Header Ads

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্ৰী প্ৰরোচনামূলক মন্তব্য করে সুপ্ৰীমকোৰ্টের রায়কেই অবমাননা করছেনঃ চন্দ্ৰমোহন পাটোয়ারী

 আজ তৃণমূলের প্ৰতিনিধি দল অসম সফরে আসছেন, সরকার তা ভালো চোখে দেখছে না, তীক্ষ্ণ নজর রাখছে

গুয়াহাটিঃ জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর সম্পূৰ্ণ শুদ্ধ ও নিঁখুত দ্বিতীয় খসড়া তালিকা প্ৰকাশের প্ৰতিশ্ৰুতি দেওয়া জাতীয় নাগরিকপঞ্জী কৰ্তৃপক্ষ গত ৩০-শে জুলাই, যে তালিকা প্ৰকাশ করেন তাতে বহু দোষ ত্ৰুটি ধরা পড়েছে। খিলঞ্জীয়া ভূমিপুত্ৰ সহ শ শ মানুষের নাম তালিকায় নেই। তালিকা থেকে ৪০লক্ষ ৭ হাজার ৭০৭ জন বাদ পড়ার পর দেশ জুড়ে প্ৰতিক্ৰিয়ার সৃষ্টি হলেও অসমে কিন্তু শান্তি শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অটুট আছে। সংসদ উত্তপ্ত হলেও অসম আপাতত ঠাণ্ডায় আছে, তবে থমথমে। কিন্তু প্ৰতিবেশী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্ৰী মমতা ব্যানাৰ্জি প্ৰরোচনামূলক মন্তব্য এবং পশ্চিমবঙ্গের একাংশ সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকার ফলে অসমে যে কোনও সময় পরিস্থিতি অবনতি ঘটতে পারে বলে সরকার আশঙ্খা ব্যক্ত করেছে। আগামী কাল মুখ্যমন্ত্ৰী মমতা ব্যানাৰ্জির নিৰ্দেশে তৃণমূল মন্ত্ৰী ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বে ৬জন তৃণমূল সাংসদ এবং একজন বিধায়ক অসম সফরে আসছেন। আগামীকাল বরাক উপত্যকা এবং শুক্ৰবার গুয়াহাটি সফর করবে ঐ প্ৰতিনিধি দল। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সোনারুল শাহ মোস্তাফা আজ জানান, বরাকের প্ৰতিনিধি শিলচরের কংগ্ৰেস সাংসদ সুস্মিতা দেব এবং করিমগঞ্জের  কংগ্ৰেস বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থের আমন্ত্ৰণক্ৰমে তৃণমূল প্ৰতিনিধি দল বরাক সফরে যাচ্ছেন। অন্যান্য প্ৰতিনিধিরা হলেন, সাংসদ সুখেন্দু শেখর দে, নাদিমুল হক, ড০ রত্না দে নাথ, অৰ্পিতা ঘোষ, মমতা বালা ঠাকুর, কাকলী ঘোষ দস্তিদার এবং বিধায়ক মহুয়া মৈত্ৰ। মোস্তাফা জানান, শুক্ৰবার গুয়াহাটি এসে বিভিন্ন প্ৰতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে গুয়াহাটি সাৰ্কিট হাউসে, সাংবাদিক সন্মেলন ডেকে তৃণমূল কংগ্ৰেসের স্থিতি স্পষ্ট করবেন। শিলচরের কংগ্ৰেস সাংসদ সুস্মিতা দেব আগামী কাল বরাকে যাচ্ছেন, যাওয়ার আগে আজ দিল্লীতে বলেছেন, ‘অসমের পরিস্থিতি ভয়ানক বরাকে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে'। মমতা ব্যানাৰ্জি আজ আবার প্ৰরোচনামূলক মন্তব্য করে বলেছেন, অসমে গৃহ যুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ৪০ লক্ষ বাদ পড়া মানুষের মধ্যে এক শতাংশের বেশী বাংলাদেশী হবে না। প্ৰকৃত ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশী সাজিয়ে অপমান করা হচ্ছে। আজ অসম বিধানসভা সেণ্ট্ৰাল হলে এক অনুষ্ঠানের পর শিল্পবাণিজ্য ও পরিবহন মন্ত্ৰী চন্দ্ৰমোহন পাটোয়ারী বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্ৰীর প্ৰরোচনামূলক মন্তব্য