যা বিদেশী সমস্যা, তার সমাধানের পক্ষে এনআরসি প্রস্তুত করা হয়েছে আমি ভরসা দিচ্ছি যে এনআরসিতে কোনও প্রকৃত ভারতীয়দের নাম বাদ পড়বে না। সর্বানন্দ সোনোয়াল সরকার চ্যালেঞ্জ এর সঙ্গে এনআরসি রূপায়ণে কাজ করেছেন এই কাজটি যাতে সহজভাবে হয, তার জন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলাম তারপর থেকে কাজটি সহজ হয়েছে। আর এর জন্য অনেককে অনেক কষ্টও স্বীকার করতে হয়েছে। তিনি আরও বলেন- বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের জীবন জুড়ে গেছে। সারা বিশ্বের নির্যাতিত হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষেরা কোথায় যাবে? দেশ বিভাজন হয়েছে আর এই বিভাজনের মধ্যে অনেক ত্রুটি ছিল, তাদের কথা কেউ শোনে না। তাদের কথা আমরা শুনব না তো কারা শুনবে?
 নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য হচ্ছে, বিলটি গৃহীত করতে বদ্ধপরিকর বিজেপি। এটা বিজেপির দায়িত্ব। অশেষ কষ্ট করে ২০১৬তে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি এনেছে সরকার। অতি শীগ্রই বিলটি গৃহীত হবে বলে আমি আশাবাদী। শিলচরের জনসভায় এই ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর।
 এনআরসি সম্পর্কে তিনি বলেন- অতীতের নেতারা যা ভুল করেছে তাতে আমরা প্রায়শ্চিত্ত করছি। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি এনে আমরা এরই প্রায়শ্চিত্ত করব। এই বিল যত তাড়াতাড়ি লোকসভায় পাস হবে, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা পাবে।’ প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি  শিলচরে ভাষণ এর শুরুতে বাংলায় শুভ নববর্ষ এবং মকর সংক্রান্তির শুভেচ্ছা জানিয়ে সুখ-সমৃদ্ধি কামনা করে বরাকের স্বাধীনতা সংগ্রামী উল্লাস কর দত্ত, অরুন কুমার চন্দ্র, ইন্দু প্রভাদেবী প্রমুখদের নাম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে তিনি বলেন বরাক ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা দেশের প্রেরণা। অসমের কৃষ্টি সংস্কৃতি ভাষা সংরক্ষণের জন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা আসাম চুক্তি ৬নং ধারা রূপায়ন করব। এ প্রসঙ্গে অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল বলেন-  বরাক ব্রহ্মপুত্রের সামগ্রিক বিকাশের ওপর জোর দেয়া হয়েছে এবং  বিগত সরকার বরাকের জন উন্নয়নের জন্য কোন কাজই করেনি।  অনুষ্ঠানে অৰ্থ মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন - হিন্দু বাঙালি মানুষ কোনদিন বিদেশী হতে পারে না। তাদের সুরক্ষার দায়িত্ব আমাদের। তিনি আরও বলেন- রাহুল গান্ধী চাইছে না রাফেল চুক্তি সম্পাদিত হোক। ভারত যে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে উঠবে সেটাও তিনি চাইছেন না। আমাদের অসমের জাতীয় জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। বরাক ও ব্রহ্মপুত্র এর মধ্যে মৈত্রী হতে হবে। সম উন্নয়নের দ্বারাই অসমকে ভারতের বুকে সর্বোচ্চ রাজ্য হিসাবে গড়ে তুলতে পারবে। এ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি রঞ্জিত দাস বাংলাতে ভাষণ দিয়ে বলেন- করিমগঞ্জ শিলচর এর লোকসভা আসনকে আমরা প্রধানমন্ত্রীকে উপহার হিসাবে দেব। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে মা দুর্গার প্রতিমূর্তি দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে শিলচরের বিখ্যাত শীতল পাটি এবং মণিপুরের পাগড়ী পরিয়ে দেওয়া হয়।






কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.