Header Ads

অসমে ৩০ জনের পর ত্রিপুরায় আরও ৩১ জন রোহিঙ্গা গ্রেফতার

আগরতলা, ২২ জানুয়ারি, (হি.স.) : আন্তর্জাতিক সীমান্তের জিরো পয়েন্ট অতিক্রম করে, কাঁটাতারের বাইরে ভারতীয় ভূখণ্ডে টানা চার দিন খোলা আকাশের নীচে অবস্থান করছেন দেখে মানবিকতার টানে ৩১ জন রোহিঙ্গাকে এপারে নিয়ে আসা হয়েছে। গত চারদিন আগে সিপাহিজলা জেলার আমরতলি থানাধীন রায়মুড়া এলাকায় পুরুষ, মহিলা, শিশু-সহ মোট ৩১ জন রোহিঙ্গাকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার বাইরে দেখেছিলেন বিওপিতে নিয়োজিত ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-র জওয়ানরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত এবং বাংলাদেশ দুই দেশের সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে একাধিকবার ফ্ল্যাগ মিটিং করা হয়। কিন্তু কোনও সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসেনি। তাই মহিলা, শিশু-সহ রোহিঙ্গাদেরকে দিন কাটাতে হচ্ছিল খোলা আকাশের নীচে। অবশেষে মানবিকতার টানে সীমান্তে নিয়োজিত বিএসএফ তাঁদের পানীয় জল, খাদ্য সামগ্রী এবং শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে কম্বল দিয়েছিল। কিন্তু এতেও শান্তি পাচ্ছিলেন না ভারতের সীমান্তরক্ষীরা।  মঙ্গলবার রায়মুড়া বিওপি-র বিএসএফ এই সব রোহিঙ্গাদের সীমান্তের ওপার থেকে এনে ত্রিপুরার আমতলি থানা কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছে। আমতলির মহকুমা পুলিশ আধিকারিক (এসডিপিও) অজয়কুমার দাস ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছেন, বিএসএফ-এর পক্ষ থেকে তাদের খাবার, পানীয়জল, কম্বল দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে ওই ৩১ জন রোহিঙ্গাকে ওপার থেকে এনে আমতলি থানায় সমঝে দিয়েছে রায়মুড়ার বিএসএফ। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে রোহিঙ্গারা স্বীকার করেছে, তাঁরা ভারতে প্রবেশের চেষ্টায় ছিলেন। তাই অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় পাসপোর্ট আইনে তাদের গ্রেফতার করে এদিনই আদালতে তোলা হয়েছিল। আদালত তাদের জেল হাজতে পাঠিয়েছে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, সোমবার ত্রিপুরার সীমান্তবর্তী অসমের চোরাইবাড়ি পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল ৩০ জন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী। এদের মধ্যে আটজন শিশু, ১২ জন পুরুষ এবং দশ জন ম‌হিলা ছিল। তাদের ম‌ধ্যে ছোট-বড় পুরুষ ও ম‌হিলা-সহ মোট ৩০ জন থাক‌লেও মূলত এরা পৃথক পৃথক সাতটি প‌রিবা‌রের সদস্য। আগরতলা থেকে নাইট সুপারে অস‌মে প্র‌বে‌শের মু‌খে সোমবার সন্ধ্যা প্রায় ছয়টা নাগাদ বাজা‌রিছড়া থানাধীন চোরাইবা‌ড়ি পু‌লিশ চেকপোস্টের পুলিশ তাদের আটক করেছিল। পু‌লি‌শি জেরায় আটকরা জানিয়েছিল, তারা মায়ান্মা‌রের ডমবাই ব‌লিবাজার হৃদর‌কেল গ্রা‌মে কৃ‌ষিকাজ ক‌রতেন। তা‌দের পূর্বপুরু‌ষরা ‌ব্রি‌টিশ আম‌লে বাংলা‌দেশ থে‌কে বার্মায় গি‌য়ে বস‌তি গ‌ড়েছি‌লেন। প‌রে সেখা‌নে গ‌ণ্ডগোল লাগায় তারা বাংলা‌দে‌শে চ‌লে যান। সেখা‌নে কয়েক বছর থাকার পর পেটের তা‌গি‌দে জম্মু নে‌রো‌য়েল ক‌লো‌নিতে বসবাস শুরু ক‌রেন। সেখা‌নে চার বছর থাকার পর তা‌দের‌ আন্তর্জা‌তিক ইউএনএইচসিআর নামের সংস্থা ভার‌তের বি‌ভিন্ন রা‌জ্যে সভ্য নাগ‌রি‌কের মতো রোজগার ক‌রে জীবনধারণ করতে এক‌টি ক‌রে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। গত কয়েকমাস ধরে জম্মু‌তে অত্যধিক ঠাণ্ডা পড়ায় তারা প‌রিবার-পরিজনদের নিয়ে গত প্রায় চার মাস আগে ট্রেনে  ‌ত্রিপুরার আগরতলা পৌঁছয়। ‌সেখা‌নে তারা বাদরাঘাট এলাকার এক‌টি হো‌টে‌লে কয়‌দিন থাকার পর কোনও কা‌জের সন্ধান না পে‌য়ে কলকাতার জ‌নৈক রাজু না‌মের দালালের সহ‌যো‌গিতায় সোমবার সকা‌লে গুয়াহা‌টির উদ্দেশে পা‌ড়ি দি‌তে নাইট সুপার বা‌সে চ‌ড়েছিল, জানিয়েছিল পুলিশের জেরায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবা‌দের পর স্থানীয় পু‌লিশ গতরা‌তেই তা‌দের‌ ক‌রিমগঞ্জ (অসম) পুলিশের স্পেশাল ব্রা‌ঞ্চে হস্তান্তর ক‌রে‌ছিল তাদের।
সৌজন্য : হিন্দুস্থান সমাচার

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.