করে সুপ্ৰীমকোৰ্টের রায়কে অবমাননা করছেন। কারণ সুপ্ৰীমকোৰ্টের তত্ত্বাবধানে এন আর সির কাজ চলছে। পাটোয়ারী বলেন, তৃণমূলের প্ৰতিনিধির অসম সফরে তাদের কোনও আপত্তি নেই, তবে অসমে এসে যদি সাম্প্ৰাদায়িক বিদ্বেষমূলক বক্তব্য রাখেন তবে তাদের ছেড়ে কথা বলা হবে না। অগপ সভাপতি অতুল বরা আজ ডিব্ৰুগড়ে মমতার সমালোচনা করে বলেছেন, মমতা অসমের ইতিহাস জানেন না, রাজনৈতিক স্বাৰ্থে প্ৰরোচনামূলক মন্তব্য করে রাজ্যে সাম্প্ৰদায়িক সম্প্ৰীতি বিনষ্ট করছেন। অগপর প্ৰাক্তনমন্ত্ৰী রমেন্দ্ৰ নারায়ণ কলিতাও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্ৰীর কড়া সমালোচনা করেন। আজ পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনা জেলায় মতুয়া মহাসংঘ অসমে এন আর সির প্ৰতিবাদে রেল অবরোধের ডাক দিয়েছিল। কলকাতাস্থিতিত অসম ভবনের সামনে এন আর সির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্ৰদৰ্শন করা হয় বলে জানা গেছে। মমতার বিরুদ্ধে আসুর উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল ভট্টাচাৰ্য মন্তব্য করে বলেছেন, অসমের প্ৰকৃত পরিস্থিতি অনুধাবন না করে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করছেন। জাতীয়তাবাদী যুব ছাত্ৰ পরিষদ, যুব মোৰ্চা প্ৰভৃতি দল সংগঠন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্ৰীর কূশপুতুল দাহ করে লখিমপুর, গোলাঘাট সহ বিভিন্ন থানায় এজাহার দাখিল করেছে। এন আর সি কৰ্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে এন আর সি নবায়নের জন্য ৰলক্ষ ৫০ হাজার নথি পশ্চিমবঙ্গসরকারের কাছে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু মাত্ৰ ১৫ হাজার পরীক্ষা করে রাজ্যে ফিরে এসেছে, তাই পশ্চিমবঙ্গের বহু মানুষের নাম ঠাঁই পায় নি। এন আর সি তালিকা প্ৰকাশের পর থেকে মেঘালয়, মণিপুর, নাগল্যাণ্ড থেকেও প্ৰতিক্ৰিয়ার খবর আসছে। খাসিয়া ছাত্ৰ সংন্থার পর মেঘালয় সরকারের পুলিশ আজ রীতিমতো চেকগেট খুলে শিলংগামী অসমের সব গাড়ী আটকিয়ে এন আর সির নথি দেখতে চাইছে। নথি না থাকলে অপদস্থ করা হচ্ছে। প্ৰশ্ন উঠেছে ইনার লাইন পারমিট ছাড়া কি করেই বা মেঘালয় সফরের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে। শিল্প বাণিজ্যমন্ত্ৰী চন্দ্ৰমোহন পাটোয়ারী এ সম্পৰ্কে বলেন, মেঘালয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করা হবে। কারণ মেঘালয় এবং অসমে বিজেপি সরকার থাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এন আর সি তালিকা থেকে বাদ পড়া ৪০ লক্ষ মানুষের ভোট দেওয়ার অধিকার খৰ্ব হয় নি, দেশের নিৰ্বাচন কমিশনার ওম প্ৰকাশ রাওয়াত আজ এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এন আর সিতালিকায় বাদ পড়লেও প্ৰকৃত ভারতীয় নাগরিক, ১৮ বছরের বেশী বয়স প্ৰভৃতি শৰ্তে ভোটাধিকার দেওয়া যেতে পারে। রাজ্য নিৰ্বাচন অফিসার এবং এন আর সি কতৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তা চূড়ান্ত করা হবে। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.