Header Ads

কার্বি-আংলং কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত গ্ৰেপ্তারঃ হত্যার পূর্বে কাজিয়া হয়েছিল ‘আলফা’র সঙ্গে


গুয়াহাটি ১৩ জুনঃ কার্বি-আংলং-এর ঘটনার প্ৰধান অপরাধী জর্জ তিমুং ওরফে আলফাকে আজ ভোর রাতে ডকমকার ভেলুঘাট থেকে গ্ৰেপ্তার করা হয়েছে। তিমুং অকপটে স্বীকার করেছে যে তাঁরই নিৰ্দেশে গুয়াহাটি মহানগরের প্ৰতিশ্ৰুতিসম্পন্ন দুই শিপ্লী নীলোৎপল দাস এবং অভিজিত নাথ-এর গাড়ী আটকান হয়। রাজ্যের পুলিস প্ৰধান কূলধর শইকীয়া আজ এই গ্ৰেপ্তারের কথা জানিয়ে বলেন যে এই পৰ্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ২৮জনকে গ্ৰেপ্তার করা হয়েছ। ডিজিপি আরও জানান যে তিমুং জানিয়েছে যে তাঁর সঙ্গে উক্ত দুই যুৱক প্ৰথমাবস্থায় তর্কাতর্কিতে লিপ্ত হয়েছিলেন। প্ৰতিশোধ নিতে যুবকদ্বয়কে ছেলে ধরা বলে গ্ৰামবাসীকে জানিয়ে দেয়। উল্লেখ যে এই দুই প্ৰকৃতিপ্ৰেমী যুবক ছুটির অবকাশে পাহাড়িয়া নৈসৰ্গিক পরিবেশে অবস্থিত কাৰ্বি আংলং জেলার ডকমকায় রাতের আধারে প্ৰাকৃতিক ঝরণা উপভোগ করে তাদের গাড়ীতে গুয়াহাটি  ফিরছিলেন৷ এই দুইজন যুবককে নৃশংস, বৰ্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের প্ৰতিবাদে রাজ্যবাসী অভূতপূৰ্বভাবে আন্দোলনের সাক্ষী হন৷ অন্ধবিশ্বাস, কু-সংস্কারের বলি হলেন প্ৰতিভাশালী দুই যুবক, ‘গ্ৰামে ছেলে ধরা’ ঢুকেছে এই মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়৷ পুলিশ সূত্ৰে প্ৰকাশ আলফা ওরফে জুস তিমুং নামে এক যুবক মোবাইলের মাধ্যমে গ্ৰামের সব কে সেই গুজবের কথা জানিয়ে দেয়৷ গুয়াহাটি ফেরার পথে এই দুই শিপ্লী এক দোকানে ৬০ টাকার ট্ৰফি কিনেছিলেন, সেই সময়ই তাদের গাড়ী আটকানো হয়৷ এই ঘটনায় এ পৰ্যন্ত ৩০জনকে গ্ৰেফতার করা হয়েছে এখনও প্ৰায় ৫০ জন নিদ্দেশ হয়ে আছে৷ প্ৰায় ২৫০ পুলিশ ডকমকা অঞ্চলে বাকি অপরাধীদের গ্ৰেফতার জন্য জোরদার অভিযান চালাচ্ছে৷ শুধু এই ঘটনায় নয়, ২০১৬ সালে ডিফু শহরে হীরেণ শইকিয়ার একমাত্ৰ পুত্ৰঝংকার শইকিয়াকে প্ৰকাশ্যে হত্যা করা হয়৷ মাত্ৰ ১০ টাকার অটো ভাড়া নিয়ে কাজিয়ার সৃষ্টি হয়েছিল তারই নিৰ্মম পরিণতি এই হত্যা কাণ্ড৷ হীরেন শইকিয়া আজও বিচারের আশায় বসে আছেন৷ তিনি ফ্ৰাষ্ট ট্ৰ্যাক কোৰ্টে বিচারের দাবি জানিয়েছেন৷ ওই ডকমকার কাছে ভেনগাঁও অঞ্চলেই ২০১৬ সালে এক বাইক মিস্ত্ৰি মিঠু দাসকে ৪০-৫০জন যুবক পিটিয়ে হত্যা করে, আজও কাউকে গ্ৰেফতার করা হয়নি৷ ডকমকার ঘটনার পর পুরনো ঘটনাগুলি প্ৰকাশ্যে আসছে৷ রাজ্যের পুলিশ প্ৰধান কুলধ্ব শইকিয়া, মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সোনোয়াল এমন কি নিহত পুত্ৰের অভিভাবকরাও বার বার রাজ্যবাসীর কাছে আহ্বান জানাচ্ছেন, নিজেরা যেন হাতে আইন তুলে না নেয়৷ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার আবেদন জানাচ্ছেন৷ গুজব ছড়ানোর অভিযোগে এপৰ্যন্ত প্ৰায় ৩০জনকে গ্ৰেফতার করা হয়েছ৷ কাৰ্বি আংলং জেলা স্ব-শাসিত পরিষদের প্ৰধান তুলিরাম রহাং আজ নিহতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন৷ তিনি প্ৰতিশ্ৰুতি দিয়েছেন, ঘটনাস্থলে নিহত দুই যুবকের স্মৃতি রক্ষায় মৰ্মর মূৰ্তি স্থাপন করা হবে৷ কামরূপ গুয়াহাটি পুলিশ কমিশনার হীরেন নাথ গুয়াহাটিতে বসবাসকারী কাৰ্বি আংলং জেলার মানুষদের পূৰ্ণ নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছেন৷ ডকমকার ঘটনায় কাৰ্বি আংলং পাৰ্বত্য জেলার শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষও ঘটনার তীব্ৰ নিন্দা করে বলেছেন বিচ্ছিন্ন ঘটনার জন্য সমগ্ৰ জাতিকে কাঠগড়ায় তোলা ঠিক নয়, এবং এই ঘটনাকে সাম্প্ৰদায়িক রূপ দেওয়া উচিত নয়৷ গতকাল অপর পাৰ্বত্য জেলায় ডিমা হাসাও ড্যানিয়েল লাংথাসার নেতৃত্বে কয়েকজন শিপ্লী পাহাড়ের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য এবং জঘন্য ঘটনা যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য সংগীতের মাধ্যমে প্ৰাৰ্থনা করেছেন৷  

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.