Header Ads

এন আর সির দাবি আপত্তির সময়সীমা বৃদ্ধি ৬ মাস, তার আগেই লোকসভা নিৰ্বাচন

গবেষণাগারের গিনিপিক হিসাবে সংখ্যালঘু মানুষগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে

অমল গুপ্ত, গুয়াহাটিঃ 
গবেষণাগারে গিনিপিককে নিয়ে পরীক্ষা-নিরিক্ষা, কাটা ছেঁড়া হয়। নানা ভাবে নানা পৰ্যায়ে পরীক্ষা হয়। অসমের ধৰ্মীয় এবং ভাষিক সংখ্যালঘু মানুষগুলিকে নিয়ে এই ভাবেই সরকার পরীক্ষা-নিরিক্ষা করছেন। অসম বাংলাদেশ সীমান্তের অধিকাংশ এলাকা উন্মুক্ত হয়ে পড়ে আছে। ভূমিপুত্ৰ বা খিলঞ্জীয়ার সংজ্ঞাও নিরূপন করা হয় নি, তার পরেও জাতীয় নাগরিকপঞ্জী রূপায়নের নামে লক্ষ লক্ষ সংখ্যালঘু মানুষকে নানা ভাবে হয়রাণি করা হচ্ছে। প্ৰকৃত ভারতীয় নাগরিক বৈধ নথিপত্ৰ থাকা সত্বেও সংখ্যালঘু মানুষগুলির নথিপত্ৰ অগ্ৰাহ্য করে ডিটেনশন ক্যাম্পের অন্ধকারে ঠেলে পাঠানো হচ্ছে, ‘ডি' ভোটার সাজানো হচ্ছে বলে ভুরিভুরি অভিযোগ। কেন্দ্ৰীয় সরকার জানিয়ে দিয়েছে দেশে আর কোনও রাজ্যেই এন আর সি করা হবে না। ৪০ লক্ষ ৭ হাজার ৭০৭ জন বাদ পরা মানুষদের বৃহৎ সংখ্যক বাংলাভাষী হিন্দু-মুসলিম প্ৰকৃত ভারতীয় নাগরিক। তাদেরকে ‘ঘুষপেটিয়া' বা অনুপ্ৰবেশকারী বলে বিজেপির সৰ্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ অপমান করলেন। রাজ্যিক বিজেপি সভাপতি রঞ্জিত দাস কিন্তু সভাপতির মন্তব্যে আপত্তি প্ৰকাশ করেছেন। অমিত শাহ যাদেরকে ‘ঘুষপেটিয়া' বললেন, সেই সংখ্যালঘু মানুষগুলি সদ্য অনুষ্ঠিত পঞ্চায়েত নিৰ্বাচন বিজেপিকে হাতভরে ভোট দিয়েছে। সেই প্ৰসঙ্গ তুলেছেন শিলচরের কংগ্ৰেস সাংসদ সুস্মিতা দেব। শ্ৰীমতী দেব বলেছেন, ২০১৪ সালের লোকসভা নিৰ্বাচনে যে সব সাংসদরা জয়লাভ করে দিল্লীতে গেলেন, এবং যারা ২০১৬ নিৰ্বাচনে বিধায়ক হলেন সেই সব বিধায়ক এবং সাংসদদের কি অবৈধ বলা যাবে? তিনি ২০১৪ সাল পৰ্যন্ত এই রাজ্যে থাকা নাগরিকদের বৈধ নাগরিক বলে দাবি জানিয়েছেন। আগামী লোকসভা নিৰ্বাচন মাস চারেকের মধ্যেই হবে। তখন যাতে এন আর সি থেকে বাদ পরা মানুষদের নিয়ে বড় কোনও গণ্ডগোল না হয়, সাংবিধানিক সংঙ্কট সৃষ্টি না হয়, সে দিকে লক্ষ্য রেখেই সম্ভবত কেন্দ্ৰের রেজিষ্টার জেনারেল অফ ইণ্ডিয়ার পক্ষ থেকে গতকাল এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে এন আর সির দাবি আপত্তির সময়সীমা আরও ৬ মাস বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছে। আর জি আই শৈলেশ বিজ্ঞপ্তি প্ৰকাশ করে জানিয়েছেন, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি আপত্তির দাখিল সম্পূৰ্ণ হওয়ার সম্ভবনা নেই। যারা এখনও দাবি আপত্তি দাখিল করতে পারেন নি তাদের জন্য দাবি আপত্তির সময়সীমা আরও ৬ মাস বৃদ্ধি করা হল । ২০১৯ সালের ৩০ জুন পৰ্যন্ত। বলা হয়েছিল ৩ মাসের মধ্যে এন আর সির নবায়ন সম্পূৰ্ণ হবে। গত ২০১৩ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে এন আর সির প্ৰক্ৰিয়া শুরু হয়েছিল, তার পর থেকে বারবার নানা কারণে এই প্ৰক্ৰিয়াকে দীৰ্ঘয়িত করা হচ্ছে। ভূক্তভোগী সংখ্যালঘু মানুষগুলির মানসিক যন্ত্ৰণা ক্ৰমশ বেড়েই চলেছে। ইতিমধ্যে কয়েকজন আত্মহত্যা করেছেন। গবেষণাগারের গিনিপিক হিসাবে সংখ্যালঘু মানুষগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্ৰতি পদে মানবাধিকার লঙিঘত হচ্ছে। রাষ্ট্ৰসংঘ থেকে শুরু করে দেশ বিদেশে মানবাধিকার সংস্থাগুলি এমনই অভিযোগ করছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.