ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদের হাজারদুয়ারী
অসীম
দাশগুপ্ত
পশ্চিমবঙ্গের
ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলির মধ্যে অন্যতম একটি হলো মুর্শিদাবাদ জেলা। অবিভক্ত
বাংলা,
বিহার এবং উড়িষ্যার সুলতানী শাসনের রাজধানী ছিল
মুর্শিদাবাদ। খ্রীষ্ট্রীয় চতুর্দশ শতকে বাঙলার সুলতানি রাজ স্বাধীনভাবে আত্মপ্রকাশ
করে এবং ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে পলানাবিব হুমায়ুন জাবশীর যুদ্ধে ইংরেজ বাহিনীর কাছে
পরাস্ত হয়ে নবাব সিরাজদ্দৌলার বর্তমান বিহারের মুঙ্গেরে পলায়নের মধ্যে এই বিশাল
সাম্রাজ্যের পতন ঘটে - এই ইতিহাস আমাদের কারো অজানা নয়। এই জেলায় আনাচে কানাচে
ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এমন কিছু নিদর্শন যা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় ইতিহাসের হারানো
দিনগুলোকে। এই জেলায় শুধুমাত্র ইংরেজ নয়, এসেছিল পোর্তুগিজ, ডাচ বাহিনী। তাদেরও
অনেক স্থাপত্য শিল্প আজও ভগ্নপ্রায় সাক্ষী রূপে দাঁড়িয়ে আছে।তবে নবাবী
আমলের যে স্থাপত্য শিল্প গোটা বিশ্বে মুর্শিদাবাদকে এককথায় চিনিয়ে দেয় তা হলো লালবাগ শহরে অবস্থিত
একটি অতিকায় প্রাসাদ। এই প্রাসাদটিতে আসল ও নকল মিলিয়ে মোট হাজারটি দুয়ার আছে বলে
সাধারণ্যে এটি হাজারদুয়ারী নামে সমাধিক পরিচিত। ১৬.৫০ লাখ মুদ্রা ব্যয়ে নবাব নাজিব
হুমায়ুন জাব ১৮২৯-৩৭ সালে এই প্রাসাদ টি ভাগীরথী নদীর পুর্বতীরে নির্মাণ করেন।
প্রাসাদটির স্থাপত্য নকশা প্রণয়ন করেন কর্নেল ডানকান ম্যাকলিউড। দৈঘ্যে ১৬০ মিটার
এবং প্রস্থে ৬১ মিটার এই সৌধটি ইউরোপীয় স্থাপত্য শিল্পের এক অনুপম নিদর্শন।
সম্মুখস্থ প্রশস্ত সোপানশ্রেণী, সুউচ্চ স্তম্ভসমূহ, ও সৌধটির বাহিরভাগের নকশা ইতালীয় শিল্প নিদর্শনের প্রতীক।
পঙ্খের অলংকরানে সজ্জিত সুউচ্চ (২৪ মিটার) গম্বুজ আকৃতির দরবার কক্ষটি সৌধ টির
সবচেয়ে সুন্দর অংশ। এই প্রাসাদটি নবাবদের রাজকীয় কাজকর্মে ও উচ্চপদস্থ ব্রিটিশ
কর্মচারীদের আবাস স্থল রূপে ব্যবহৃত হতো। আধুনা ভারত সরকার সৌধ টিকে অধিগ্রহণ করে
একটি museum
এর রূপ দিয়েছেন। কিভাবে যাবেন?গৌহাটি থেকে
রেলপথে কামরূপ এক্সপ্রেস, গরিব রাথ সরাসরি
বহরমপুর যাচ্ছে। বহরমপুর শহর থেকে মাত্র ১২ কিঃমিঃ দূরে অবস্থিত। বিমানে কলকাতা
বিমানবন্দর এবং সেখানথেকে ২০০ কিঃমিঃ দূরে ঐতিহাসিক হাজারদুয়ারী অবস্থিত।
কোন মন্তব্য নেই